ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

লাকসামে স্কুলমাঠে পশুর হাট ॥ পাঠদান ব্যাহত

প্রকাশিত: ০৮:৪৫, ৫ আগস্ট ২০১৯

 লাকসামে স্কুলমাঠে পশুর হাট ॥ পাঠদান  ব্যাহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, লাকসাম, কুমিল্লা, ৪ আগস্ট ॥ প্রতিবছরের মতো এবারও কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে স্কুল চলাকালীন গরু-ছাগলের হাট বসানোর প্রস্তুতি চলছে। এতে পাঠদানে ভোগান্তিতে পড়বে শিক্ষার্থীরা। স্কুল মাঠে গরু-ছাগলের হাট বসানোর পরিকল্পনা করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। পড়াশোনার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে বিদ্যালয়ের মাঠে গরু-ছাগলের হাট না বসানোর জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির জোগসাজশে প্রত্যেক বছরই স্কুল মাঠে গরু-ছাগলের হাট বসানো হয়। আজগরা স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ তপন চন্দ্র সাহা বলেন , এবারও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তেই মাঠে হাট বসানোর হয়েছে। গত বছর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানালেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সাইফুল আলম বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে যে প্রস্তাব এসেছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে প্রায় ২০টি স্থানে গরু-ছাগলের হাট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন নাম নেই। স্থানীয় বাজারের নামে ইজারা দেয়া হয়েছে। স্কুল মাঠে যদি গরু-ছাগলের হাট বসানো হয়ে থাকে তাহলে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, নরপাটি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আজগরা স্কুল এ্যান্ড কলেজ, গোবিন্দপুর হাইস্কুল, শ্রীয়াং উচ্চ বিদ্যালয়, রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, শহীদ আবুল খায়ের উচ্চ বিদ্যালয়, ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে গরু-ছাগলের হাট বসানোর জন্য প্রস্তুতি চলছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে স্থানীয় ছোট-বড় বাজার নামে গরু-ছাগলের হাট বসানোর নাম করে ইজারাদাররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠজুড়ে হাট বসানো হয়। দেখা যায়, প্রত্যেক স্কুল মাঠজুড়ে বাঁশের খুঁটি দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে ইজারাদাররা। এরমধ্যে চলছে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান। বিরতির সময় ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসরুম থেকে মাঠে ছোটাছুটি করতে পারছে না। স্কুল মাঠে গরু-ছাগলের হাট বসায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বিদ্যালয়গুলোর হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে। হাটের দিন ওই বিদ্যালয়ের স্কুল চলাকালীন ধুলাবালি, গরু ছাগলের মলমূত্র, ক্রেতা-বিক্রেতার হৈচৈর কারণে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ থেকে মারাত্মকভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী নিলুফা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ে যেখানে জ্ঞানের আলো ছাড়ানো হয় সেখানে গরু-ছাগলের হাট বসিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয় মাঠে গো চনার গন্ধে হাটের পরের দিন ক্লাস নিতে সমস্যা হয়। বিশেষ করে এ হাটের কারণে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এভাবে গরু-ছাগলের হাট বসিয়ে শিক্ষাদানে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা হয়। তিনি আরও বলেন, প্রশাসন কিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোরবানির হাট বসানোর ইজারা দেয় তা আমাদের বোধগম্য নয়।
×