ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে কৃষিমন্ত্রীর আহ্বান

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ৭ আগস্ট ২০১৯

কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে কৃষিমন্ত্রীর আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে কৃষি বিপণন অধিদফতরের কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। অধিদফতরের নবীন কর্মকর্তাদের বাজার গবেষণা কাজে আরও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। মঙ্গলবার রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষি বিপণন অধিদফতর কার্যালয় পরিদর্শন করে এক মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানান। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ এর সভাপতিত্বে কৃষি বিপণন অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় অধিদফতরের কার্যাবলী, সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কৃষি বিপণন অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন মন্ত্রী। এ সময়ে কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক অধিদফতরের বিভিন্ন কার্যক্রম, অর্জন, সমস্যা, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যতে সম্পাদনযোগ্য বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। কৃষক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সহায়ক অধিদফতরটি বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও বাৎসরিক বাজার দর সংগ্রহ ও প্রচার, সারাদেশে মূল্যের তারতম্যের কারণ ও করণীয় বিষয়ক কর্মকা- পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন কৃষিপণ্যের মূল্য বিস্তৃতি, উৎপাদন ও বিপণন খরচ নির্ণয় এবং কৃষক ও ভোক্তা সহায়ক বাজার মূল্য প্রণয়নে বিভিন্ন বিপণন গবেষণা করে থাকে। সভায় জানানো হয় অধিদফতরটি শস্যগুদাম ঋণ কার্যক্রম এর আওতায় গতবছর চার হাজারের অধিক কৃষকের প্রায় ৪০০০ মে. টন শস্য গুদামে রাখা হয় এবং প্রায় ৫ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব, প্রযুক্তি স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় লজিস্টিক্স এর অভাব ও আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়হীনতাসহ অধিদফতরের বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করেন। মহাপরিচালক আরও জানান, কৃষি বিপণন অধিদফতর কৃষি ও কৃষি ব্যবসার উন্নয়নে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পর্যন্ত ১৮টি এসেম্বল সেন্টার, ৮১টি শস্য গুদাম, ১টি সেন্ট্রাল মার্কেট, ৬০টি গ্রোয়ার্স মার্কেট এবং কৃষি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৩টি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। ১২,০৩৫ জন নারী উদ্যোক্তাসহ প্রায় ৪০,০০০ কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা হয়েছে। অধিদফতরটির ১,৩৮০টি কৃষক বিপণন দল রয়েছে যার মোট সদস্য প্রায় ৩৫,০০০। বিপণন অবকাঠামো নির্মাণ, গুদাম সম্প্রসারণ, বিশেষায়িত হিমাগার নির্মাণ, বাজার সংযোগ বৃদ্ধি, যৌক্তিক মূল্য বাস্তবায়ন, কৃষি পণ্যের মূল্যনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, জিরো এনার্জি কুল চেম্বার নির্মাণ, বিপণন দল বৃদ্ধিকরণসহ কৃষক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সহায়ক বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার কথা জানান। মন্ত্রী ও সচিব মহোদয় অধিদফতরের কার্যাবলির প্রশংসা করেন। পাশাপাশি সাপ্লাই চেইন উন্নয়ন, কৃষি পণ্যের বিপণন সংক্রান্ত গবেষণা জোড়দারকরণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় বৃদ্ধিকরণ, আরও বেশি বিপণন তথ্য সংগ্রহ, সঙ্কলন ও গবেষণার ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া সভায় বাজার দর পর্যালোচনাসহ যৌক্তিক মূল্যের বাস্তবায়ন, বাজার মনিটরিং জোরদারকরণ, রফতানি বাজার সম্প্রসারণ, কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মীর নূরুল আলম, কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. মোঃ নুরুল ইসলাম ও কৃষি বিপণন অধিদফতরের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
×