ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কারসাজি করে বাড়ানো হচ্ছে পেঁয়াজ রসুনসহ সব মসলার দাম

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ৩ আগস্ট ২০১৯

কারসাজি করে বাড়ানো  হচ্ছে পেঁয়াজ রসুনসহ  সব মসলার দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোরবানি সামনে রেখে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি রাখলেন না ব্যবসায়ীরা। আর এ কারণেই নিত্যপণ্যের বাজারে এখন সব ধরনের মসলার দাম বেশি। গত কয়েকদিনে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। এছাড়া চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না। বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশী মাছ। এছাড়া ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও কোরবানি সামনে রেখে গরুর সরবরাহ কমে গেছে। ফলে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। শুক্রবার রাজধানীর নিউমার্কেট, ফার্মগেট কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট ও মিরপুর সিটি কর্পোরেশন মার্কেট থেকে দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। মসলার দাম বাড়া প্রসঙ্গে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বাড়ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ কারসাজি করে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার মতো পণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪৫ এবং আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে প্রতিকেজি মোটা রসুন ১৭০-১৮০ এবং ছোট রসুন ১৩০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০-২০০ টাকায়। এদিকে, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, জিরা, এলাচসহ অন্যান্য মসলার দাম নিয়ে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে মসলার আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদেরও ডাকা হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হলে ব্যবসায়ীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কোরবানি সামনে রেখে মসলার দাম বাড়বে না। কিন্তু বাজারে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। বরং একটু একটু করে সব ধরনের মসলার দাম বেড়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থা টিসিবি ট্র্যাক সেলে পেঁয়াজ বিক্রি করবে। ইতোমধ্যে টিসিবি রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করলেও সেখানে পেঁয়াজ রাখা হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছে, ভর্তুকি দিয়ে হলেও দ্রুত ট্র্যাক সেলে পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম শুরু হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় কোরবানি সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে সম্প্রতি সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে গেছে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। বেশি কাঁচা মরিচের দাম। মানভেদে দেড় শ’ থেকে টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। এছাড়া কাঁচা পেঁপে, কাকরোল, বেগুন, ঢেঁড়সসহ সব ধরনের সবজির দাম চড়া। একমাত্র গোল আলু ছাড়া গড়ে ৬০ টাকার নিচে বাজারে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। নিউ মার্কেটের সবজি বিক্রেতা হানিফ ম-ল জনকণ্ঠকে বলেন, এখন বর্র্ষাকাল। ঢাকার বাইরের চারদিকে বন্যার পানিতে সবজি খেত নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি হচ্ছে না। এসব কারণে পাইকারিতে সবজির দাম বেশি। তিনি বলেন, আগের তুলনায় কাওরান বাজারে সবজিবাহী ট্রাক আসা কমে গেছে। তবে পানি নেমে গেলে আবার সবজির দাম কমে আসবে। এছাড়া বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ বেশ বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় দাম কমার কোন আভাস দেখা যাচ্ছে না। মাঝারি সাইজের ইলিশ কিনতে ভোক্তাকে ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশী মাছ। রুই, কাতলা, মৃগেল, সরুপুঁটি, চিংড়িসহ সব ধরনের মাছের দাম বেশি। জাত ও মানভেদে গলদা ও বাগদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে। ক্রেতারা বলছে, এবার সারাবছর মাছের দাম বেশি ছিল। এখন ভরা মৌসুমেও কমছে না ইলিশের দাম।
×