ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিষয়টি আগে থেকে জানলেও কেউ কড়া প্রতিবাদ করেননি

৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেস

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ৭ আগস্ট ২০১৯

৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেস

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস জোরাল প্রতিবাদ করেনি। কারণ এ ক্ষেত্রে দলটি প্রথমে দ্বিধাবিভক্ত ছিল। ক্ষমতাসীন দল বিজেপির এই একতরফা সিদ্ধান্তে কংগ্রেসের প্রথম সারির অনেক নেতারই মৌন সমর্থন ছিল। ফলে তারা সরাসরি মুখ খোলেননি। এনডিটিভি। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা অভিষেক মনু সিংভী ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের পর স্বীকার করেন যে, এই সিদ্ধান্তে আমরা মূলত দ্বিধাবিভক্ত ছিলাম। আমাদের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে প্রতারণা করা হয়েছে। কংগ্রেসসহ চার থেকে পাঁচটি রাজনৈতিক দল বিজেপির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তিনি বলেন, তবে এই বিষয়টি যে আমরা একেবারে জানতাম না, তা অস্বীকার করছি না। এক সপ্তাহ আগে আমাদের দলের সিনিয়র নেতা গুলাম নবী আজাদ থেকে শুরু করে পি চিদাম্বরম পর্যন্ত অনেক নেতা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। বিষয়টি অনেকেরই জানা ছিল। তবে কেউই মুখ খোলেননি। তিনি বলেন, দেশের অল্পসংখ্যক দল ও দলের নেতারা এখন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। তবে গণতন্ত্রে সংখ্যা একটি বিচার্য বিষয় বলে উল্লেখ করেন অভিষেক মনু সিংভী। সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরকে আলাদা করে ভারতের রাজ্যসভা একটি আইন পাস করে। এই আইনের বলে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে দিয়ে কেন্দ্রের শাসন জারি করা হয়। এ সময় কয়েকটি বিরোধীদল সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে। আর কয়েকটি বিরোধীদল মোদি সরকারকে সমর্থন দেয়। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি, নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল, জগন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস, এন চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি সোমবারের প্রস্তাবে সরকারকে সমর্থন দেয়। কংগ্রেস সভাপতি থেকে সদ্য পদত্যাগ করা রাহুল গান্ধী এ বিষয়ে সরাসরি কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। এই জরুরী বিষয় নিয়ে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি ‘সিডব্লিউসি’র কোন বৈঠক ডাকা যায় কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, আমি এই মুহূর্তে বৈঠক ডাকতে পারি না। কারণ আমি এখন আর কংগ্রেস সভাপতি নই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কংগ্রেসের কয়েকটি সূত্র জানায়, এ বিষয়ে কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত বিতর্ক হয়েছিল। ওই বিতর্কে শেষ পর্যন্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত না করার পক্ষে অবস্থা নেয় কংগ্রেস। রাজ্যসভার নেতা গুলাম নবী আজাদ ও অপর সিনিয়র নেতা কপিল সিবাল ৩৭০ ধারা বিলোপের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ¥ুখ হন। এই পদক্ষেপকে তারা ভারতের গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যার সঙ্গে তুলনা করেন। অপরদিকে সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস সদস্যরা পার্লামেন্ট থেকে ওয়াকআউট করেন। আবার পার্লামেন্ট কক্ষের বাইরে এসে অনেক কংগ্রেস নেতা এই প্রস্তাবের সমর্থন করে বলেন, এটা তাদের ব্যক্তিগত মতামত। কংগ্রেস নেতা জয়বীর শেরগিল এক টুইট বার্তায় বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ৩৭০ ধারা বিলোপের পক্ষে। তবে তা অবশ্যই সংবিধান ও নিয়ম মেনে করতে হবে। অন্য কোন উপায়ে ৩৭০ ধারা বিলোপকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দেন তিনি। মুম্বাইয়ের কংগ্রেস নেতা মিলিন্দ দেওড়া এক টুইটে বলেন, ৩৭০ ধারা বিলোপ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কংগ্রেস নেতা দিপেন্দর হুদা বলেন, এই একুশ শতকে ৩৭০ ধারা বাতিল করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি না। এই সিদ্ধান্ত ভারত ও জম্মু-কাশ্মীরের জনতার জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না।
×