ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ৬ আগস্ট ২০১৯

ঢাকার দিনরাত

লেখার শুরুতে বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাবো সেইসব চিকিৎসক, নার্স ও মেডিক্যাল কর্মীদের, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন ডেঙ্গুরোগীদের সুস্থ করে তোলার জন্যে। তারা শুধু পেশাদারিত্বের পরিচয়ই রাখছেন না, আন্তরিকতা ও মমতা দিয়ে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে রোগীরা সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরতে পারে। ঢাকায় ভয়াবহ আকারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধবদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমার ছেলের এক খালা কলকাতা থেকে ফেরার সময় ছেলের জন্য নতুন ধরনের ডেঙ্গু নিরোধক নিয়ে এসেছেন। এতদিন ক্রিম ওডোমসের কথাই জানতাম। ওটাই দিনের বেলা ছেলেকে লাগিয়ে রাখতে বলতাম গায়ে। প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি এই প্রতিরোধক (প্যাচ) গায়ে লাগাতে হবে না, জামায় আটকে দিলেই হবে। মেয়াদ ২৪ ঘণ্টা। মশা নাকি কামড়াবে না। চব্বিশটি প্যাচের মূল্য ভারতীয় ৩০০ রুপী (এটি ছাড়কৃত মূল্য)। দামীই বলব। তবু যদি রক্ষা মেলে। সে যাক, জরুরী কথা হলো, এবারের পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিতে হবে যাতে আগামীতে আমরা ডেঙ্গুকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারি। এটি সম্ভব শুধু বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সুপরিকল্পনামাফিক সারা বছর আন্তরিকভাবে সততার সঙ্গে কাজ করে গেলে। ইতোমধ্যে যাদের ডেঙ্গু হয়েছে তাদের জন্য সহমর্মিতার পাশাপাশি একটি কথা না বললেই নয়। সেটি হলো, মনে রাখবেন এই রোগে আক্রান্ত হওয়া মানেই কিন্তু আপনি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছেন, বিষয়টি এমন নয়। বুকে সাহস রাখুন, সুচিকিৎসা নিন। লড়াই করেই সুস্থ হতে হবে, এবং সেই লড়াই রোগীকেই করতে হবে। অল্পবয়সী রোগীদের অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ, সন্তানকে সাহস দিন। যথোচিত চিকিৎসায় রোগমুক্তি সম্ভব। আর যদি কোন রোগী মনোবল হারিয়ে মৃত্যুভয়ে ভীত হয়ে মৃত্যুর দিন গুনতে থাকে মনে-মনে, তাহলে কিন্তু বিরাট বিপদ। এতে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, সুচিকিৎসা ব্যাহত হবে। চোখ-কান খুললেই তো জানবেন, এই রোগে মৃত্যুর উদাহরণ সামান্যই। তাই আতঙ্ক নয়, সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন। মশা বলে কত জল! এই শিরোনামে আমাদের এক বন্ধু আহমেদ মুশফিকা নাজনীন ফেসবুকে দারুণ পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন- ‘বাতাসে ধুলা। শাসকষ্টে বাড়ে নেবুলাইজারের দাম। এর মাঝে উড়ে এসে জুড়ে বসে এডিস মশা। নগরপিতার কর্মকর্তারা বলেন, তাদের মারতে গেলে উত্তরের মশা দক্ষিণে যায়। দক্ষিণের মশা যায় বেড়াতে উত্তরে। তাদের কি করা আছে। পাখা মেলে উড়ছে মশা। মেলে দিয়ে গানের পাখনা। মশার কামড়ে অসহায় তখন নাগরিকের করুণ মুখ। হাতের নাগালে তখন আর নেই মশা। চালাক হয়ে গেছে সে। সে জানে নাগরিকরা দুর্বল। তাদের মশা মারার কয়েল নেই, ওষুধ নেই, মশারির দাম বেড়ে গেছে। হাসপাতালগুলোতে বাড়তে থাকে রোগী। বন্ধু পিকু