ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চাঁদপুরের দুটি জুট মিলই বন্ধ ॥ বেকার শ্রমিক

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ৩ আগস্ট ২০১৯

 চাঁদপুরের দুটি জুট মিলই বন্ধ ॥ বেকার শ্রমিক

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর, ২ আগস্ট ॥ দেড়-দুইমাস ধরে বন্ধ রয়েছে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার ডব্লিউ রহমান জুট মিলস্ ও স্টার আলকায়েদ জুট মিলস্ লিঃ’র উৎপাদন। এতে মিলের কয়েক শ’ শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তা বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সামনে ঈদ, আদৌ মিল দুটি চালু হবে কি না এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা। ডব্লিউ রহমান জুট মিলের ভাড়াটিয়া সাহারা জুট মিলের প্রোডাকশনের দায়িত্বে থাকা নাহিদ শেখ জানান, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমিকরা পাবে ১২ দিনের মজুরি। গত ২১ জুন সকালে কোন কারণ উল্লেখ না করে নোটিস টানিয়ে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় ভাড়াটিয়া ঢাকা লালমাটিয়ার সাহারা জুট মিল কর্তৃপক্ষ। ডব্লিউ রহমান জুট মিলে পাট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রতিনিধি বিশ্বনাথ কুমার রনি জানান, সাহারা জুট মিলের কাছে আমরা পাট বাবদ ৪৩ লাখ টাকা পাব। তারা বলছে, তাদের ফান্ড নেই। পাট বেপারিদের টাকা মেরে দিয়ে সাহারা জুট মিলের মালিক পক্ষের লোকজন পালিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা বশির মিয়া জানান, প্রকৃত মিল মালিকরা মিল চালালে এ সমস্যা হতো না। অপরদিকে সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার মালিকানাধীন স্টার আল কায়েদ জুট মিলও দেড়মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এ মিলের নোটিস বোর্ডে মহাব্যবস্থাপক স্বাক্ষরিত একটি নোটিস টানিয়ে মিলের উৎপাদন বন্ধ করা হয়। নোটিসে জানানো হয়, মিলের রিপেয়ার্স ও মেনটেন্যান্স কাজের জন্য গত ১ জুলাই থেকে মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্টার আল কায়েদ মিল কর্তৃপক্ষ। মিলটি আগামী ২৫ আগস্ট অর্থাৎ ঈদের পর যথারীতি চালু হবে বলে উল্লেখ করা হয়। ডব্লিউ রহমান জুট মিল ব্যবস্থাপক মাহমুদুল হাসান জানান, দুই বছর চুক্তিতে তাদের মিলটি সাহারা জুট মিল কর্তৃপক্ষকে ভাড়া দেয়া হয়। চুক্তিমতো ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর হতে মিলটি তারা চালাচ্ছে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়নি। অপরদিকে স্টার আল কায়েদ জুট মিলের ব্যবস্থাপক আবদুল মোতালেব জানান, তাদের মিলের কোন সমস্যা নেই। রিপেয়ার কাজ শেষ হলে ২৫ আগস্ট থেকে মিল চলবে। উল্লেখ্য, চাঁদপুরে মাত্র ২টি জুট মিল রয়েছে। এ দুটি মিল থেকে পাটের বস্তা, চট ও সুতলি তৈরি হতো। অধিকাংশ পণ্য পাটের বস্তায় ব্যবহার সরকার বাধ্যতামূলক করায় দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকলগুলো আবারও প্রাণ ফিরে পায়। সে সুবাদে চাঁদপুরের বেসরকারী এ দুটি পাটকলও আবার চালু হয়। কয়েক শ’ নারী-পুরুষ শ্রমিকের পদচারণায় পুনরায় মুখরিত হয় মিল প্রাঙ্গণ। কিন্তু গেল ঈদ-উল-ফিতরের পর থেকে দেড়-দুই মাস মিল দুটি বন্ধ থাকায় সেখানকার পরিবেশ নীরব-নিস্তব্ধ থাকতে দেখা যায়।
×