ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এডিস মশা এক চা-চামচ পানিতেও ডিম পাড়ে ॥ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

প্রকাশিত: ১২:২৯, ৬ আগস্ট ২০১৯

এডিস মশা এক চা-চামচ পানিতেও ডিম পাড়ে ॥ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশা খুব অল্প পানিতেও ডিম পাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান কীটতত্ত্ববিধ ডাঃ ভুপেন্দর নাগপাল। তিনি বলেন, ‘মাত্র এক চা-চামচ পানিতেও এডিস মশা ডিম পাড়ে। যে ডিম পানি ছাড়াও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারে।’ খবর বাংলাট্রিবিউনের। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডাঃ ভুপেন্দর নাগপাল বলেন, ‘বাসা-বাড়িতে পানি জমিয়ে রাখার পাত্র, টায়ার, ছাদ, ঘরের ভেতরে থাকা আর্টিফিসিয়াল ঝর্ণায় ডিম পাড়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এডিস মশা কেবল বর্ষা মৌসুমে ডিম পাড়ে এমন ধারণা ভুল। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে এই মশা বছরের ৩৬৫ দিনই ডিম পাড়ে। এসব ডিম এক বছরেও নষ্ট হয় না। আর পানি পেলে সেই ডিম থেকেই মশা জন্ম নেয়। তাই ভেক্টর কন্ট্রোল করা ছাড়া এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’ এই চিকিৎসক বলেন, ‘এডিস মশা ঘরের কোণায়, অন্ধকারের আর্দ্রতাপূর্ণ জায়গায় যেমন পর্দার পেছনে, খাট ও টেবিল চেয়ারের নিচে থাকতে পছন্দ করে। আর এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে একগ্রাম টেমিফস ১০ লিটার পানিতে খুব কার্যকরী। এটি ব্যবহার করতে পারলে সেখানে অন্তত তিন সপ্তাহের ভেতর পুনরায় এডিস জন্মাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি শহরের নির্মাণাধীন ভবনের পানি জমে থাকা স্থানগুলো ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পরিষ্কার করা যায়, তাহলে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব।’ ডেঙ্গুর মশা নিধনে ‘ফগিং’ কেবলই ভ্রান্তি ॥ ডেঙ্গুর ভয়ঙ্কর রূপ পাওয়ার কারণ খুঁজতে যখন নানা তর্কবিতর্ক চলছে, আদালতের আদেশে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন যখন বিদেশ থেকে কার্যকর ওষুধ আনার তোড়জোড় করছে, তখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন বিশেষজ্ঞ জানালেন, বাংলাদেশ হাঁটছে ভুল পথে। খবর বিডিনিউজের। ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কীটতত্ত্ববিদ বি এন নাগপাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, ফগার মেশিনে রাস্তা বা উন্মুক্ত জায়গায় কীটনাশক ছিটিয়ে ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা মারার আশা কেবলই ‘মিথ’। তার বদলে নিজের ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং সকাল-সন্ধ্যা এ্যারোসল স্প্রে করুন, কারণ এডিস মশা ওখানেই থাকে। চলতি বছরের শুরুতে আইসিডিডিআরবি’র এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা সিটি করপোরেশনে মশা মারতে যে ওষুধ ব্যবহার করা হয় তা আর কার্যকর নয়। এরপর জুনের শুরুতে ঢাকায় ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বাড়তে শুরু করে এবং জুলাইয়ের শেষে তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের সব জেলায়। ফলে এই সিটি করপোরেশনের মশা নিধন কার্যক্রমে শিথিলতার অভিযোগ ওঠে, মশা মারার কার্যকর ওষুধ কেন কেনা হলো না- সেই প্রশ্ন জোরালো হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে হাতে থাকা ওষুধের ডোজ আর ফগার মেশিন বাড়িয়ে রাস্তা ঘাটে ছিটিয়ে মানুষের আতঙ্ক কমানোর চেষ্টা করতে দেখা যায় দুই সিটি করপোরেশনকে। দুই মেয়রের পাশাপাশি সরকারের মন্ত্রীদেরও ফগার মেশিন হাতে রাস্তায় নামতে দেখা যায় বিভিন্ন কর্মসূচীতে।
×