কিছুক্ষণ আগে ফোন করে কান্নাজড়িত গলায় বলে অস্থির লাগছে। ওর পরামর্শ, আমরা যার যার বাড়ির আশপাশে নিজ উদ্যোগে পরিষ্কার করতে পারি। একদিন যদি সবাই মিলে রাস্তায় নামি। ডাবের খোসা, ক্যান, পানি জমে থাকার পাত্রগুলো সবাই মিলে যদি নষ্ট করে ফেলা হয় তাহলে তো কিছুটা মশা কমবে। ওর কথাগুলো ভাবছি। প্রতিটা ওয়ার্ডে যারা কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে আছেন তারা কি শুনবেন আমাদের কথা। বরং পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কাজে লাগান। যার যার ওয়ার্ড পরিষ্কার করান নিজ দায়িত্বে। আমরা আপনাদের কর দেই। ভোট দেই। নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার আছে আপনার কাজের কৈফিয়ত চাওয়ার। এই যে এত মশার ওষুধ কেনা হলো। সেগুলো গেলো কোথায়? কি কাজ করেছেন আপনারা? মশা তো খায়নি। তাহলে কে খেল। ভাবছি প্রশ্নগুলো নিয়ে যাব ওয়ার্ড কমিশনরারের কাছে। বন্ধুরা আপনার যার এলাকায় যে ওয়ার্ড কমিশনার দায়িত্বে আছেন তার কাছে দলবেঁধে যান। তাকে বলুন তার কর্মীদের নিয়ে পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে। পাশাপাশি আমরাও সচেতন হই। নিজেই প্রতিজ্ঞা করি, আর একটা ময়লাও আমরা আর কখনও ফেলব না রাস্তায়।’ নিরাপদ সড়ক ও গণপরিবহন ঢাকার সড়ককে নিরাপদ করার ব্যাপারে ছাত্রদের আন্দোলনের বর্ষপূর্তি হয়ে গেল। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কতটা? কর্তৃপক্ষ চেষ্টার ত্রুটি করছে না, কিন্তু পরিস্থিতিরও উল্লেখযোগ্য উন্নতিসাধন সম্ভব হচ্ছে না। নিজের অভিজ্ঞতার কথাই বলি। উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে চলে দুটি কোম্পানির এসি বাস বিআরটিসি এবং চাকা ঢাকা। বিআরটিসি যায় শাহবাগ হয়ে আর চাকা ঢাকা যায় রামপুরা মালিবাগ হয়ে। বিআরটিসির টিকেটের দাম ৭০ টাকা, অন্যদিকে চাকা ঢাকার টিকেটের দাম ১০০ টাকা। সম্ভবত ঢাকা শহরের মধ্যে কোন গণপরিবহনের টিকেটের সর্বোচ্চ মূল্য এটাই। সেদিন মতিঝিলে জরুরী কাজে যাব বলে চাকা ঢাকার টিকেট কেটে উঠে পড়ি। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার। উত্তরা থেকে চার ভাগের একভাগও ভরল না বাসটির, তবে যেতে যেতে আধঘণ্টার মধ্যেই সব সিট পূরণ হয়ে গেল। ভাবলাম, যাক আর বোধহয় যাত্রী তুলবে না। কারণ এটি সিটিং বাস। তার ওপরে এয়ার কন্ডিশন্ড। কিন্তু দেখা গেল গাদাগাদি ঠাসাঠাসি করে লোক দাঁড় করানো হলো। কেন? বেশি টাকা দিয়ে এমন ঠাসাঠাসি পরিস্থিতি কেন? বুঝলাম সবার তাড়া। তাই দাঁড়িয়ে হলেও যেতে হবে। কিন্তু যারা বসে আছেন তাদের ঘাড়ের ওপরে যে ওইসব যাত্রীর নিঃশ্বাস পড়ছে! কেউ নামতে গেলে ঠেলাঠেলি আর ধাক্কাধাক্কি দশা চলছে। তার কি হবে? এটা কর্তৃপক্ষের বাণিজ্যিক বুদ্ধি ছাড়া আর কিছুই নয়। বাসের সংখ্যা বাড়ালে ব্যবসার ব্যয় বাড়বে। তাই সীমিতসংখ্যক বাসে নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে সর্বোচ্চ মুনাফা তুলে নেয়া। এখানে সড়ক কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কোথায়। তারা যদি বিষয়টি নজরদারি করত (হয়ত করে এবং নিয়মিত মাসোহারা তুলে নেয় অনৈতিকভাবে) তাহলে যাত্রীরা আরাম করেই গন্তব্যে যেতে পারতেন। ভেবেছিলাম বিআরটিসিতেই চলে এমন অনিয়ম। এখন দেখা যাচ্ছে চাকা ঢাকার ব্যবস্থাপনা আরও এক