ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য সবাই রাষ্ট্রের চাকরিজীবী

প্রকাশিত: ১১:০৩, ১ আগস্ট ২০১৯

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য সবাই রাষ্ট্রের চাকরিজীবী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি এক নম্বর ফেরিঘাটে যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডলের অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি না ছাড়ায় স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের শুনানিকালে আদালত ভিভিআইপি এবং ভিআইপি প্রটোকলের বিষয়ে বলেছে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ ভিভিআইপি বা ভিআইপি নন, বাকি সবাই রাষ্ট্রের চাকরিজীবী। একই সঙ্গে এ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। ঘটনার তদন্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে উচ্চ আদালতের তলবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোঃ গোলাম ফারুক হাজির না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। তাকে আজ বৃহস্পতিবার ফের তলব করা হয়েছে। বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ ভিভিআইপি বা ভিআইপি নন, বাকি সবাই রাষ্ট্রের চাকরিজীবী। তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় করা রিটের শুনানিতে আদালত এমন মন্তব্য করেছে। একই সঙ্গে তিন ঘণ্টা ফেরির অপেক্ষায় বসে থাকায় এ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্টে। জনস্বার্থে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মোঃ জহিরুদ্দিন লিমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট এ্যান্ড পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যান সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী মোঃ জহিরুদ্দিন লিমন হাইকোর্টে মঙ্গলবার রিট আবেদনটি করেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি এক নম্বর ফেরিঘাটে সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুুস সবুর ম-লের গাড়ির অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি বসে থাকায় ঘাটে আটকে পড়া এ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যু হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিতাসের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। উল্লেখ্য, নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র তিতাস ঘোষ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনার একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকায় ভাড়া করা একটি আইসিইউ সংবলিত এ্যাম্বুুলেন্সে গত বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশে রওনা দেন পরিবারের লোকজন। রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটের মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় এ্যাম্বুুলেন্সটি। তখন কুমিল্লা নামে ফেরিটি ঘাটে যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর ম-ল পিরোজপুর থেকে ঢাকা যাবেন বলে ওই ফেরিকে অপেক্ষা করতে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়। তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে এ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে এ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় তিতাস। এ ঘটনা তদন্তে সোমবার তিনটি কমিটি গঠন করা হয়।
×