ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধায় সরকারী সহায়তা প্রয়োজন

১৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ৫ আগস্ট ২০১৯

১৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ৪ আগস্ট ॥ বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গাইবান্ধার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছে। কেননা বন্যাকবলিত জমিতে বিদ্যমান ফসল, শাকসবজি, আমন ধানের বীজতলা এবং আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তদুপরি চরাঞ্চলের জমিগুলোতে বালু জমে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষককে ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে চাষাবাদ করতে নতুন করে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় বন্যা পরবর্তী কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় সরকারী সহায়তা না পেলে বন্যা দুর্গত এলাকার দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগের কবলে পড়বে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এবারের ভয়াবহ বন্যায় গাইবান্ধায় কৃষিক্ষেত্রে মারাত্মক বিপর্যয় হয়েছে। জেলায় হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে দীর্ঘদিন ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকায় এসব ক্ষেতের ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এবারের বন্যায় জেলায় ১৪ হাজার ২১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণরূপে এবং ৮ হাজার ৫০১ হেক্টর জমির ফসল আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অঙ্কে এ ক্ষতির পরিমাণ ৯২ কোটি ১ লাখ ১৭ হাজার। বন্যায় চরাঞ্চলে রোপা আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বিলুপ্ত প্রায় এ ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়। প্রণোদনা হিসেবে প্রায় ৬০ লাখ টাকার উন্নতজাতের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এবারে জেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হলেও প্রণোদনার কারণে জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আউশ ধানের চাষ হয়েছে ১০ হাজার ৮৫৩ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে ৯ হাজার ৮৩৫ হেক্টরে উফশী জাতের এবং ১৬৫ হেক্টর স্থানীয় জাতের চাষ করা হয়। এবারে আউশ চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছিল ২৭ হাজার ২৮৫ মে. টন। উৎপাদনের এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বন্যায় কৃষকদের সেই আশা ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। আউশ ধান ছাড়াও এবারের ভয়াবহ বন্যায় ৬ হাজার ৬১৯ হেক্টর জমির পাট, ২ হাজার ৮৮১ হেক্টর জমির রোপা আমন বীজতলা, ৩১ হেক্টরের রোপা আমন, ১ হাজার ১৭৭ হেক্টরের শাকসবজি, ৩ হেক্টরের পান বরজ ও ১২০ হেক্টর জমির অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফসলের এ ব্যাপক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি বিভাগ কি কি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এসএম ফেরদৌস জানান, এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এক শ’ একর জমিতে আমন বীজতলা স্থাপন করা হবে। এসব বীজতলা বিনামূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়া ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে ৫ কেজি করে উন্নতজাতের আমন বীজ ধান দেয়া হবে, যা দিয়ে কৃষকরা নিজেরাই বীজতলা স্থাপন করতে পারবে। এছাড়া কৃষি পুনর্বাসনের জন্য অধিদফতরের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
×