ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সেই জাবালে নূর পরিবহনের বাস এখনও চলছে

প্রকাশিত: ০৮:২৭, ৩ আগস্ট ২০১৯

  সেই জাবালে নূর পরিবহনের  বাস এখনও চলছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় আলোচিত সেই জাবালে নূর পরিবহনের বাস এখনও চলছে। ঘাতক বাস দুটির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হলেও কোম্পানিটির বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। তবে কোম্পানিটির সবক’টি বাসের রুট পারমিট বাতিলের জন্য আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিতে (আরটিসি) সুপারিশ করেছে সংস্থাটির এ সংক্রান্ত সাব কমিটি। কিন্তু সেই সুপারিশ এখনও আটকে আছে। বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে পরিবহনটি নিষিদ্ধের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি থাকলেও আগের মতোই চলছে জাবালে নূরের বাস। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীব নিহত হওয়ার পরপরই ‘নিরাপদ সড়ক’ দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন শিক্ষার্থীরা। ওই সময় শিক্ষার্থীদের টানা কয়েকদিনের বিক্ষোভে কার্যত অচল হয়ে পড়ে ঢাকা। আন্দোলনের মুখে সরকার ওই সময় জাবালে নূরের দুটি বাসের রুট পারমিট বাতিল করে। এরপর পরিবহনটির নিবন্ধনও স্থগিত করা হয়। পরিবহনটি ঢাকা মহানগরীর ১৮৪নং রুট বসিলা থেকে আব্দুল্লাহপুরে চলাচল করত। বিআরটিএর সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানী বলেন, ‘আরটিসিরি (আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি) অধীনে একটি সাব কমিটি রয়েছে। ওই কমিটি জাবালে নূরের রুট পারমিট বাতিলের জন্য সুপারিশ করেছে। এখনও বাতিল করা হয়নি। আগামী ৪ আগস্ট কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। যে কারণে পরিবহনটি এখনও চলাচল করছে। আর গত বছরের দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট দুটি বাসের রুট পারমিট বালিত করা হয়েছে।’ গত ২৯ জুলাই নগরীর প্রগতি সরণি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জাবালে নূরের কয়েকটি বাস সড়কে চলাচল করছে। চালকদের দাবি, বেকার জীবন থেকে রক্ষা পেতেই তারা ‘বসে’ না থেকে বাস নিয়ে সড়কে নেমেছেন। এর বেশি কেউ কথা বলতে রাজি হননি। তবে পরিবহন কোম্পানিটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের দাবি, জাবালে নূরের কোন বাস চলাচল করছে না। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের কোন বাস রাস্তায় চলে না। সুপ্রভাতের ঘটনার পর আমাদের বাসগুলোও রাস্তায় নামানো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নামালেই পথে পথে ধরে, হয়রানি করে। সে জন্য আমরা বন্ধ রেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ২টি কোম্পানি। একটি জাবালে নূর-১; অন্যটি জাবালে নূর-২। জাবালে নূর-১-এ ৫০টি এবং জাবালে নূর-২-এ ৪০টি বাস চলাচলের অনুমোদন ছিল।’ জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি বর্তমানে অসুস্থ। এখন পরিবহন নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামাচ্ছি না। আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। এই কোম্পানিতে ৬০-৭০ জন মালিকের বাস রয়েছে। তারা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।’ এদিকে ওই ঘটনার পর পরিবহন দুটির মালিক শাহাদাত হোসেন আকন্দ, চালক মাসুম বিল্লাহ, হেলপার মোঃ০ এনায়েত হোসেন, চালক মোঃ জোবায়ের সুমন, অন্য বাসমালিক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও হেলপার মোঃ আসাদ কাজীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এই আসামিদের মধ্যে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও মোঃ আসাদ কাজী পলাতক।
×