ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

‘বাংলার রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক বক্তৃতা

প্রকাশিত: ১১:২০, ৮ আগস্ট ২০১৯

‘বাংলার রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক বক্তৃতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এক শ’টি স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এতে ধারাবাহিকভাবে দেশের বরণ্য লেখক ও গবেষকগণ বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। এ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতার উদ্বোধন হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায়। উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এতে ‘বাংলার রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। যন্ত্রসঙ্গীতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে সম্মেলক কণ্ঠে ‘ধন্য মুজিব ধন্য’ গানটি পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। এরপর পরিবেশিত হয় ‘দুখিনী বাংলা জননী বাংলা’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য। স্মারক বক্তৃতা শুরুর আগে পরিবেশিত হয় জাতীয় সঙ্গীত। পরে ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের যারা নির্মমভাবে নিহত হয় তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান উদ্বোধনের সময় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি যে উদ্যোগ নিয়েছে এটা প্রশংসার দাবি রাখে। বছরব্যাপী এক শ’টি স্মারক বক্তৃতার মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে খুঁজে পাব আমরা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইচ টি ইমাম বলেন, বঙ্গবন্ধু-বাংলাদেশ-স্বাধীনতা, এই তিনটি শব্দ এক ও অভিন্ন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারবর্গকে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘাতকচক্র। আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে যে স্মারক বক্তৃতাগুলো হবে সেগুলো মিলে একটি গ্রন্থ হতে পারে, যার মধ্যে আমরা খুঁজে পাব বঙ্গবন্ধুকে, তার আদর্শ, রাজনৈতিক দর্শন ও জীবনাদর্শকে। ড. রফিকুল ইসলাম ১৫ আগস্ট যারা নির্মমভাবে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারবর্গকে হত্যা করেছিল তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে তার বক্তৃতা শুরু করেন। তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর তুলনা করেন। ১৯৩৭ সালে অভিন্ন বাংলার নির্বাচন থেকে শুরু হয় স্মারক বক্তৃতা। এরপর একে একে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও তার জীবনাচরণ তুলে ধরেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক মাসব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। মাসব্যাপী আয়োজনে রয়েছে পাহাড়ের বর্ণিল সংস্কৃতি শীর্ষক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর রচিত ১০০টি গ্রন্থের পাঠ পর্যালোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মুজিব মানে মুক্তি নাটকের প্রদর্শনী, ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ওপর স্থাপনাশিল্প প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা পাঠ ও চিত্রকর্ম নির্মাণ, সকল জেলা ও উপজেলা শিল্পকলায় শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও বরণ্য চিত্রশিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আর্ট ক্যাম্প। ‘জাদুঘর সভ্যতার স্মৃতিঘর’ শীর্ষক সেমিনার ॥ ‘বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আজ ১০৬ বছর পূর্ণ করল। আজকের এই জাদুঘরের প্রাণপুরুষ, যার অবদান অনস্বীকার্য তিনি হলেন নলিনীকান্ত ভট্টশালী। জাদুঘরে লক্ষ্য নিদর্শনের মধ্যে মাত্র অল্প কিছু নিদর্শনই প্রদর্শন করা হয়েছে। বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আরও বেশি নিদর্শন প্রদর্শন করা সম্ভব হবে’ জাতীয় জাদুঘরের ১০৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জাদুঘর সভ্যতার স্মৃতিঘর’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সম্মানিত অতিথি ছিলেন জাতীয় জাদুঘরের সাবেক পরিচালক ড. এনামুল হক ও ফোকলোরবিদ অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ রিয়াজ আহম্মদ। স্বাগত ভাষণ দেন জাতীয় জাদুঘরের সচিব মোঃ আবদুল মজিদ। অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, অল্প কিছু নিদর্শন নিয়ে ব্রিটিশদের সচিবালয়ের ছোট একটি ঘরে ঢাকা জাদুঘর নামে যে প্রতিষ্ঠানটি পথচলা শুরু করেছিল আজ সেই প্রতিষ্ঠানটিই উপমহাদেশের অন্যতম একটি জাদুঘর। যা আমাদের গর্ব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, জাদুঘর হচ্ছে বাংলাদেশের সব মানুষের। এটি হচ্ছে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সভ্যতার ধারক ও বাহক। এটাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। ড. এনামুল হক বলেন, জাদুঘরকে জাদুঘর সভ্যতার স্মৃতিঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব আমাদের। আমাদের চারটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবেÑ সেগুলো হচ্ছে সংগ্রহ , সংরক্ষণ, গবেষণা ও প্রকাশনা। একটি জাদুঘর যত বেশি এ বিষয়গুলোতে উন্নত হবে, তত বেশি সমৃদ্ধ হবে সেই জাদুঘর। অনুষ্ঠানে জাদুঘরের ই-টিকেটিং ব্যবস্থার উদ্বোধন এবং নিয়মিত ত্রৈমাসিক পত্রিকা জাদুঘর সমাচারের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
×