ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৯০ ভাগ উইঘুর মুক্তি পেয়েছেন ॥ চীন

প্রকাশিত: ০৮:২৩, ৩ আগস্ট ২০১৯

 ৯০ ভাগ উইঘুর মুক্তি পেয়েছেন ॥ চীন

যখন সংবাদটি প্রকাশ পায় যে চীনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বলছেন, জিনজিয়াংয়ের কুখ্যাত আটক কেন্দ্রগুলোতে ৯০ শতাংশ উইঘুরকে মুক্তি দেয়া হয়েছে তখন নুরগুল সাউত ফোনে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন। খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের। উইঘুর সম্প্রদায়ের ক্যানবেরাভিত্তিক নেতা সাউত বলেন, আমার হোয়াটসএ্যাপ, আমার সিগন্যাল, আমার ফেসবুক প্রতিটিতে এদের পোস্ট আমার পিছু নিচ্ছে। প্রত্যেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করছেন। তারা বলছেন, ৯০ শতাংশ উইঘুরকে মুক্তি দেয়া হলে আমার আত্মীয় স্বজনরা এখন কোথায়? কোথায় আমার পরিবার ও সুহৃদরা। এদের কাউকেই তো সম্প্রদায়ে বা কমিউনিটিতে দেখতে পাচ্ছি না। ৯০ শতাংশ উইঘুরকে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে যারা সংবাদ প্রকাশ করছেন তারা কারা? উইঘুর জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বাস জিনজিয়াংয়ের প্রত্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বুধবার এক ব্রিফিংয়ের সময় বিবৃতিটি প্রদান করেন। বিপুল সংখ্যক উইঘুরকে গত কয়েক বছর ধরে এ আটক কেন্দ্রগুলোতে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু চীন কর্তৃপক্ষ বারবার বলে আসছে, এ কেন্দ্রগুলো বৃত্তিমূলক শিক্ষার স্থাপনা এবং তাদের সম্পর্কে একটা প্রচার চালিয়ে এসেছে। এখানে সাংবাদিকদের পরিদর্শনে নেয়া হয় এবং বাসিন্দাদের পাঠ দেয়ার, সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণের ও কারখানায় কাজ করার ভিডিও চিত্র ধারণ এবং প্রকাশ করা হয়। জিনজিয়াং সরকারের ভাইস চেয়ারম্যান আলকেন তুনিয়াজ বলেন, আটক কেন্দ্রগুলোর বেশির ভাগ বাসিন্দাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে যদিও ঠিক কতজনকে আটক কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল তা জানাতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি পরিবর্তনশীল। তারা এখানে আসছে, চলেও যাচ্ছে। আঞ্চলিক সরকারের চেয়ারম্যান সোহরাত জাকির বলেছেন, যে ৯০ শতাংশ লোকদের মুক্তি দেয়া হয়েছে তারা বেরিয়ে গিয়ে ভাল জব করছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছে। তার ব্রিফিংয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বিদেশে আন্দোলনরত উইঘুর সম্প্রদায়। এদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রায় ৩ হাজার উইঘুর রয়েছে। তারা ওই তথ্যের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ক্রোধ প্রকাশ করেছে। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বেশিরভাগ উইঘুর সাউতকে বলেছে। তারা প্রত্যেক পরিবারের অন্তত একজন সদস্যকে হারিয়েছে এবং এক ভীতির মধ্যে রয়েছে যে, তাদের পুরো পরিবারের সদস্যদের আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। সাউত বলেন, বিষয়টা প্রচ- দুঃখজনক। তিনি মনে করেন, তার প্রায় ৫০ জন আত্মীয়-স্বজনকে জিনজিয়াংয়ে আটক কেন্দ্রগুলোতে আটকে রাখা হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই পরবর্তীতে কি ঘটছে তা ভেবে উদ্বিগ্ন। আমাদের সম্প্রদায়ের জন্য এ চরম পরিস্থিতি পেটে লাথি মারার মতোই। এতে আমরা ক্ষুব্ধ ও বিপর্যস্ত। যারা নিখোঁজ রয়েছে স্বজনরা তাদের ছবি দেখাচ্ছে সামাজিক মিডিয়ায়। সিডনিতে অবস্থানরত ফাতিমাহ আবদুল গফুর ফেসবুকে সংবাদটি দেখেছেন এবং অত্যন্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই প্রায় ১ বছরের বেশি সময় ধরে। তার বিশ্বাস, অন্তত তার ভাই ও বাবা আটক কেন্দ্রে রয়েছেন। প্রত্যেকেই অত্যন্ত নেতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। তারা ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন এবং বার্তায় বলেছেন, তা মোটেই সত্য নয়। যদি সত্য হয় তাহলে আমার আত্মীয়-স্বজন কোথায়। আমার বাবা এখনও নিখোঁজ। আমার বন্ধুরা এখনও নিখোঁজ রয়েছে। ইস্তানবুলে বসবাসরত অস্ট্রেলীয় উইঘুর আর্সলান মিজিত হিদায়েত বলেন, সংবাদটি সত্য হতে পারে না। হিদায়েত গত নবেম্বরে তার শ্বশুর বিশিষ্ট উইঘুর কমেডিয়ান আদিল মিজিতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
×