ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

২০২০ সালের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার চান ট্রাম্প, কাতারে তালেবানের সঙ্গে বৈঠক

দেশে ফিরছে মার্কিন সৈন্য

প্রকাশিত: ০৮:১৪, ৫ আগস্ট ২০১৯

  দেশে ফিরছে মার্কিন সৈন্য

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন তিনি ২০২০ সালের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সৈন্য দেশে ফিরিয়ে আনতে চান। পাঁচজন সিনিয়র সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এনবিসি সংবাদটি প্রকাশ করেছে। এদিকে শনিবার কাতারে মার্কিন - তালেবান শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। বিবিসি ও সিএনএন। গত বছার ডিসেম্বরেই ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি আফগানিস্তান থেকে সব সৈন্য ফিরিয়ে আনতে চান। এরপর প্রশাসনের নীতি নির্ধারিক মহলের চাপে তিনি ওই সময় সীমা থেকে ফিরে আসেন। এবার তিনি জানালেন আগামী বছর নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই তিনি একাজ সারতে চান। যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান আফগানিস্তানে ১৮ বছর ধরে চলা যুদ্ধ অবসানের উদ্যেগ নিয়েছে। এই উপলক্ষে শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় দুপক্ষ বৈঠক। এবারের আলোচনাকে দু’পক্ষের সমঝোতার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যয় হিসেবে হিসেবে দেখা হচ্ছে। দু পক্ষ এর আগেও পরষ্পরের মুখোমুখি হয়েছে। তবে এবারের বৈঠক থেকে একটি চুক্তিতে পৌছানোর ব্যাপারে উভয় পক্ষ আশা প্রকাশ করেছে। আলোচনায় অংশ নেয়া এক মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, আট ধাপের এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে ১৩ আগস্টের আগেই একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানো যেতে পারে। এতে করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে বলে আশাবাদ তাদের। আলোচনায় অংশ নিতে শুক্রবার রাতে দোহায় পৌঁছান আফগানিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ। গত বছর থেকে শুরু হওয়া তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের তিনি নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন। দোহায় টুইটারে খলিলজাদ বলেন, ‘তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা শুরুর উদ্দেশে এইমাত্র দোহায় পৌঁছালাম। আমরা সেনা প্রত্যাহার নিয়ে নয়, বরং একটি শান্তি চুক্তিতে সম্মত পৌছানোর চেষ্টা চালাচ্ছি। এটি হবে এমন এক চুক্তি, যা সেনা প্রত্যাহারে সহায়ক হবে। আফগানিস্তানে আমাদের উপস্থিতি শর্তসাপেক্ষ, আমাদের সরে যাওয়াও হবে শর্তসাপেক্ষ। আমরা একটি ভালো চুক্তির জন্য প্রস্তুত।’ এছাড়া তালেবান গোষ্ঠীর পক্ষ থেকেও সমঝোতায় আসার ব্যাপারে ইতিবাচকতা লক্ষ্য করা গেছে বলেও জানান যুক্তরাষ্ট্রের এ দূত। নতুন করে শুরু হওয়া এ আলোচনায় ১৯ সদস্যের তালেবান প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সুহালি শাহিন ও জবিহউল্লাহ মুজাহিদ নামে দুই তালেবান মুখপাত্র। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক তালেবান কমান্ডার বলেন, ‘বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টিই শান্তি আলোচনা ও চুক্তিকে বিলম্বিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর কোনো অবস্থাতেই আমরা স্থায়ীভাবে আফগানিস্তানে তাদের সৈন্য থাকতে দেবো না। একই সঙ্গে আমরা তাদের এ ব্যাপারেও আশ্বস্ত করবো যে, আর কোনো বিদেশি বাহিনী আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্র বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে পারবে না।’ আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তার উদ্দেশে দেশটিতে বর্তমানে ২০ হাজার ন্যাটো সেনা রয়েছে। এর অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রের। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানান, ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করতে চান। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের নিয়ন্ত্রণে ছিল আফগানিস্তান। পরবর্তীতে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের যৌথ অভিযানে তাদের ক্ষমতার অবসান হয়। এরপর থেকেই পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা। বর্তমানে তালেবানরা আফগানিস্তানের বেশির ভাগ এলাকার দখল নিয়েছে। তারা চায় সেখান থেকে বিদেশি সেনা সরিয়ে নেওয়া হোক। এদিকে জাতিসংঘ শানিয়েছে জানিয়েছে যে, জুলাই মাসে আফগানিস্তানে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক অসামরিক লোক হতাহত হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে বিগত জুলাই মাসে দেড় হাজার অসামরিক লোকজন হতাহত হয়েছে যা কীনা ২০১৭ সালের মে মাসের পর, কোন এক মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক হতাহত হবার ঘটনা।
×