মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘ক্যাপিটাল ওয়ান’ থেকে ১০ কোটি ৬০ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে এক হ্যাকার। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের তথ্য ওই হ্যাকার চুরি করে নেয় বলে জানতে পারে কোম্পানিটি। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০ কোটি এবং কানাডার ৬০ লাখ মানুষ রয়েছেন। ক্যাপিটাল ওয়ান হ্যাকিংয়ের ওই ঘটনা জানতে পারে গত ১৯ জুলাই। তবে সন্দেহভাজন সেই হ্যাকারকে সোমবার পুলিশ গ্রেফতার করার পর ক্যাপিটাল ওয়ানের পক্ষ থেকে তথ্য চুরির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। ক্যাপিটাল ওয়ানের ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, জন্ম তারিখসহ আরও কিছু ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারের হাতে পড়েছে। তবে গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ডের এ্যাকাউন্ট নম্বর বেহাত হয়নি বলে দাবি করে ক্যাপিটাল ওয়ান। হ্যাকার পেজ এ থমসনকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়। তাকে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়া হয় এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার আটকাদেশের শুনানি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মূলতবি রাখা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কোম্পানির ক্রেডিট কার্ড বেশি চলে তার মধ্যে ক্যাপিটাল ওয়ান অন্যতম। এর পাশাপাশি তারা নিয়মিত ব্যাংকিং সেবাও দেয়। সোমবার এক বিবৃতিতে ক্যাপিটাল ওয়ান জানায়, যাদের তথ্য চুরি হয়েছে তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০ কোটি এবং কানাডার ৬০ লাখ মানুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত এক লাখ ৪০ হাজার মানুষের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর এবং ৮০ হাজার মানুষের অন্য ব্যাংকের এ্যাকাউন্ট নম্বরও হ্যাকার হাতিয়ে নেয়। আর কানাডায় প্রায় দশ লাখ মানুষের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বরও বেহাত হয়েছে বলে স্বীকার করে ক্যাপিটাল ওয়ান। তারা জানায়, কোম্পানির ডিজিটাল অবকাঠামোর একটি নিরাপত্তা ত্রুটি ব্যবহার করেই তথ্য চুরি করেছে হ্যাকার। ক্যাপিটাল ওয়ানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চুরি যাওয়া তথ্য কোন ধরনের জালিয়াতিতে ব্যবহার হয়েছে বলে তারা মনে করছে না। তবে এ ঘটনায় তাদের তদন্ত অব্যাহত থাকবে এবং যাদের তথ্য বেহাত হয়েছে, তাদের এ্যাকাউন্টের লেনদেনের ওপর নজর রাখার পাশাপাশি তথ্যের সুরক্ষায় বিনামূল্যে সেবা দেবে কোম্পানি। ক্যাপিটাল ওয়ানের চেয়ারম্যান রিচার্ড ফেয়ার ব্যাংক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অপরাধী ধরা পড়েছে, অন্তত এই কারণে আমি স্বস্তি পাচ্ছি। যা ঘটেছে সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এ ঘটনায় যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী এবং এর সমাধানের বিষয়ে আমি অঙ্গীকারাবদ্ধ।’ এই হ্যাকিংয়ের ঘটনায় সিয়াটলের একটি প্রযুক্তি কোম্পানির সাবেক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পেজ থমসনকে গ্রেফতার করে সোমবার ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়। ৩৩ বছর বয়সী ওই নারীর বিরুদ্ধে কম্পিউটার জালিয়াতি এবং প্রযুক্তির অপব্যবহারের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদ- এবং আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে। -বিবিসি ও গার্ডিয়ান
