ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অগ্রিম টিকেট পেতে দ্বিতীয় দিনেও কমলাপুরে উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ১১:১৬, ৩১ জুলাই ২০১৯

অগ্রিম টিকেট পেতে দ্বিতীয় দিনেও কমলাপুরে উপচেপড়া ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্রি হলো ট্রেনের অগ্রিম টিকেট। সকাল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকেট প্রত্যাশীদের ছিল উপচেপড়া ভিড়। তবে অন্য চার স্থানে তুলনামূলক ভিড় কম দেখা গেছে। এ্যাপের মাধ্যমে টিকেট কাটা নিয়ে পাওয়া গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, সহজেই টিকেট কাটতে পেরেছেন তারা। অনেকে জানিয়েছেন বিড়ম্বনার কথা। তবে রেল মন্ত্রণালয় বলছে, ঈদ-উল-ফিতরের চেয়ে ঈদ-উল-আজহায় এ্যাপের সক্ষমতা অনেক বাড়ানো হয়েছে। এখন একসঙ্গে এক লাখের বেশি মানুষ টিকেট কাটার জন্য অনলাইনে প্রবেশ করতে পারে। তবে এই সংখ্যার চেয়ে বেশি হলে সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। আগামীকাল এক আগস্ট থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সিএনজি স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সচিব এ কথা জানান। এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, কমলাপুর থেকে ২৬ হাজার ৫০০টি টিকেট বিক্রি হয়েছে মঙ্গলবার। এ ছাড়া ১১ হাজার টিকেট অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। সকাল ছয়টা থেকে অনলাইনে টিকেট বিক্রি শুরু হয়। আর নয়টা থেকে চারটা পর্যন্ত দেয়া হয় কাউন্টারের টিকেট। যদিও রেল মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, অর্ধেক টিকেট কাউন্টার বাকি অর্ধেক দেয়া হবে অনলাইনের মাধ্যমে। এদিকে, টিকেট বিক্রির পাঁচটি স্থানের মধ্যে কমলাপুরেই সবচেয়ে বেশি মানুষের ভিড়। অনেকেই দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে টিকেট পাওয়ার কথা বলেন। কেউ কেউ আগের দিন সন্ধ্যায় সোনার হরিণ টিকেটের অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়ান বলে জানান। তবে কাউন্টার থেকে জানানো হয়েছে, তারা দ্রুত টিকেট দিতে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে টিকেট বিক্রি করায় সময় লাগছে বলে জানান রেল কর্তৃপক্ষসহ টিকেট প্রত্যাশীরা। অনলাইনে টিকেট বিক্রি নিয়েও অনেকে অভিযোগ তুলেছেন। অনলাইনে টিকেট বিক্রির যে এ্যাপ রয়েছে, তার মাধ্যমে টিকেট কিনতে অনেকেই ভোগান্তিতে পড়ছেন বলে জানান। অনলাইনে টিকেট না পেয়ে কেউ কেউ কমলাপুরে এসে লাইনে দাঁড়ান। যারা টিকেট পেয়েছেন তারা হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছেন। তবে টিকেট না পাওয়ার অভিযোগ খুব বেশি পাওয়া যায়নি। কাক্সিক্ষত টিকেট না পাওয়ার অভিযোগ ছিল যথেষ্ট। পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ॥ ঈদ-উল-আজহায় ঘরমুখো যাত্রীদের আগাম টিকেট বিক্রি উপলক্ষে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে নেয়া হয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টিকেট বিক্রিতে অনিয়ম ও স্টেশনে বিশৃঙ্খলা রোধে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। টিকিট প্রত্যাশীদের মধ্যে শৃঙ্খলা ধরে রাখতে কাজ করছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা। আছে রেলওয়ে পুলিশ, এপিবিএন ও র‌্যাব। এরপরও, প্ল্যাটফর্মে লাইন ঠিক রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিরাপত্তা কর্মীদের। জানা যায়, গত ঈদ-উল-ফিতরের মতো এবারও কমলাপুর থেকে বিক্রি হচ্ছে পশ্চিমাঞ্চল ও খুলনাগামী সব ট্রেনের টিকেট। রাজধানীর বাকি চারটি স্টেশনে বিক্রি হচ্ছে অন্য অঞ্চলের টিকেটগুলো। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩০ জুলাই দেয়া হয় ৮ আগস্টের টিকেট। এছাড়া, ৩১ জুলাই ৯ আগস্টের, ১ আগস্ট ১০ তারিখের ও ২ আগস্ট ১১ তারিখের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হবে। একজন সর্বোচ্চ চারটি টিকেট কিনতে পারবেন। রাজধানীর কমলাপুর ছাড়া আরও চারটি জায়গা থেকে টিকেট বিক্রি করা হবে। যমুনা সেতু হয়ে পশ্চিমাঞ্চলগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি হবে ঢাকার কমলাপুর থেকে, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি করা হবে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে, ময়মনসিংহ জামালপুরগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন থেকে, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট বনানী স্টেশন থেকে এবং ফুলবাড়িয়ার পুরাতন বিল্ডিং থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি হবে। বিক্রি শুরুর দিন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, গত ঈদ-উল-ফিতরে মোবাইল এ্যাপসে টিকেট কাটতে গিয়ে যে সমস্যা হয়েছিল এবার তা কমে গেছে । আশা করি এবার আর খুব বেশি মানুষের দুর্ভোগ হবে না। তিনি বলেন, একসঙ্গে বেশি মানুষ যদি অনলাইনে টিকেট কাটার চেষ্টা করেন তাহলে তো সার্ভার কাজ করবে না। তাছাড়া চাহিদার বেশি মানুষ যদি কাউন্টারে টিকেট চান তাহলে সবাইকে তো টিকেট দেয়া সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করছি কেউ যেন খালি হাতে বাড়ি না ফিরেন।
×