ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অবসর নিলেন ফজলে হাসান আবেদ

প্রকাশিত: ১২:৫২, ৭ আগস্ট ২০১৯

অবসর নিলেন ফজলে হাসান আবেদ

বিডিনিউজ ॥ অবসরে গেলেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ, ছাড়লেন ব্র্যাকের চেয়ারপার্সনের পদ। সক্রিয় পদটি ছাড়লেও বাংলাদেশ তথা বিশ্বের সর্ববৃহৎ এনজিওটিতে সম্মানসূচক চেয়ারপার্সন ইমেরিটাস পদে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন তিনি। মঙ্গলবার ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে এক নৈশভোজ অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেয়া হয়, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংখ্যক ব্যক্তিই উপস্থিত ছিলেন। ফজলে হাসান আবেদের বিদায়ে ব্র্যাকের পরিচালনা পর্ষদে চেয়ারপার্সনের পদে আসছেন হোসেন জিল্লুর রহমান, যিনি সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ১১ মাস উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। চেয়ারপার্সনের বিদায়ের সঙ্গে ব্র্যাকের পরিচালনা পর্ষদে সাতটি পদের পরিবর্তন এসেছে বলে ওই অনুষ্ঠানে জানানো হয়। পরিবর্তন এসেছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের পরিচালনা পর্ষদেও। ব্র্যাকের বিদায়ী পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন মুশতাক চৌধুরী, তাহেরুন্নেসা আবদুল্লাহ, লতিফুর রহমান, রোকিয়া আফজাল রহমান, লুভা নাহিদ চৌধুরী, মার্থা আলটার চেন, আদিব এইচ খান, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও সৈয়দ এস কায়সার কবির। ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের বিদায়ী পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন সিলভিয়া বোরেন, শাবানা আজমী, দেবপ্রিয় ভট্টচার্য, শফিকুল হাসান কায়েস, আইরিন জুবাইদা খান, পারভিন মাহমুদা, মুশতাক চৌধুরী, ফওজিয়া রশিদ, ভিক্টোরিয়া সেকিটোলেকো ও মারিলো ফন গোলস্টেইন। ৮৩ বছর বয়সী আবেদ ব্র্যাকের পাশাপাশি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের পরিচালনা পর্ষদেও চেয়ারপার্সনের পদে ছিলেন। ‘তিনি এখনও সক্ষম, অনেক কাজও করেন, তারপরও তিনি দায়িত্বটি ছেড়ে দিচ্ছেন,’ বলেন ফজলে হাসান আবেদের এক সহকর্মী। ১৯৭২ সালে ফজলে হাসান আবেদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা ব্র্যাক এখন বিশ্বের ‘সর্ববৃহৎ’ এনজিও হিসেবে স্বীকৃত। এশিয়া, আফ্রিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের ডজনখানেক দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন বিশেষ করে ভারতে আশ্রয় নেয়া বিপুল সংখ্যক মানুষকে স্বাবলম্বী করার প্রয়াসে বাংলাদেশ রুরাল এ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি (ব্র্যাক) নামে ব্র্যাকের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮০ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কার পাওয়ার পর জীবনে অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন ফজলে হাসান আবেদ। তার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার, স্প্যানিশ অর্ডার অব সিভিল মেরিট, লিউ টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড মেডেল ইত্যাদি। ২০১৪ ও ২০১৭ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনের নির্বাচিত ৫০ বিশ্বনেতার মধ্যে ফজলে হাসান আবেদের নাম স্থান পেয়েছিল। ফজলে হাসান আবেদের জন্ম ১৯৩৬ সালে। তার উচ্চতর পড়াশোনা হয় লন্ডনে, হিসাব বিজ্ঞানে। পড়াশোনার পর তিনি একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের পাকিস্তান শাখায় যোগ দিলেও ১৯৭০ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বদলে দেয় তার জীবনপথ। চাকরি ছেড়ে তিনি চলে যান লন্ডনে, সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনমত গঠনে কাজ শুরু করেন। এরপর ১৯৭২ সালে ফিরেই দেশ পুনর্গঠনে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করে কাজে নেমে পড়েন।
×