ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দিলু রোডে বিয়ের আসরে ঢুকে কনের বাবাকে খুন করল বখাটে রকি

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২ আগস্ট ২০১৯

দিলু রোডে বিয়ের আসরে ঢুকে কনের বাবাকে খুন করল বখাটে রকি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মগবাজারের দিলু রোডে একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের আসরে ঢুকে কনের বাবা তুলা মিয়াকে (৫৫) এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে সজীব আহমেদ রকি (২৩) নামে এক বখাটে। এ সময় কনের মা ফিরোজা বেগমও (৩০) ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা ওই বখাটে যুবককে ধরে গণধোলাই দিয়ে পরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। হাতিরঝিল থানার ওসি আবদুর রশিদ জানান, কনের মা ফিরোজা বেগমকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত রকির বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার পাঁচগাছিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল বারেক। রকি দিলু রোডের বাটার গলির একটি মেসে থাকত, একটি গ্যারেজে কাজ করত। বৃহস্পতিবার প্রিয়াংকা সুটিং হাউস কমিউনিটি সেন্টারে তুলা মিয়ার মেয়ে স্বপ্না আক্তার ফাতেমার (১৮) বিয়ের আয়োজন চলছিল। দুপুরে বর ও কনের পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন মিলে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। হঠাৎ বিয়ের আসরে ঢুকে হট্টগোল সৃষ্টি করে অভিযুক্ত রকি। একপর্যায়ে কনের বাবা তুলা মিয়াকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। স্বামীকে বাঁচাতে কনের মা ফিরোজ বেগম এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে সে। এদের উদ্ধার করে প্রথমে পার্শ্ববর্তী ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তুলা মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। ফিরোজা বেগমকে পরে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ঘাতক রকিকে ধরে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ জনতার কবল থেকে ঘাতককে উদ্ধার করে, তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে এসে স্বপ্নার সঙ্গে বরের বিয়ের ব্যবস্থা করেন। তেজগাঁও বিভাগের ডিসি আনিসুর রহমান জানান, বখাটে রকি নিজেকে তুলা মিয়ার মেয়ের প্রেমিক দাবি করে। মাদকের মামলায় সাজা খেটে কিছুদিন আগে ছাড়া পাওয়ার পর তুলা মিয়ার মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার কথা জানতে পারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সে ধারালো চাকু নিয়ে ওই কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকে তুলা মিয়া ও তার স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কোপায়। থানার এসআই মোঃ রমজান জানান, কনের বাবা তুলার মিয়ার বিকেলে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়। ওসি আব্দুর রশিদ জানান, এটা হতে পারে একপক্ষের প্রেম। রকি মেয়েটিকে হয়ত বিয়ে করতে চাইতো। মেয়ের পরিবারের এতে মত ছিল না। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই রকি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালায়। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। দিলু রোডের শেষ মাথায় প্রিয়াংকা কমিউনিটির পাশে চার-পাঁচটা টিনশেড বাড়ি। সেখানে একটি টিনশেড ঘরে সপরিবার পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন তুলা মিয়া। তিনি ওই টিনশেড রুমগুলোর কেয়ারটেকার ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্বপ্না ফিরোজার আগের ঘরের সন্তান। সুনীল নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুপুর পৌনে একটার দিকে কমিউনিটি সেন্টারের দোতলায় কনেকে সাজানো হচ্ছিল। এ সময় রকি নামে ওই যুবক কমিউনিটি সেন্টারে ঢোকে। রান্নাঘরে কনের বাবা তুলা মিয়াকে দেখেই অভিযুক্ত রকি তার পকেটে থাকা ধারালো ছুরি বের করে তুলা মিয়াকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তুলা মিয়ার ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকারে তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম এগিয়ে আসেন। অভিযুক্ত রকি ফিরোজা বেগমকেও ছুরিকাঘাত করে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা রকিকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেয়।
×