ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ মেসি

প্রকাশিত: ১২:২৯, ৪ আগস্ট ২০১৯

আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ মেসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে লিওনেল মেসিকে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছে দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা (কনমেবল)। কোপা আমেরিকায় কনমেবল-এর বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। কোপা আমেরিকায় শেষ চারের লড়াইয়ে ব্রাজিলের কাছে পরাজিত হয় আর্জেন্টিনা। ম্যাচ হারার পরই কনমেবল-এর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মেসি। বলেছিলেন, আয়োজক দেশ হিসেবে ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন করানোর জন্যই কনমেবল চেষ্টা করেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই শুক্রবার আর্জেন্টিনার এই তারকা ফুটবলারকে তিন মাসের জন্য নির্বাসিত করল দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল সংস্থা কনমেবল। সঙ্গে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানাও করা হয়েছে মেসিকে। কোপা আমেরিকায় চিলির বিরুদ্ধে তৃতীয় স্থানের ম্যাচে লালকার্ড দেখানো হয় মেসিকে। লালকার্ড দেখার পর আর্জেন্টাইন তারকা বলেছিলেন, সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ার পরে কনমেবল-এর সমালোচনা করায় ওই ম্যাচে লালকার্ড দেখানো হয়েছিল তাকে। কোপা আমেরিকায় তৃতীয় হওয়ার পর পদকও নেননি মেসি। কনমেবলকে সরাসরি ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ সংস্থা বলায় দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলের সর্বোচ্চ নীতি নিয়ামক সংস্থার মারাত্মক সম্মানহানি হয়েছে বলেই মনে করেছিলেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। মেসির ওপরে কড়া শাস্তির খাঁড়া নেমে আসতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল। অবশেষে সেই পথেই হাঁটলো কনমেবল। এই শাস্তির ফলে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে চিলি এবং মেক্সিকোর বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না ৩২ বছরের এই আর্জেন্টোইন ফুটবলার। অক্টোবরে জার্মানির বিরুদ্ধেও খেলতে পারবেন না মেসি। এর আগেও কোপা আমেরিকার তৃতীয় স্থানের ম্যাচে রেফারির সমালোচনা করায় আগামী বছর দক্ষিণ আমেরিকার কোয়ালিফার্সে চিলির বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে নিষিদ্ধ করা হয় তাকে। প্রসঙ্গত এর আগে বর্সিলোনার মহাতারকার এমন অভিযোগের পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, বড় শাস্তির মুখে পড়তে হবে এলএম ১০কে। তখন সেসব অবশ্য হয়নি। মেসিকে এক ম্যাচ নির্বাসন ও দেড় হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়েছিল। সেই শাস্তি এখন বেড়ে দাঁড়ালো তিন মাসে। জরিমানাও হয়ে গেল বেশ মোটা অঙ্কের। ফলে ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচে খেলতে দেখা যাবে না মেসিকে। এ ধরনের মন্তব্যের পরে অবশ্য নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমাও চান মেসি। কোপা আমেরিকা ফাইনালে টানা দু’বার চিলির কাছে হারতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। এবার তৃতীয় স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। চিলির বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে আবার লালকার্ড দেখেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। আর তারপরই ক্ষুব্ধ মেসি পরোক্ষে লাতিন আমেরিকান ফুটবল ফেডারেশনকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলেন। তার দাবি ছিল, ‘এবার নাকি কনমেবলের কর্তারাই চেয়েছিলেন ব্রাজিল কোপা জিতুক।’ এমনকি সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে দুটো পেনাল্টি থেকেও নাকি তাদের বঞ্চিত করা হয়েছিল। দাবি করেছিলেন মেসি। চিলি ম্যাচে ঝামেলায় জড়ানোর পাশাপাশি কনমেবলের উদ্দেশ্যে মেসির এই তির্যক মন্তব্যের কারণেই তাকে এই শাস্তি দেয়া হয়েছে। কনমেবলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘মেসির মন্তব্য কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।’ যদিও এই ঘটনার পরই লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছিলেন এলএম টেন। কিন্তু সেটা আমলে নেয়া হয়নি। অবশ্য এই শাস্তির বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন ও মেসি আপীল করতে পারবেন। এই শাস্তি বলবত থাকলে সেপ্টেম্বরে চিলি ও মেক্সিকোর বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না তিনি। এরপর অক্টোবরে জার্মানি ও অপর একটি দলের বিরুদ্ধে জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামতে পারবেন না। যদিও শাস্তির বিরুদ্ধে এখনও মুখ খোলেননি মেসি কিংবা উল্লেখ্য, ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ম্যাচে হারের পর আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি দাবি করেন, ফাইনাল খেলার যোগ্য ছিল আর্জেন্টিনাই। মেসিও বাজে রেফারিং নিয়ে অভিযোগ তুলেন। এসব আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। সেখানে ঘটে আরেক বিপত্তি। করিন্থিয়াস এরেনায় চিলির বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের ৩৭ মিনিটের মাথায় পাওলো দিবালার বাড়ানো বল মাঠের মধ্যে রাখতে গিয়ে চিলির ডিফেন্ডার গ্যারি মেডেলের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায় মেসির। মেডেল বারবার ধাক্কা মারতে থাকলেও মেসি ছিলেন নির্লিপ্ত। তবু মেডেলকে ফাউল করতে উৎসাহিত করার অপরাধে এবং মাথা দিয়ে আঘাত করার ইঙ্গিত করায় মেডেলের সঙ্গে মেসিকেও লাল কার্ড দেখান রেফারি। আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন।
×