ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ১১:০৬, ৭ আগস্ট ২০১৯

ঈদকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি বেড়েছে বেপরোয়া হারে। সামান্য অজুহাতেই চাঁদা দাবি করছে কোন কোন সার্জেন্ট। আর দাবিকৃত চাঁদা না দিলে দেয়া হচ্ছে মামলা। এভাবে অনেকে বাধ্য হয়ে মামলার ভয়ে টাকা দিয়ে সরে পড়ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এমন কিছু অনিভিপ্রেত দৃশ্য। ৬ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ১১টা। সোনারগাঁও সিগন্যালে ডিউটি করছেন এক সার্জেন্ট। হাতিরপুলের দিক দিয়ে সোনারগাঁও সিগন্যালের দিকে আসছে একটি ‘রাস’ জীপ। পেছনে একটি ‘হোন্ডা সিটি’। এগোতেই সামনে রিক্সা থাকায় ‘রাস গাড়িটি’ ব্রেক করে একটু ডাইনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। সাইডে রিক্সা থাকায় সিটি গাড়িটিও একটু ডাইনে রেখে দাঁড়িয়ে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসে ওই সার্জেন্ট। গাড়ি দুটিকে রং সাইডে নিয়ে দাঁড় করাল। রাস গাড়িতে ছিল গাড়ির মালিক নিজে। নেমে এলেন ভদ্রলোকটি। এবার সার্জেন্টের সরাসরি প্রস্তাব- ১২ শ’ টাকা দেন কেস না দিয়ে ছেড়ে দেব। ভদ্রলোক তার অপরাধ জানতে চাইলে প্রচ- ক্ষেপে গিয়ে ওই সার্জেন্ট বলেন, রং সাইডে গিয়েছেন, কথা বললে বেশি লাগবে। কথার এক ফাঁকে সে জানিয়ে দিতে ভুল করল না তার বাড়ি গোপালগঞ্জ। পেছনের সিটি গাড়িতে ছিল গাড়ির মালিকের ছেলে। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ক্লাস শেষে বাসায় ফিরছিল। পরিস্থিতি দেখে ছেলেটি তার বাবাকে ফোন করলে তিনি কথা বলার পর তাকে সিগন্যাল অমান্য করার অপরাধ দেখিলে ৫শ’ টাকা জরিমানা করে মামলা দিয়ে দিল। ওই গাড়ির চালক নয়ন জনকণ্ঠকে বলেন, তার কাছেও ১২শ’ টাকা দাবি করেছিল সার্জেন্ট মামুন। তিনি বলেন, আমার গাড়ি ওই সার্জেন্ট নিজেই রং সাইডে নিয়ে দাঁড় করিয়ে আবার মামলাও দিয়ে দিল। এটা কেমন কাজ! মামুনকে ১২শ’ টাকা দাবি করার বিষয় জানতে চাইলে বলেন, আপনি কে। অপনাকে কেন বলতে হবে। বেশি কথা বললে আপনার বিরুদ্ধেও মামলা দেয়া হবে। আপনি কি যাকে খুশি তার বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি সরে পড়েন। এর মধ্যে রাস গাড়িটিকেও ৫শ’ টাকা জরিমানা করে মামলা দায়ের করেন। আড়ালে গিয়ে অপেক্ষা করতেই দেখা গেল আবার সক্রিয় ওই সার্জেন্ট। এবার যেন আরও বেশি বেপরোয়া। এবার টার্গেট মোটরসাইকেল। ধরছেন তিনি আর জরিমানা করছেন। কাগজপত্র ঠিক থাকলে তাকে দেয়া হচ্ছে সিগন্যাল অমান্য করার অপরাধ দেখিয়ে মামলা। আর কাগজে একটু ভুল পেলে তো কথাই নেই। এর মধ্যে এক পালসার মোটরসাইকেল আরোহীর ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তার গাড়ি ডাম্পিংয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আকুতি জানায় ওই চালক।
×