কাঠি সরেস। ঢাকার রাস্তায় চারদিকে তাকালে অবশ্য নন এসি বাসই বেশি চোখে পড়ে। তার ভেতরে গরমে ধস্ত নাকাল মানুষের সারি। প্রাইভেট গাড়িই বেশি রাস্তায়। আর তার বেশিরভাগই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। আপনাকে যদি কোন কারণে কোন এসি প্রাইভেট কারের ঠিক পাশ দিয়ে যেতে হয় তাহলে টের পাবেন ওই ঠা-া গাড়িটি কিভাবে উগরে দিচ্ছে তপ্ত বাতাস। হঠাৎ করেই আগুনের হল্কা এসে পড়বে আপনার শরীরে। ঢাকার গণপরিবহনের শতকরা এক ভাগও কিন্তু এসি নয়। মতিঝিল-উত্তরা রুটে গত দশকেও অন্তত তিনটি কোম্পানির এসি বাস চলত। ঢাকাকে রাজধানী বলে ডেকে শুধু শুধু আত্মপ্রবঞ্চনা। দিন দিন নাগরিক সুবিধা এখানে কমেই চলেছে। আমি না হয় সময়মতো এসি বাসে উঠতে পেরেছিলাম। যারা নন এসি বাসের ভেতর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘেমেনেয়ে একাকার হন, তাদের কষ্টের কথা শোনাতে গেলে হয়ত পাঠক বিরক্ত হবেন। বিব্রতও হতে পারেন। কোন কোন বাসের ভেতরে ছোট ছোট ফ্যান রয়েছে। চালককে সেগুলোর সুইচ অন করতে বলবেন, দেখবেন চালক নিরুত্তর। অভিজ্ঞ কোন সহযাত্রী জানিয়ে দেবেন যে, সব ফ্যানই নষ্ট, কেবল চালকের মাথার ওপরেরটা ছাড়া। ফিরে আসি এসি সার্ভিসের আলোচনায়। আবদুল্লাহপুর-ফার্মগেট-মতিঝিল রুটে চলাচলকারী বিআরটিসির এসি বাসের এসি যথাযথভাবে কাজ করে না। অতিরিক্ত যাত্রী বহনও এর কারণ হতে পারে। সিটগুলো যথেষ্ট সংকীর্ণ বলে দুই সারির প্রান্তের যাত্রীদের শরীরের কিছু অংশ সিটের বাইরে চলে যায়। আবার ঠাসাঠাসি গাদাগাদি করে যাত্রী ওঠানোয় আসনে উপবিষ্ট কিংবা দাঁড়িয়ে থাকাÑ সব যাত্রীরই অস্বস্তিকর অবস্থায় পথ পাড়ি দিতে হয়। তার অর্থ হলো বাস কর্তৃপক্ষ টাকা বেশি নিলেও প্রাপ্য সার্ভিস দিচ্ছে না। যাত্রীদের সবচেয়ে বড় জিজ্ঞাসা হচ্ছে বিপুলসংখ্যক যাত্রী থাকতে এই রুটে মাত্র একটি এসি বাস সার্ভিস কেন? অবস্থা পর্যালোচনা করলে আমরা সম্ভাব্য সিদ্ধান্তে আসতে পারি। স্পষ্টত এক্ষেত্রে অনৈতিক কিছু ঘটছে। যাদের বিষয়টি দেখার কথা, তারা চোখ বুজে আছেন। সরকারের কোন একটি খাত, সেটি যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, তা যদি ঠিকঠাক না চলে তাহলে ধরে নিতে পারি এটির উর্ধতন কর্তৃপক্ষ হয় অযোগ্য, নয় দুর্নীতিপরায়ণ। কিন্তু মানুষ দোষ দেয় সরকারকেই। ফলে সব দায় সরকারের ওপর চাপতে পারে। সেজন্যেই আমরা মনে করি, অযোগ্য কিংবা দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের সরিয়ে সেক্টরে নিয়মশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো জরুরী। দু-চারজনের জন্য হাজার হাজার যাত্রী কেন নিত্য ভোগান্তিতে থাকবে। আর সরকারও বা কেন অপবাদ সহ্য করবে? সিটিং সার্ভিস নিয়ে যে ‘চিটিং’ শুরু হয়েছে সেটি থামানোর দায়িত্ব কার? গত বছর নতুন করে সিটিং সিস্টেম চালু হওয়ার আগে আবদুল্লাহপুর থেকে শাহবাগ পর্যন্ত ৩নং লোকাল বাসে ভাড়া ছিল ১৮ টাকা। এখন সিটিং নামের একই বাসগুলো একই দূরত্বের যাত্রায় যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছে দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৩৫ টাকা। নামে সিটিং হলেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর এই রুটের বাসগুলো এখন কোনকিছু তোয়াক্কা না করে গাদাগাদি ঠাসাঠাসি করে বাসে লোক