ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ৪ আগস্ট ২০১৯

রাজশাহীতে জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহীতে জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশু হাট। মহানগরীর সিটি হাটসহ বিভিন্ন উপজেলার হাটগুলো এরই মধ্যে জমে উঠেছে ক্রেতা সমাগমে। ঈদ কাছে চলে আসায় হাটগুলোতে বাইরের পাইকারের উপস্থিতি কমে গেছে। এখন কোরবানির পশু নেয়ার জন্য স্থানীয় ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। রাজশাহী মহানগরীর সিটি বাইপাস হাটও জমে উঠতে শুরু করেছে। আজ রবিবার থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত নিয়মিত পশু হাট বসবে এখানে। এদিকে কোরবানি ঈদ টার্গেট করে মাঝারি ধরনের দেশীয় গরু কিনে নিজস্ব পদ্ধতিতে মোটাতাজা করছেন খামারিরা। গরুর ভাল দাম পাওয়ার আশা করছিলেন তারা। তবে গো-খাদ্যের চড়া দাম আর ভারত থেকে গরু আসায় শেষ পর্যন্ত লাভ নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা। এবার স্থানীয় খামারগুলোতে অতিরিক্ত গরু আছে, তাই কোরবানির জন্য পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না বলে মনে করছে রাজশাহীর প্রাণিসম্পদ বিভাগ। রাজশাহী প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, রাজশাহীতে কোরবানির জন্য গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় চার লাখ ১৫ হাজার। রাজশাহী জেলায় খামার রয়েছে ১৭ হাজার ৭০০টি। এসব খামারে কোরবানির জন্য গরু, মহিষ ও ছাগল-ভেড়া রয়েছে তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫৭৪টি। এ ছাড়াও স্থানীয়ভাবে আরও প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার পশুপালন হচ্ছে মানুষের বাড়িতে। এসব পশু বাজারে এলে কোরবানির জন্য পশু সঙ্কট হবে না। চট্টগ্রামে চাহিদা ৭ লক্ষাধিক স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, পবিত্র ঈদ-উল-আজহা সামনে রেখে মহানগরীতে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে পশু এনে মজুদ করা শুরু হয়েছে। এবার চট্টগ্রামে ৮টি পশুর হাট বসছে। এরমধ্যে ২টি স্থায়ী ও ৬টি অস্থায়ী। অপরদিকে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, এবার ঈদ-উল-আজহায় ৭ লাখের বেশি পশুর চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে নগরী ও জেলার ১৪ উপজেলায় ৭ হাজার ৫০ খামারে ৬ লাখ ১০ হাজার ২১৯ পশু মজুদ রয়েছে। চাহিদার অবশিষ্ট ১ লাখ ১০ হাজার পশু সংগ্রহের মজুত থেকে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চাহিদার পশুর মধ্যে রয়েছে প্রধানত ষাঁড়। এরপরে রয়েছে ছাগল। পরবর্তী স্থানে রয়েছে মহিষ, ভেড়া, উট। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নগরীতে থেকে আড়াই লাখ পশু এসে থাকে। এবারের স্থায়ী পশুর হাট দুটি হচ্ছে সাগরিকা ও বিবির হাটের পশুর হাট। অপরদিকে, অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে সল্টগোলা রেল ক্রসিং হাট, কর্ণফুলী হাট, পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, পোস্তারপাড় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, স্টিলমিল হাট ও কমল মহাজন হাট। এদিকে, শনিবার থেকে স্বল্পসংখ্যায় পশু বেচাকেনাও শুরু হয়েছে বিভিন্ন হাটে। এসব হাটে গরু আসছে নওগাঁ, রাজশাহী, রংপুর, যশোর, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে। এর পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও মহানগরীতে ঈদ-উল-আজহার পশুর আমদানি ঘটে থাকে। পক্ষান্তরে, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পশু আসছে সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমার থেকে। এদিকে, শনিবার দুপুরে দামপাড়া পুলিশ লাইনে কোরবানি পশুরহাটের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সভায় সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমান জানিয়েছেন, মহানগরীর প্রতিটি পশুর হাট এবারই প্রথম ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তিনি জানিয়েছে, ঈদ উপলক্ষে নগরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। প্রতিটি হাটে থাকবে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। জালনোট শনাক্তকরণে মেশিন বসানোর পাশাপাশি মান্টি স্কট সুবিধাও থাকবে। নীলফামারীতে ঘাটতি সাড়ে তিন হাজার স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, ছয় উপজেলায় ৫৮ হাজার ১২০টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বছরের ঈদ-উল-আজহায় কোরবানির পশুর পরিমাণ ছিল ৬১ হাজার ৬৯৯টি। সেই হিসেবে এবার ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৫৭৯টি। জেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোনাক্কা আলী শনিবার সাংবাদিকদের কাছে পশু ঘাটতির বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে এবার খামারি ও গৃহস্থবাড়িতে কোরবানির পশু তৈরি কম হলেও ঈদে এর প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন তিনি। তবে জেলায় এখনও কোরবানির পশুর হাট জমে ওঠেনি। তবে আগামী দুই/তিনদিনের মধ্যে কোরবানির হাটে পুরোদমে কেনাবেচা শুরু হবে। জেলা প্রাণিস¤পদ দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে ২৭ হাজার ৬০টি, ২০১৫ সালে ২৯ হাজার ৩৪০টি এবং ২০১৬ সালে ৩৮ হাজার ৩৭৮টি পশু কোরবানি হলেও ২০১৭ সালে গরু, ছাগল ও ভেড়া মিলে ৬১ হাজার ৬৬৭টি পশু কোরবানি দেয়া হয়। ২০১৮ সালে জেলার ছয় উপজেলায় কোরবানির ঈদে ৬১ হাজার ৬৯৯টি পশু প্রস্তুত ছিল। ২০১৯ সালে প্রস্তুত পশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ১২০টি। গতবারের তুলনায় ৩ হাজার ৫৭৯টি পশু কম রয়েছে। পশু খাদ্যের দাম ও শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ বার বার বন্যা আক্রান্ত হওয়ায় দিন দিন খামারির সংখ্যা কমেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
×