ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিমুলিয়ায় দিনে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলেও রাতে বিড়ম্বনা

প্রকাশিত: ১২:৩৮, ৬ আগস্ট ২০১৯

শিমুলিয়ায় দিনে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলেও রাতে বিড়ম্বনা

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়ায় দিনের বেলায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলেও রাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বিকল্প চ্যানেল চালুর পর ২ আগস্ট থেকে দিনের বেলায় চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে রাতে ফেরি চলছে সীমিত আকারে। ঈদের আর মাত্র বাকি এক সপ্তাহ। তাই সামনে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিকল্প চ্যানেলটি অপেক্ষকৃত সরু ও গভীরতা কম থাকায় আসন্ন ঈদে এ নৌরুটে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে। বিকল্প চ্যানেল দিয়ে চলতে গিয়ে এক একটি ফেরি আগে থেকে দ্বিগুণ সময় নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছায়। তাই ফেরির ট্রিপ সংখ্যাও কমে গেছে। ফলে ঈদে অতিরিক্ত গাড়ি পারাপারে হিমশিম খেতে পারে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের মেরিন ম্যানেজার একেএম শাহজাহান খান জানান, পদ্মায় পলি পড়ে নাব্য সঙ্কটের কারণে গত ১ আগস্ট হতে রানিং চ্যানেলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রানিং চ্যানেল লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের ডাউন চ্যানেলের মুখে নাব্য সঙ্কট দেখা দেয়ায় ফেরিগুলো চ্যানেল পারি দিতে পারছিল না। সেখানে ফেরি চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত পানি নেই। লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের মুখে আসলেই নাব্য সঙ্কটের কারণে ফেরিগুলো ডুবো চরে আটকে যেত। তাই বাধ্য হয়েই ওই চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এর আগে গত ৩০ জুলাই হতে লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের মুখের আপ চ্যানেলটিও নাব্য সঙ্কটের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। মেরিন অফিসার আরও জানান, লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের আরও ভাটিতে একটি বিকল্প চ্যানেল খুলে দিলে গত ২ আগস্ট এ চ্যানেলে ফেরিগুলো চলাচল করছে। তবে এ চ্যানেলটি ফেরি চলাচলের জন্য পুরোপুরি উপযোগী নয়। চ্যানেলটি সরু হওয়ায় এক সঙ্গে দুটি ফেরি পাশাপাশি একে অপরকে অতিক্রম করতে পারছে না। কোন একটি ফেরি চ্যানেলে প্রবেশ করলে অপর প্রান্তে বিপরীত দিক থেকে আসা ফেরিকে চ্যানেলের মুখে ভাসমান অবস্থায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। চ্যানেলের ভেতরের ফেরিটি পার না হওয়া পর্যন্ত এই অপেক্ষা। প্রায় দেড় কি.মি. দূরত্বের চ্যানেলটি মুখে অপেক্ষায় থাকার ফলে ফেরিটি গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগছে বেশি। তাছাড়া শিমুলিয়া ঘাট থেকে কোন ফেরি কাঁঠালবাড়ি ঘাটের উদ্দেশে রওনা দিলে প্রথমে ফেরিটিকে বর্তমান চ্যানেল হতে আরও প্রায় দেড় কিলোমিটার ভাটিতে গিয়ে নতুন বিকল্প চ্যানেল পারি দিয়ে তারপর আবার দেড় কিলোমিটার উজানে উঠে কাঁঠালবাড়ির পথ ধরতে হয়। এতে একটি ফেরি পারাপারে আগের থেকে দ্বিগুণ সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কমে যাওয়ায় যানবাহন পারাপারও কম হচ্ছে। তাছাড়া দিনের বেলায় বিকল্প চ্যানেলে ফেরি চলাচল করলেও রাতের বেলায় সরু এ চ্যানেলে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। লম্বা আকৃতির ছয়টি ডাম্প ফেরি রাতে বন্ধ রাখা হচ্ছে। তবে দিনের বেলায় ১৮টি ফেরি চলাচল করলেও ট্রিপ সংখ্যা কমে যাওয়ায় যানবাহন পারাপারও কম হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের এজিএম মোঃ নাসির চৌধুরী জানান, যদি রানিং (বন্ধ হয়ে যাওয়া) চ্যানেলের মুখটি ড্রেজার দিয়ে কেটে নাব্য ফিরিয়ে আনা হয়, তবে আসন্ন ঈদে যাত্রীদের আর দুর্ভোগে পড়তে হবে না। সে ক্ষেত্রে রানিং চ্যানেল দিয়ে ওয়ানওয়ে রুটে বর্তমান চ্যানেল দিয়ে কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরিগুলো শিমুলিয়া ঘাটে আসবে। আর বিকল্প চ্যানেল দিয়ে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ফেরি কাঁঠালবাড়ি ঘাটে যাবে। এভাবে চালাতে পাড়লে ঈদে আমাদের আর কোন সমস্যায় পড়তে হবে না। তাই জরুরী ভিত্তিতে রানিং চ্যানেলটিতে ড্রেজিং করে নাব্য সঙ্কট ফিরিয়ে আনা একান্ত দরকার। বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে বিকল্প চ্যানেলটির যে অবস্থা তাতে দুটি ফেরি পাশাপাশি চলতে তেমন অসুবিধা নেই। তবে যাও সমস্যা আছে তা ঠিক করতে চ্যানেলটিতে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। আশা করছি ঈদে ফেরিগুলো বিকল্প চ্যানেলে দিয়েই চলতে পারবে। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া চ্যানেলটি ঈদের আগে ড্রেজিং করে চালু করা সম্ভব নয়। পদ্মার স্রোত আরও কিছুটা কমলে সেখানে ড্রেজিং করার পরিকল্পনা রয়েছে।
×