নিচ্ছে। তার সোজা অর্থ হলো সিটিং ঘোষণা দিয়ে একদিকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, অন্যদিকে লোকাল বাসের দশাও ফিরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী দায়িত্বশীল হলে অন্তত এই সিটিং বাসের ‘চিটিংগিরি’ নিশ্চয়ই বন্ধ হয়ে যেত। এসে গেল ঈদ রোজার ঈদ ও কোরবানির ঈদÑ দু’ঈদে ঢাকার দিনরাত প্রায় একই রকম, অবশ্য সামান্য একটু পার্থক্য রয়েছে। ঈদের আগে ঢাকা ফাঁকা করে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায়Ñ শহর ও গ্রামের উদ্দেশে ছুটে যাওয়া সাধারণ নিয়মে পরিণত। যারা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও যেতে ব্যর্থ হন তাদের হৃদয়ের ভেতর চেপে রাখা দীর্ঘশ্বাস, যারা যান না বলে আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখেন তারা এবং তাদের সঙ্গে ঢাকার অন্যান্য নাগরিকরা ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নেন। রাস্তাঘাটে যানবাহন ও মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে আসায় ঢাকার চিরচেনা বা বলা ভাল স্থায়ী হয়ে যাওয়া রূপ বদলে যায় সাময়িকভাবে। এখন চলছে অবাক শ্রাবণ। কোথায় বৃষ্টি, রীতিমতো কটকটে রোদ, অসহ্য গরম। প্রত্যাশা থাকে কোরবানি ঈদের দিন সকালে না হোক, বিকেল বা রাতে বৃষ্টি হোক। বৃষ্টি হলে পশুজবাইয়ের রক্তধারা সব ধুয়ে যাবে। সুনির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাইয়ের জন্য প্রচারণাও চালানো হয়। পুরো রাস্তা আটকে পশু কোরবানি দেয়ার সংস্কৃতি থেকে রাজধানীবাসী বের হয়ে আসতে পারেনি। কোরবানি ঈদের আগে লাখো গরু-ছাগলের আগমনের কারণে রাজধানীর অবয়ব অনেকটাই বদলে যায়। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলোয় এক অন্যতর গন্ধ পাওয়া যায়। যে গলিতে কুকুর-বিড়াল ছাড়া অন্য মানবেতর প্রাণীর প্রবেশাধিকার মেলে না, সেখানে বীরদর্পে ঢুকে পড়ে দশাসই ষাঁড়। সেইসঙ্গে নিরীহদর্শন কিছু ছাগলও। এ দুটি প্রাণীর উদরপূর্তির জন্য খড়-বিচালি ও কাঁঠাল পাতার প্রয়োজন পড়ে। গরু-ছাগলের হাঁকডাক গলির ধ্বনিতরঙ্গে আচমকা ভিন্ন আবহ নিয়ে আসে। গোবর- গোমূত্রের গন্ধ গ্রামীণ পরিবেশে মিশে থাকে, নগরীতে তা সাময়িক। ফলে সাময়িকভাবেই বদলে যায় রাজধানীর পরিবেশ। গরু বাঁধার জন্য গাছ কি মেলে সব স্থানে? বরং রয়েছে ইলেকট্রিকের পোল, ফটকের লোহা বা ইস্পাত নির্মিত বার। গ্রিলের সঙ্গেও দড়ি দিয়ে বাঁধা হয় কোরবানির পশু। স্বল্পকালীন এই অতিথিরা কোরবানির শেষে একরকম অদৃশ্যই তো হযে যাবে। তবু ক’টা দিন রাজধানীর সামগ্রিক পরিবেশ ও অর্থনীতিতে একটা বড় প্রভাব ফেলে যেতে দেখি আমরা। সড়কে সড়কে দেখতে পাই মাংস কাটার ধারালো সরঞ্জাম, হোগলা পাতার পাটি এবং গাছের গুড়ির কর্তিত অংশ নিয়ে বসে পড়েছেন দোকানিরা। সব মিলিয়ে এক ভিন্নধর্মী বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করে রাজধানী বছরে এই একটিবার। মমতাভরে কাঁঠালপাতা যে ছাগলটির মুখে তুলে দিতে দেখলাম এক ঘরনীকে, ঈদের দিন সেই তিনিই ওই প্রাণীটির মাংস দারুণ মসলা সহযোগে রেঁধে তার টুকরো তুলে দেবেন প্রিয়জনের পাতে। প্রিয় পাঠক ঈদে যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন। নতুন আপদ ডেঙ্গু থেকে সাবধানে থাকুন। ৪ আগস্ট ২০১৯ [email protected]
×