ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পানি নেই জলাশয়ে ॥ পাট নিয়ে বিপাকে কৃষক

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ৪ আগস্ট ২০১৯

পানি নেই জলাশয়ে ॥ পাট নিয়ে বিপাকে কৃষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ৩ আগস্ট ॥ দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। খানাখন্দ, পুকুর, জলাশয় কোথাও নেই পানি। কৃষকরা তাদের পাট পচাতে পারছেন না। ভূগর্ভের পানি সেচ দিয়ে পাট চাষ করেছিলেন চাষীরা। ফলন ভাল হয়নি বৃষ্টির পানির অভাবে। পানির জন্য চাষীদের মধ্যে রীতিমতো হাহাকার রব উঠেছে। কৃষি অফিস থেকে সব চাষীর পাটের ছাল বের করে মাটির নিচে পুঁতে পাটের রিবন রেটিং করার পরামর্শ দিয়েছেন। অনাবৃষ্টির কারণে আগামী বোরো আবাদেও ফলনে ধস নামার আশঙ্কা করেছে কৃষি বিভাগ। কৃষি অফিসার মনির হোসেন জানান, এ বছর কেশবপুরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল ৭ হাজার হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৬শ’ ৮০ হেক্টর জমিতে। গত বছর পাট চাষ হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার অনেক বেশি। পানির অভাবে এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। পাট রোপণের সময় বৃষ্টিপাত না থাকায় কৃষকরা স্যালো মেশিন দিয়ে ভূগর্ভের পানি তুলে পাট চাষ করেছেন। আর আকাশ পানি না পাওয়ায় পাটের ফলনও ভাল হয়নি। সারা বছর বৃষ্টি হয়নি বলে বর্তমানে খাল, বিল, নালায় পানি নেই। সে কারণে কৃষকদের এক মিটার গর্ত ও ৮ মিটার চওড়া করে সেখানে পাট প্রক্রিয়া করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে কৃষকরা জানিয়েছেন, অফিস থেকে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কোন মেশিন সরবরাহ করা হয়নি। তিনি আরও জানান, পানির অভাবে পাট কাটতে দেরি হওয়ায় এবার বোরো আবাদেও এর প্রভাব পড়তে পারে। সেজন্য এবারের ৮ হাজার ৮শ’ হেক্টর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেকেই পাট কাটছেন না। আবার অনেক কৃষকরা পাট পচাতে শুকনো খালে, পুকুরে সেচযন্ত্র দিয়ে ভূগর্ভে তুলে পাট পচানো চেষ্টা করছেন। বাগদাহ গ্রামের রফিকুল ইসমান জানান, তিনি ৬ বিঘা জমিতে এবার পাট চাষ করেছেন। সেচ পানি দিয়ে আবাদ করে এখন পাট পচানোর জায়গা পাচ্ছেন না। শনিবার সকালে তিনি স্যালো মেশিন দিয়ে ভূগর্ভের পানি পুকুরে তুলে সেখানে পাট পচানোর চেষ্টা করছেন। কাকিলাখালী গ্রামের কল্লোল দাস জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে পাঠ চাষ করেছেন কিন্তু পানি অভাবে পাট কাটছেন না। সাতবাড়িয়া গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, দুই বিঘা জমির পাট পানির অভাবে কাটছেন না। ওই আনছার দফাদার, অমেদ আলী মোড়ল, কুদ্দুস দফাদার, খোকন সরদার, মঙ্গলকোট গ্রামের মোশারফ হোসেন মোড়ল, গোলাম মোস্তফা মোড়ল, রকি গোলদার ও মজিবর গাজীর মতো অনেক কৃষকই পানির অভাবে পাট পচাতে (জাগ) পারছেন না বলে জানিয়েছেন। কেশবপুর প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষক পাট কেটে ওই জমিতে বোরো আবাদ করে থাকেন। সেজন্য কৃষকরা পাট কাটতে না পেরে হতাশায় পড়েছেন।
×