ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মির্জাপুরের বারুখাল দখল করে স্থাপনা ॥ পানি প্রবাহ বন্ধ

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ৫ আগস্ট ২০১৯

 মির্জাপুরের বারুখাল দখল করে স্থাপনা ॥ পানি  প্রবাহ বন্ধ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মির্জাপুর, ৪ আগস্ট ॥ মির্জাপুর পৌর সদরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র বারুখালটি এখন দখলের চরম পর্যায়ে। দখলবাজরা খালটির কিনারা দখল শেষ করে এখন খালটিই গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে। অব্যাহত রয়েছে পৌরসভার একমাত্র জলাধারটির কিনারা ও তলদেশ দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ। জনগুরুত্বপূর্ণ খালটির দখল অব্যাহত থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন এবং পৌরসভা কর্তৃপক্ষ খালটি দখলমুক্ত করতে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। এখন সবার প্রশ্ন, কবে দখলমুক্ত হবে মির্জাপুর সদরের বারুখালটি। জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলা সদরের মাঝদিয়ে প্রবাহিত বারুখালটি লৌহজং ও বংশাই নদীর একমাত্র সংযোগ খাল। এক সময় খালটি দিয়ে বড় বড় জং নৌকা চলত। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নৌকাযোগে মির্জাপুর বাজার ও হাটে আসার এই খালটি ছিল এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। এছাড়া বর্ষায় দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা খালটি দিয়ে নৌকাযোগে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য থানা ঘাটে আসতেন। ’৮০’র দশকেও বর্ষা মৌসুমে থানা সংলগ্ন খালটির ধারে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক নারিকেল ভর্তি বড় বড় জং নৌকা সারি সারি বাঁধা থাকত। অন্যদিকে খাল সংলগ্ন বাইমহাটী গ্রামের মৃৎশিল্পীরা নৌকা ভর্তি করে এই খালটি দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করতে যেতেন। কিন্তু সদরের একমাত্র জনগুরুত্বপূর্ণ খালটি দখল হয়ে যাওয়ায় ভরা বর্ষায়ও খালের প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খালটি এলাকার মানুষের কোন কাজে আসছে না। এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী দখলবাজ বছরের পর বছর ধরে খালের জায়গা দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। অনেক দখলবাজ জালিয়াতি করে কাগজপত্র তৈরি করে খালের জায়গা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে বলে জানা গেছে। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল মালেকের সঙ্গে যোযাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বারুখালটি মির্জাপুর পৌর শহরের মাঝদিয়ে বয়ে গেছে। এই খালের দখলবাজদের উচ্ছেদ করতে পৌর মেয়রের সহযোগিতা লাগবে। এছাড়া খালটি উদ্ধারের জন্য সীমানা পরিমাপ করে লাল নিশান পুঁতা হয়েছিল। দখলবাজদের তালিকা করে শীঘ্রই খালটি দখলমুক্ত করা হবে বলে তিনি জানান। মির্জাপুর পৌর মেয়র সাহাদৎ হোসেন সুমন বলেন, খালটি পৌরবাসীর জন্য ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য এবং প্রাতঃ ভ্রমণকারীরা যাতে খালের কিনারা দিয়ে হাঁটাচলা করতে পারেন সেজন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে খাল উদ্ধারে কাজ করবেন বলে তিনি জানান।
×