শবনম ইয়াসমিন বুবলী। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শাকিব খানের নায়িকা হয়ে পর্দা কাপাচ্ছেন। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, তাদের অভিনীত সিনেমা মানে ঈদের সিনেমা। বুবলী এখন পর্যন্ত যে কয়টি সিনেমা করেছেন সব কয়টিতেই নায়ক ছিলেন শাকিব খান। এবারের ঈদও বুবলীময়। ২০১৩ সালে ঢালিউড কিং শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে নিয়ে ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ সিনেমার মহরত করেছিলেন পরিচালক জাকির হোসেন রাজু। তখন নানা কারণে এ ছবির শুটিং শুরু হয়নি। দীর্ঘদিন পর আবার শাকিব খান ও বুবলীকে জুটি করে নির্মাণ করেন ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’। প্রেম, দেশপ্রেম, পারিবারিক বন্ধন, মানবতার কথা বলতে আসন্ন ঈদে প্রেক্ষাগৃহে আসছে ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না।’
শুরুতে মুক্তি অপেক্ষিত ছবি নিয়ে জানতে চাইলে বুবলী বলেন, আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে ‘মনেরমতো মানুষ পাইলাম না’ ছবিটি রিলিজ হচ্ছে। ছবিটি পরিচালনা করেছেন গুণী নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু স্যার। অত্যন্ত ভাল একটি গল্প নিয়ে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। ছবিতে অনেক গুণী অভিনয় শিল্পীরা ছিলেন। এছাড়াও আমার সহশিল্পী হিসেবে সবার প্রিয় শাকিব খান আছেন। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন দেশ বাংলা মাল্টিমিডিয়া। সম্রাট ভাই ও আরমান ভাই রাজনৈতিক অঙ্গনের মানুষ, তারপরও ছবিতে তাদের আন্তরিকতা ছিল। সব কিছু মিলিয়ে ভীষণ ভাল একটি কাজ দর্শকরা পেতে যাচ্ছেন। আশা করছি সবাই ছবিটি পছন্দ করবেন। বেশকিছু দিন যাবত প্রেক্ষাগৃহে দেশীয় সিনেমা নেই। এক প্রকার নতুন ছবি সঙ্কটে ভুগছে ঢাকাই সিনেমা। এছাড়াও দর্শক শূন্যতা রয়েছে প্রেক্ষাগৃহে। এমন সময় সিনেমা হলে দর্শক মন্দায় কতখানি প্রভাব বিস্তার ঘাটাতে পারবে ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’? আমরা যখন যে কাজটি করি নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজটি ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করি। আমরা সব সময় চাই দর্শকরা আমাদের কাজটি গ্রহণ করুক। ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ ছবিটি সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে। ছবিটি দেখার পর প্রতিটি মানুষ ছবির ঘটনার সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারবে। পরিশেষে ছবিটি দেখার পর সবাই বলবে এটা আমাদের নিজেদেরই গল্প। ছবির নাম ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ বাস্তবে নায়িকা বুবলী মনের মানুষ এখনও পায়নি নাকি অপেক্ষায় আছে?। বুবলী; এখন মনের মতো মানুষ না খুঁজে মনের মতো কিছু ছবি করতে চাই। সিনেমায় মৌলিক গল্পের সংকট চলছে, এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কি? আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের দিকে তাকাই তাহলে আমাদের আশপাশে প্রচুর গল্প আছে। আমাদের যারা পা-ুলিপি কিংবা চিত্রনাট্যকার আছেন তারা যদি এ দিকটা চিন্তা করেন তাহলে অনেক ভাল ভাল গল্প বের হয়ে আসবে। আমরাও কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করব। তবে মৌলিক গল্পের ছবি হচ্ছে না ঠিক তা নয়, হচ্ছে তবে সংখ্যায় কম। চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা একরকম অস্থির বলে চলে আপনিও কি তাই মনে করেন? অস্থিরতা অনেক আগে থেকেই ছিল। তারপরও কিন্তু সেই অস্থিরতা মোকাবেলা করে এখনও ভাল গল্পের ছবি নির্মিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সকলে ভাল ছবি উপহার দেয়ার চেষ্টা করছে। সবার মধ্যে সিনেমা নিয়ে ইতিবাচক ধারণা থাকলে আমাদের সিনেমা এগিয়ে যাবে।
এখনকার চলচ্চিত্রে ঠিক কি ধরনের শূন্যতা রয়েছে বলে আপনি মনে করেন? আমার কাছে মনে হয় একটা ভাল ছবির জন্য সুন্দর একটি গল্প ও ভাল একজন পরিচালক প্রথমত দরকার। ভাল গল্প যেমন ভাল পরিচালক ছাড়া উপস্থাপন করা সম্ভব নয় তেমনি ভাল গল্প না থাকলে পরিচালকেরও কিছু করার থাকে না। সেইদিক থেকে বলব এই দুটি বিষয়ের সম্বনয় দরকার। শিল্পীরা সব সময় ভাল গল্পে কাজ করতে চায়। যখন এ সব সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকে তখন ভাল কাজ উপহার দেয়া খুবই কঠিন হয়ে পরে। এই জায়গাগুলোতে লক্ষ্য রাখলে আমাদের দেশীয় ছবির সোনালি অধ্যায়ে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সিনেমা হলে ই-টিকেটের কথা চলছে এ ব্যাপারে একমত পোষণ করে বুবলী বলেন, ইন্টারনেট ভিত্তিক ই-টিকেটং ব্যবস্থার পক্ষে আমি। হলগুলোতে সিনেমা পাঠানোর জন্য চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের সার্ভার থেকে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ করে পাইরেসি কমানো সম্ভব। তার সঙ্গে হলের পরিবেশ ভাল হওয়া দরকার। দর্শক অস্থির সময় পাশ কাটিয়ে বিনোদিত হতে হলে যায়। সেখানে যদি অনুকূল পরিবেশ না থাকে তাহলে কেন মানুষ হলে যাবে? দর্শক যেমন একটি ভাল ছবি দেখতে চায় তেমনই সিনেমা হলে একটা ভাল পরিবেশ চায়। সিনেমার জন্য ই-টিকেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোটি টাকা লগ্নি করেও প্রযোজক যখন মূল টাকা পাচ্ছে না। তখন সে প্রযোজক আর ছবি প্রযোজনায় আগ্রহী হবে না। সেইদিক বিবেচনায় ই-টিকেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে সবার জোরালো দাবি করা উচিত। সকলে মিলে দেশের চলচ্চিত্র ও শিল্পী-নির্মাতা-কুশলীদের বাঁচাতে হবে। -বললেন বুবলী।