ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গোয়ের্নিকা ও ম্যাসাকার ইন কোরিয়া

প্রকাশিত: ১২:২৫, ২ আগস্ট ২০১৯

গোয়ের্নিকা ও ম্যাসাকার ইন কোরিয়া

পাবলো পিকাসো (Pablo Picasso)। এই বরেণ্যশিল্পী ১৮৮১ সালের ২৫ অক্টোবর স্পেনের মালাগায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ডন জোসে রুইজি ব্লাসকো ও মায়ের নাম মারিয়া পিকাসো লোপেজ। তিনি ছিলেন বিখ্যাত ¯প্যানিশ চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, প্রিন্টমেকার, মৃৎশিল্পী, মঞ্চ নকশাকারী, কবি এবং নাট্যকার। এক কথায় বহুমুখী প্রতিভার এক সমন্বয় ঘটেছিল পাবলো পিকাসোর চরিত্রে। বিংশ শতাব্দীর একজন বিখ্যাত এবং অত্যন্ত প্রভাবশালী চিত্রশিল্পী। পাবলো পিকাসো যুদ্ধে নারকীয়তার বিরুদ্ধে বেশকিছু ছবি এঁকেছেন। তারমধ্যে গোয়ের্নিকা ও ম্যাসাকার ইন কোরিয়া অন্যতম। দারুণ মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছে শিল্পী এ দুটো চিত্রকর্মে। প্রতিবাদের ভাষা যে কত কঠিন হতে পারে এ দুটো চিত্রকর্ম প্রদর্শনের পর বুঝা যায়। পিকাসোর জনপ্রিয়তা হুহু করে বেড়ে যায়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগে বিবেকবান মানুষের। একটি হলো (গোয়ের্নিকা) স্পেনের গের্নিকা শহরে বোমাবর্ষণ নিয়ে নাজ্জি বাহিনী কর্তৃক পরের দিনের প্রতিবাদ আর উত্তর কোরিয়ার শিচন শহরে আমেরিকার নেতৃত্বে গণহত্যা নিয়ে। যার চিত্রকর্মটির নাম ছিল ম্যাসাকার ইন কোরিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তখন। ১৯৩৮ সালের দিকে স্পেনে গৃহযুদ্ধ চলছিল। এ সুযোগে স্পেনের গের্নিকায় (শহর) বোমাবর্ষণ করে জার্মান আর ইতালির সম্মিলিত যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয় এতে। পিকাসো আঁকলেন। চিত্রকর্মের মাধ্যমে প্রতিবাদ করলেন। গের্নিকা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতি স্বরূপ, যুদ্ধ বিয়োগান্তক এবং বিশেষ করে নিরপরাধ বেসামরিক জনগণের উপর বর্বরতা যন্ত্রণা প্রকাশ করে। এই চিত্রকর্মটি একটি যুদ্ধবিরোধী প্রতীক, এবং শান্তির প্রতিমূর্তি হয়ে উঠছে। গের্নিকা চিত্রকর্মটি সমাপ্তির প্রদর্শন করা হয় এবং এটি দ্রুত বিখ্যাত ও ব্যাপকভাবে প্রশংসা অর্জন করে। সফরের মাধ্যমে এটি প্রদর্শন করায় ¯েপনীয় গৃহযুদ্ধের প্রতি বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করতে সাহায্য করে। কোরীয় যুদ্ধের ভয়াবহতার চিত্র সুনিপুণভাবে পিকাসো তুলে ধরেছেন এখানে। তিনি যেমন ¯েপনের গৃহযুদ্ধের গের্নিকা মন কেঁদেছে তেমনি ১৯৫০ সালের উত্তর কোরিয়ার শিচন শহরের গণহত্যা নিয়ে। যার নেতৃত্বে ছিল আমেরিকা। আমেরিকার সমালোচনা করে প্রতিবাদস্বরূপ ম্যাসাকার ইন কোরিয়া (আঁকলেন ১৯৫১ সালে। গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন পিকাসো তুলির মাধ্যমে। মানবতার পক্ষে তুলি ধরলেন। বিশ্ববিবেককে জাগিয়ে তুলনেন। গের্নিকা’র পর এটি যুদ্ধের প্রতিবাদের মাধ্যম ছিল পিকাসোর। ক্রন্দনরত মহিলা সংক্রান্ত (ঞযব ডববঢ়রহম ডড়সধহ)বেশ কিছু ছবি এঁকেছেন পিকাসো। ট্রাজেডির চলমান ছবির সিরিজ ছিল। তারই একটি নান্দনিক চিত্রকর্ম। ক্রন্দনরত মহিলার অনুপম ছবি। যা গের্নিকার পরে এঁকেছিলেন। অসহায়ত্ব বা ২য় বিশ্বযুদ্ধের নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ ছিল ১৯৩৭ সালে পিকাসোর এ চিত্রকর্মে। ১৯৭৩ সালের ৮ এপ্রিল ফ্রান্সের মৌগিন্সে মারা যান পাবলো পিকাসো।
×