ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আম্বিয়ার কষ্ট কি দূর হবে না?

প্রকাশিত: ০৮:৫৪, ৩ আগস্ট ২০১৯

 আম্বিয়ার কষ্ট কি দূর হবে না?

৫০ বছরেই আম্বিয়া বেগমকে বার্ধক্য জাপটে ধরেছে। বয়সের অর্ধেকটাই কেটেছে অর্ধাহার-অনাহারে। দুই মেয়ে আর এক ছেলেকে ফেলে স্বামী বারেক মিয়া নিরুদ্দেশ। সেই থেকে টানা ২২ বছর। জীবনযুদ্ধে হেন কাজ নেই যা না করেছেন। শরীর এখন আর সায় দেয় না। নুয়ে পড়েছেন। কখনও ভিক্ষা করেছেন। কখনও কামলা দিয়েছেন। মাছের আড়তে মাছ কুড়িয়েছেন। চিংড়ির মাথা ছিঁড়ে জীবিকার যোগান দিয়েছেন। অদম্য এ নারী কখনও দমেননি। স্বপ্ন দেখতেন সন্তানের মুখে তাকিয়ে। সফলতাও পেয়েছেন কখনও। সঞ্চিত কিছু টাকায় দুই মেয়ে তহমিনা ও আমেনাকে পাত্রস্থ করেছেন। একমাত্র ছেলে রিপন এখন শক্ত-সমর্থ যুবক। তারও শরীরটাই পুঁজি। নিজের সংসার সামলে মাকে যোগান দেয় শ্রমজীবীর কাজ করে। আম্বিয়ার জীবনের যুদ্ধ যেন চলছেই। এখনও থামেনি। ঘাম ঝরানোর জীবনে একটি দোকান দেয়ার স্বপ্নে বিভোর মানুষটি। নিজেই ঘরটি নির্মাণ করছেন। টানা ১৭ দিন। নির্মাণকারীও আম্বিয়া। যেন স্বতন্ত্র যুদ্ধ। অন্যের সঙ্গে মেলানো যায় না। মহিপুর মৎস্য বন্দরের যেখানে পুলিশী থানা তার সামনেই বেড়িবাঁধের স্লোপে একটি কাঠের স্থাপনা বানাচ্ছেন আম্বিয়া। অসহনীয় গরমে এ নারী হাতুড়ি দিয়ে কাঠ লাগাচ্ছেন, একটির সঙ্গে আরেকটি। লড়াকু মানসিকতার মানুষটি দৌড়ের জীবনে একটু বসে বসে দোকানির আদল খুঁজে ফিরছেন। সেই আশার আলোয় পথ দেখছেন মানুষটি। আম্বিয়া জানান, তারও সংসার আছিল, ছিল স্বামী। আজ তা কষ্টের অতীত। ২২ বছরের পেছন নিয়ে আর ঘাটতে চায় না সে। মেয়েদের পাত্রস্থ করার পরে একমাত্র ছেলে রিপনও বিয়ে করে সংসারী। ছেলে-বউ সাথী বেগম ও এক নাতি সাজিদকে নিয়ে নতুন স্বপ্ন এ মানুষটির। ছেলের আয়েও চলছে না। এ হতদরিদ্র, অসহায় মানুষটির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ছায়াতলেও একটু ঠাঁই হয়নি। ভিজিডির চালও জোটেনি। জোটেনি অন্য কোন ভাতা। -মেজবাহউদ্দিন মাননু, কলাপাড়া থেকে
×