ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাস ঐতিহ্যের এ্যাশেজ

প্রকাশিত: ১২:০৮, ৩১ জুলাই ২০১৯

ইতিহাস ঐতিহ্যের এ্যাশেজ

বৃহস্পতিবার এজবাস্টন টেস্ট দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে এবারের এ্যাশেজ। ছোট্ট একটা ট্রফির মাঝে কিছু ছাই-ভস্ম। ক্রিকেটে এত ছোট ট্রফি বোধহয় আর নেই! অথচ ছাইয়ে ভরা এই স্মারকের জন্য কুলিন দুই সদস্য ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার সে কী লড়াই। দেশ দুটির অনেক গ্রেট ক্রিকেটারও বলে থাকেন তাদের কাছে এই এটি বিশ্বকাপের চেয়ে বেশি কিছু! ২০১৭ সালের আগের এ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে পাঁচ টেস্টের সিরিজ ৪-০’ ব্যবধানে হেরেছিল ইংল্যান্ড। এবার ঘরের মাটিতে তারা নামছে প্রথমবারের মতো ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়নের তকমা মাথায় নিয়ে। জো রুটের দল তারকায় ঠাসা। অন্যদিকে গত এ্যাশেজ আর এবারের এ্যাশেজের মাঝে অস্ট্রেলিয়া দলে ঘটে গেছে অনেক ঘটনা। সবচেয়ে বড় ঘটনা এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দুই তারকা স্টিভেন স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নার ফিরলেও ওয়ানডে বিশ্বকাপ ধরে রাখতে পারেনি তারা। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই টিম পেইনের নেতৃত্বে শুরু হচ্ছে ঐতিহ্যের এ্যাশেজ ধরে রাখার মিশন...। ইংরেজী এ্যাশ-এর বহুবচন থেকে হয়েছে এ্যাশেজ, পরিষ্কার বাংলায় যার অর্থ ছাই বা ছাই-ভস্ম। প্রশ্ন ছাই-ভস্মের জন্য কেন এ লড়াই? ক্রিকেট পাগাল অগণিত মানুষের অনন্ত জিজ্ঞাসা। জানতে ফিরে যেতে হবে ১৩১ বছর পূর্বে। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৪৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। নিউইয়র্কের সেন্ট জর্জ ক্লাব গ্রাউন্ডে সে ম্যাচে কানাডা ২৩ রানে হারিয়েছিল ইউএসএকে। মনে করা হয় সেটিই ছিল আন অফিসিয়ালি পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। আর অফিসিয়ালি প্রথম টেস্ট হয়েছিল ১৮৭৭ সালের ২৫ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার মোলবোর্নে। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে অস্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে এবং দ্বিতীয়টিতে ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়লাভ করলে (১-১) এ নির্ধারিত হয়েছিল ফলাফল। তারও দুই বছর পর ১৮৮২ সালের আগস্টে একমাত্র টেস্টটি খেলতে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমায় অস্ট্রেলিয়া। ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত সে ম্যাচের সঙ্গেই জড়িয়ে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহাসিক ‘এ্যাশেজ স্মৃতি।’ অতি সংক্ষেপে বলতে গেলে, তিন দিনে সমাপ্ত ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ড মাত্র ৭ রানে হেরে গেলে ক্ষুব্ধ ইংলিশ দর্শকরা মাঠে প্রবেশ করে ‘ক্রিকেট বেল’ এ (তর্কসাপেক্ষে স্ট্যাম্পে) আগুন ধরিয়ে দেয়। যার ছাই বা ভস্মকে আবৃত করে পরবর্তী ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ধারাবাহিক টেস্ট লড়াইয়ের জন্য ‘ট্রফি’ তৈরি করা হয়। এটিই বেশি প্রচলিত। অবশ্য সংবাদ মাধ্যমে এ নিয়ে আরও অনেক ভিন্ন মত আর ভিন্ন কাহিনীও প্রচলিত আছে! ইতিহাসের