ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলীয় উপকূলের অর্ধেক জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকাশিত: ০৭:৪৫, ৩ আগস্ট ২০১৯

 অস্ট্রেলীয় উপকূলের অর্ধেক  জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম আবহাওয়ায় গত সাত বছরে অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের জলজ জীববৈচিত্র্যের প্রায় ৪৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচন্ড দাবদাহ, বন্যা ও খরায় এ ক্ষতি হয় বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। সিএসআইআরও এই গবেষণাটি পরিচালনা করে। জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাবে ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া উপকূলের প্রায় আট হাজার কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিছু কিছু জায়গায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সামুদ্রিক দাবদাহ, ব্যাপক বৃষ্টিপাত, কোরালের ওপর সাইক্লোন ও খরার প্রভাব, সামুদ্রিক গুল্মাদি, ম্যানগ্রোভ ও সামুদ্রিক ঘাসের ওপর বিখ্যাত সব বিজ্ঞানীর বিভিন্ন ধরনের গবেষণা বিশ্লেষণ করে এই ফল পাওয়া গেছে। অস্ট্রেলিয়ার সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হিসেবে এটাকে দেখা হচ্ছে। এই গবেষণায় উঠে এসেছে, মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জলবায়ুর বড় ধরনের এসব ঘটনা ঘটছে। উদাহরণস্বরূপ, দাবদাহের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে এবং এটাতে খাপ খাওয়াতে প্রাণিকূল খুব সময়ই পাচ্ছে। গবেষণা দলের প্রধান রাস ব্যাবকক বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে সারাদেশ জুড়ে যারা কাজ করেছেন, তার প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নথিভুক্তির দারুণ কাজ করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কতটি জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে সেটা দেখা হয়, তবে এটা সত্যিই সমর্থন করবে যে, শুধু গ্রেট বেরিয়ার রিফ (প্রবাল প্রাচীর) নিয়ে আমাদের চিন্তা নয়। আমাদের চিন্তা পুরো দেশ নিয়ে।’ বিজ্ঞানীদের একটি দল জলবায়ু পরিবর্তনের কয়েকটি ঘটনা বিশ্লেষণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে ২০১১ সালে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় সামুদ্রিক দাবদাহ, সাইক্লোন ইয়াসি, গ্রেট বেরিয়ার রিফের পর পর দুবার রং পরিবর্তন হওয়া এবং ২০১৫-২০১৬ সালে কার্পেন্টারিয়া উপসাগরে ম্যানগ্রোভ কমে যাওয়া অন্যতম। এছাড়া এসব ঘটনার দীর্ঘমেয়াদী কি প্রভাব হতে পারে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এতে দেখা যায়, কিছু কিছু এলাকায় জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। ব্যাবকক বলেন, ‘আমাদের কিছু মডেলে দেখা গেছে, এ ধরনের প্রভাব থেকে উদ্ধার পেতে ১৫ বছর লাগতে পারে। তবে এ সময়ের মধ্যে আরও কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকার গুল্মাদির আচ্ছাদন ২০১১ সালে ধ্বংসের পর আর ফিরে আসেনি। ব্যাবকক বলেন, ‘এসব ঘটনার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব অন্যান্য প্রজাতিকে বিপন্ন করে। কারণ যেসব বড় বড় প্রাণী সামুদ্রিক ঘাস খেয়ে জীবন ধারণ করে, সেগুলো পুরো সামুদ্রিক সম্প্রদায়কে পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যেতে পারে।’ সিএসআইআরও গবেষণায় যেসব গবেষকের কাজকে উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের অন্যতম হলেন প্রবাল প্রাচীর বিজ্ঞানী টেরি হিউজেস। তিনি বলেন, শুধু প্রবাল প্রাচীর নয়, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যে সম্পর্কে মারাত্মক বিষয় উঠে এসেছে গবেষণায়। শুধু এই প্রবাল প্রাচীরই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে। তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য, যেমন সামুদ্রিক গুল্মাদি, সামুদ্রিক ঘাস, ম্যানগ্রোভও ব্যাপক বিপদের মুখে।’ -গার্ডিয়ান
×