ব্যাংকিং খাতে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা প্রয়োজন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাংকিং খাতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা প্রয়োজন। এজন্য ব্যাংক কর্মীদের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি প্রযুক্তিভিত্তিক করতে হবে। সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম. মনিরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের মহাপরিচালক মহাঃ নাজিমুদ্দিন। কর্মশালায় ‘ইউজ অব ইনফরমেশন টেকনোলজি ইন ইনহ্যান্সিং ইফিসিয়েন্সি অব ইন্টারনাল কন্ট্রোল সিস্টেমস’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুফল পেতে হলে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যাংকারদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে জ্ঞান এবং দক্ষতা বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় অটোমেশন ব্যবস্থা নিরীক্ষা কার্যক্রম আরও কার্যকর এবং ফলপ্রসূ হবে। কর্মশালার উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস এম. মনিরুজ্জামান বলেন, ব্যাংকিংকে আরও সহজ এবং গতিশীল করতে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম পুরোপুরি তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক হলে পরিদর্শন কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। একইসঙ্গে ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের শাখা পর্যায় পর্যন্ত নজরদারি অনেক সহজ হবে। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব সময়ই ব্যাংকিং অটোমেশনের জন্য কাজ করছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট একটি গাইডলাইনও তৈরি করা হয়েছে। বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, সুশাসনের মাধ্যমে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন (আইসিসি) এবং আইটিকে ঠিক রাখতে হবে। এতে ব্যাংকিং পেশা আরও ফলপ্রসূ হবে। ব্যাংকিং খাতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে এজন্য দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা প্রয়োজন। ব্যাংক কর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ জোরারোপ করতে হবে। পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিংয়ে আইটিকে আলাদা কোন বিভাগ বা উইং বলার সুযোগ নেই। সহসাই আইটি ব্যাংকিং খাতের অবিচ্ছেদ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ব্যাংকিং ব্যবসায় এর প্রয়োগ সুদূরপ্রসারী। আইটি ঝুঁকি কমাতে অনেক সাহায্য করে। আইসিসির দুর্বলতা ব্যাংকের অনেক অনিয়মের জন্ম দেয়। আইসিসিতে দক্ষ জনবল নিয়োগ প্রয়োজন এবং তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে সকলের সহযোগিতা দরকার। এছাড়া এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে আইটি খাতের উন্নয়ন প্রয়োজন। বিআইবিএম-এর সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, ব্যাংকিং খাতে শুধু আইটি লোকজনের দক্ষতা থাকলে হবে না। সবার আইটি সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান না থাকলে ব্যাংকিং খাতের প্রসার হবে না। আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মনিতুর রহমান বলেন, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি প্রযুক্তিভিত্তিক করতে হবে। ব্যাংকিং খাতে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষাকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। এতে ব্যাংকিং খাত আরও এগিয়ে যাবে।