নবম সেই টেস্টের পর ক্রিকেটের কূলিন এ দু’দেশের মধ্যেÑ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যের এ্যাশেজ টেস্ট সিরিজ। এ্যাশেজ তাই মোটেই আর দশটা সিরিজ বা টেস্ট লড়াইয়ের মতো নয়। যার সঙ্গে জড়িয়ে ক্রিকেটের জন্মদাতা কুলিন ইংল্যান্ড ও আভিজাত্যের অস্ট্রেলিয়ার মান-সম্মান। পারিপার্শ্বিক অবস্থা যাই হোক, এই লড়াই ঘিরে জেগে ওঠে দু’দেশের ক্রীড়াঙ্গন। এক শিশি ছাই। এ নিয়ে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ধুন্দুমার ক্রিকেট যুদ্ধ। কালের বিবর্তনে ছাই নিয়ে সেই যুদ্ধই এখন ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি ঐতিহ্য। ‘ছাই’ যেন একটি সম্মান, একটি মর্যাদা। এই মর্যাদার লড়াই শুধু সীমাবদ্ধ অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মধ্যেই। এই গৌরবে ভাগ বসানোর অধিকার পৃথিবীর আর কারও নেই। ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজকে কেনই বা ‘এ্যাশেজ সিরিজ’ বলা হয়? আসুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেয়া যাক তার কারণ এবং ইতিহাস। ১৮৮২ আগস্টে একমাত্র সেই টেস্টে ওভালে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া। সেবার টেস্ট ম্যাচের সময় ছিল তিন দিনের; কিন্তু দ্বিতীয় দিনই শেষ হয়ে যায় ম্যাচটি। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক টেস্টটি মাত্র ৭ রানের ব্যবধানে জিতে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ওই সময় ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংলিশদের হারনো ছিল রীতিমত স্বপ্নের বিষয়। আর ইংলিশরা তো কল্পনাই করতে পারেনি, ঘরের মাঠে এভাবে তারা হেরে যেতে পারে। দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের এমন হারে স্বাগতিকদের ক্রিকেটের মৃত্যু তখনই দেখে ফেলেছিল সে দেশের ক্রিকেটবোদ্ধা ও গণমাধ্যমগুলো। ওই সময়কার সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা দ্য স্পোর্টিং টাইমসে বেশ বড়সড়ভাবে একটি রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়। যেখানে লেখা হয়, ‘ইংল্যান্ড ক্রিকেটের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে গেল। এখন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের অস্তিত্ব বলতে শুধু ‘ছাই’। আর সেই ‘ছাই’ সঙ্গে নিয়ে আনন্দ করতে করতে দেশে ফিরে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।’ মূলত তখন থেকে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজের নামকরণ হয় ‘এ্যাশেজ’। পরবর্তী বছর ইংল্যান্ড যখন অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল টেস্ট সিরিজ খেলার জন্য, তখন ইংলিশ মিডিয়াগুলো লিখেছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়া গিয়েছে সেই এ্যাশেজ পুনরুদ্ধারের জন্য। সেই থেকেই ‘এ্যাশেজ’ জয় কিংবা পূনরুদ্ধারই চলে আসছে। ইংরেজী শব্দ এ্যাশেজের বাংলা অর্থ হলো ‘ছাই’। শোয়া শ’ বছরের বেশি সময় আগ থেকে এখনও এ্যাশেজ নামে টেস্ট সিরিজ খেলছে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া। যদি বাংলা অর্থটি ব্যবহার করা হয় তবে বলতে হবে ‘ছাই’ জয়ের লড়াইয়ে আবারও যুদ্ধের ময়দানে নামছে ইংলিশ ও অসি খেলোয়াড়রা। ১ হাজার ৮৭৭ সালের ১৫ মার্চ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বর্তমানে ‘টেস্ট’ নামে পরিচিত লঙ্গার ভার্সনের ক্রিকেটে প্রথম মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। যা ছিল ইতিহাসের প্রথম টেস্ট। ওই সময় ধরাবাধা কোন নিয়ম না থাকায় ‘যতক্ষণ বা যতসময় বা যতদিন’ খেলা যায় এমন চুক্তিতে টেস্টটি খেলতে নামে দু’দল। তবে অনির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও চারদিন খেলার পর ম্যাচের নিষ্পত্তি ঘটায় ওই সময়কার খেলোয়াড়রা। ১৫ মার্চ শুরু হওয়া টেস্টটি শেষ হয় ১৯ মার্চ। মাঝে একদিন অর্থাৎ ১৮ মার্চ বিশ্রাম নেয় তারা। ইতিহাসের প্রথম টেস্টটি ৪৫ রানে জিতে বড় ফরম্যাটে যাত্রা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। ওই অনির্ধারিত সময়ের টেস্ট খেলার পর যেন আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের। সেই সুবাদে ১৮৮১ সালের মাঝমাঝি সময় চার ম্যাচের সিরিজ খেলার সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড। তাতেই ব্যাপকভাবে প্রসার পেয়ে যায় টেস্ট ক্রিকেট। নিজেদের মাঠে চার ম্যাচের ওই অনির্ধারিত সময়ের টেস্ট সিরিজটি ২-০ ব্যবধানে জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ১৮৮২ সালে টেস্ট নিয়ে নতুন নিয়ম চালু করে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। অনির্ধারিত সময়ের টেস্ট নীতি বাদ দিয়ে তিন দিনের ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। সেই সুবাধে ওভালে ১৮৮২ সালের ২৮ আগস্ট তিন দিনের এক ম্যাচের সিরিজ খেলতে নামে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দুই দিনে নিষ্পত্তি হয়ে যায় ম্যাচটি। পরের সিরিজটি অনুষ্ঠিত হয় অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। তিন ম্যাচের ওই সিরিজটি ‘এ্যাশেজ’ নামে পরিচিত লাভ করে। আর ১৮৮২ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে প্রথম ‘এ্যাশেজ’ নামে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ লড়াই শুরু করে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ২-১ ব্যবধানে প্রথম ‘এ্যাশেজ’ নামে টেস্ট সিরিজটি জিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয় ইংলিশরা। তাই বলা যায়, ১৮৮২ সালের শেষ দিকে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ‘এ্যাশেজ’ সিরিজ। ২০১৭-২০১৮ পর্যন্ত মোট ৬৯টি ‘এ্যাশেজ’ সিরিজে মুখোমুখি হয়ে অস্ট্রেলিয়া ৩৩ আর ইংল্যান্ড ৩২টি করে সিরিজ জিতেছে। আর ৫টি সিরিজে জয় বা হারের স্বাদ পায়নি কোন দলই। ক্রিকেটের সবচেয়ে আদি দ্বৈরথ এ্যাশেজ যুগে যুগে জন্ম দিয়েছে অসংখ্য গল্পগাথারও। অল্পতে তারই কিছু দেখে নেয়া যাক। এক. ১৮৮২-৮৩ আসর থেকে এ্যাশেজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলেও মর্যাদাপূর্ণ এই দ্বৈরথের শুরু একেবারে ইতিহাসের প্রথম টেস্ট থেকেই। ১৮৭৭ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় ৪৫ রানে। ঠিক ১০০ বছর পূর্তিতে একই মাঠে অনুষ্ঠিত ৪৯তম এ্যাশেজের ম্যাচের ফলাফল? অস্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে জয়ী! দুই. বিপক্ষ দল ফলোঅনে পড়লে অস্ট্রেলিয়া অনেক সময়ই তাদের আবার ব্যাটিংয়ে পাঠায় না। আভিজাত্য এবং ক্রিকেটীয় চেতনার কারণে অস্ট্রেলিয়ার এই কৌশলের গুণগ্রাহীও কম নয়। তবে নিন্দুকেরা চাইলে খুঁজতে পারেন ‘অন্য কারণ’ও। ক্রিকেট