ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাইনির গতিতে মুগ্ধ কোহলি

প্রকাশিত: ১২:০৮, ৬ আগস্ট ২০১৯

সাইনির গতিতে মুগ্ধ কোহলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বলা হয় টি২০’র বিশেষজ্ঞ টিম। সেই তাদেরই উড়িয়ে দিয়ে এক ম্যাচ আগে সিরিজ নিশ্চিত করল বিরাট কোহলির দল। মার্কিন মুলুকের লাডারহিলে প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেটের জয়ের পর বৃষ্টিবিঘিœত দ্বিতীয় টি২০তে ডি/এল মেথডে ভারতের জয় ২২ রানে। টানা দুই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে কোহলিবাহিনী। স্কোর: ভারত ১৬৭/৫ (২০ ওভার), উইন্ডিজ ৯৮/৪ (১৫.৩ ওভার) অলরাউন্ড নৈপুণ্যে এদিন সফরকারীদের জয়ের নায়ক হারদিক পান্ডিয়ার ভাই ক্রনাল পান্ডিয়া। তবে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই অভিষেকে ঝড় তোলা পেসার নভদীপ সাইনির পারফর্মেন্স যেন কোহলির চোখে লেগে আছে। ভারত অধিনায়ক স্পষ্ট জানিয়েছেন, ক্যারিয়ারে এমন গতিময় বোলার তিনি খুব কমই দেখেছেন। এদিন ৫১ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রানের পথে ক্রিস গেইলকে টপকে টি২০তে ছক্কা হাঁকানোর বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন রোহিত শর্মা। গায়ানায় আনুষ্ঠানিকতার তৃতীয় ও শেষ টি২০ মঙ্গলবার। বিরাট কোহলি বলেন, ‘নভদীপ হলো সেই বোলারদের একজন, যে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারে। এত জোরে বল করতে পারে এমন বোলার খুব কমই আছে, অন্তত ভারতে। শারীরিকভাবেও ও বেশ ফিট। সাইনি কিন্তু নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। ওর সাফল্যের খিদেটাও বেশি। আশা করব এই সুযোগটা ও কাজে লাগাবে।’ প্রথম টি২০তে অভিষেকে ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন সাইনি। যেখানে ইনিংসের শেষ ওভারটি ছিল আবার মেডেন। টি২০ ইতিহাসে মাত্র চতুর্থ ঘটনা। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য ২৭ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি। ২৬ বছর বয়সী সাইনির জন্ম হরিয়ানার দরিদ্র পরিবারে। ২০১৩ সালে গৌতম গাম্ভীরের নজরে পড়েন। রঞ্জি ট্রফিতে দিল্লীর হয়ে আগমনেই আলো ছড়িয়ে জায়গা করে নেন আইপিএলে। অথচ এর আগে কখনও ডিউক বল দেখার সুযোগ হয়নি। পাড়ার গলিতে ২০০ রুপীতে খ্যাপ খেলতেন! সাইনির উত্থানের গল্পটা যেন সিনেমার সঙ্গে মিলে যায়। আগুন দেখে তাকে নেট বোলার হিসেবে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও নিয়ে গিয়েছিল ভারত। সাইনিকে কোহলির চেয়ে ভাল আর কেই বা চেনেন? গত আইপিএলে কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলেই শিরোনামে উঠে আসেন। যার পেছনে দুরন্ত সেই গতির কাহিনী। আইপিএলে অনেক ম্যাচেই দেখা গেছে, ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন সাইনি। তারকায় ঠাসা ভারতের মতো একটা দলে খেলতে পেরে সাইনি নিজেও বাকরুদ্ধ, ‘শনিবার সকালে (প্রথম ম্যাচে দিন) আমি যখন ভারতের টুপিটা পাই, বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে, এত দিনকার স্বপ্নটা সত্যি হতে চলেছে। হরিয়ানার ছোট্ট শহর থেকে উঠে এসে দিল্লীতে গাম্ভীরদের নেটে যে ছেলেটা বল হাতে দৌড় শুরু করেছিলেন, তিনি আজ ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির কাছে মুদ্ধতা ছড়ানো ফাস্ট বোলার। সাইনির বাঁহাতে নেকড়ে বাঘের ট্যাটু অনেকেরই নজরে এসেছে, ‘ছোটবেলায় আমি আর আমার বড় ভাই খুব নেকড়ের সিনেমা দেখতাম। তাছাড়া পৃথিবীতে নেকড়েই একমাত্র প্রাণী যে পোষ মানে না, সার্কাসে দেখা যায় না! যে কারণে আমার এটা ভাল লাগে।’ বলেন তিনি। কুলদীপ যাদব এবং যুবেন্দ্র চাহালের বিশ্রামে রবিন্দ্র জাদেজার সঙ্গে স্পিনের দায়িত্ব সামলেছেন ওয়াশিংটন সুন্দর ও ক্রনাল পান্ডিয়া। ব্যাট হাতে ১৩ বলে অপরাজিত ২০ রানের পর অর্থোডক্স স্পিনে ২ উইকেট নিয়ে সিরিজ নিশ্চিতের দিনে ম্যাচসেরা হয়েছেন ক্রনাল, ‘ভারতের হয়ে এমন পারফর্ম করার জন্যই আমাকে দলে নেয়া হয়েছে। দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে ভাল লাগছে।’ বলেন তারকা অলরাউন্ডার হারদিক পান্ডিয়ার ভাই ক্রনাল পান্ডিয়া। ম্যাচের নায়ক ওয়াশিংটনকে নিয়ে অধিনায়ক কোহলি বলেন, ‘ওয়াশিংটনকে সবচেয়ে কঠিন জায়গায় বল করতে হয়েছে। দু-জন পাওয়ার হিটারের বিরুদ্ধে ওর হাতে বল তুলে দিয়েছিলাম। নিজেকে ও অসাধারণ ভাবে তুলে ধরেছে। আমার বিশ্বাস, ভবিষ্যতে সে ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দেয়ার পারফর্মার হয়ে উঠবে।’ উইন্ডিজ সফরে তিন টি২০ ও তিন ওয়ানডের পর দুই টেস্টের সিরিজ খেলবে কোহলির ভারত।
×