ইতিহাসে ফলোঅনে পড়েও ফলোঅন করা দলটির ম্যাচ জেতার যে তিনটি নজির আছে তার প্রতিটিতেই পরাজিত দল অস্ট্রেলিয়া! এই তিনটি ঘটনার প্রথমটি ঘটে ১৮৯৪-এর এ্যাশেজের সিডনি টেস্টে। ফলোঅনে পড়েও ইংল্যান্ড বৃষ্টিভেজা পিচের সুবিধা নিয়ে দুই স্পিনার ববি পিল এবং জনি ব্রিগসের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচটি জিতে নেয় ১০ রানে। তিন. এ্যাশেজের ইতিহাসে ট্রিপল সেঞ্চুরির সংখ্যা পাঁচটি। চারটিই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের দখলে। বব সিম্পসন এবং বব কোপারের পাশাপাশি দুটি ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। ১৯৩৮ সালে করা লেন হাটনের ৩৬৪ রানই ইংরেজদের একমাত্র যক্ষের ধন। চার. লেন হাটনের ৩৬৪ রানের ওপর ভর করে এ্যাশেজে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ইংল্যান্ডের, ৭ উইকেটে ৯০৩। ১৯৩৮-এর এ্যাশেজে ইংল্যান্ডের এক ইনিংস এবং ৫৭৮ রানের জয় আজও টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় জয়। ১৯০২-এর এ্যাশেজে মাত্র ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া এ্যাশেজ এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কম রানের দলীয় সংগ্রহ। এ্যাশেজে দলীয় এবং ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ইংল্যান্ডের দখলে থাকলেও পার্টনারশিপ রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার দখলে। ব্র্যাডম্যান এবং পন্সফোর্ডয়ের সেই জুটিতে আসে ৪৫১ রান। তবে ১৯৫৬-এর এ্যাশেজে ইংল্যান্ডের জিম লেকারের করা ইনিংসে ৫৩ রানে ১০ উইকেট এবং ম্যাচে ৯০ রানে ১৯ উইকেট কেবল ইংল্যান্ড বা এ্যাশেজ নয়, বরং ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা বোলিং ফিগার। পাঁচ. এ্যাশেজে আমরা যে ছোট্ট ভস্মাধারটি দেখি, সেটা ১৮৮২-এর এ্যাশেজ জয়ের পর ইংলিশ অধিনায়ক ব্লাইকে উপহার দেয়া হয়েছিল। তবে তা কোন অফিসিয়াল ট্রফি ছিল না। সেটা ছিল ব্যক্তিগতভাবে ব্লাইকে দেয়া উপহার। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী ১৯২৭ সালে তা এমসিসিকে দান করে দেন। ‘অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ভস্ম’ বলে ইংল্যান্ডে নিয়ে এলে বলা হয়ে থাকে সেই ভস্মাধারে ছিল স্টাম্পের একটা বেলের ছাই। তবে যে দলই ট্রফিটি জিতুক না কেন, ভস্মাধারটি সাধারণত লর্ডসের এমসিসি জাদুঘরের বাইরে যায় না। ছয়. কুখ্যাত বডিলাইন! ১৯৩০-এর এ্যাশেজে ১৩৯.১৪ গড়ে ৯৭৪ রান করে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান একাই ইংরেজদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ জেতান ২-১-এ। ১৯৩২-৩৩-এর পরের এ্যাশেজে ইংলিশরা ভালভাবেই বুঝতে পারল ব্র্যাডম্যানকে থামানো আর এ্যাশেজ জয় একই সুতায় গাঁথা। ব্র্যাডম্যানকে থামানোর উপায় খুঁজতে গিয়েই ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটে জন্ম নিল অভদ্র এক ইতিহাসের। বডিলাইনের সফল প্রয়োগে ইংল্যান্ড ফলও পায় হাতে হাতেই, সিরিজ জিতে নেয় ৪-১ এ। সেই যে ১৮৮২ সালে শুরু হয়েছিল ‘কোয়েস্ট টু রিগেইন দ্য এ্যাশেজ’, তা আজও অব্যাহত। এবং শতাধিক বছর পেরিয়ে আজ তা পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্বের ক্রীড়া ইতিহাসেরই এক অন্যতম প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী এবং মর্যাদার আসরে।
×