ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করুণ দশা...

প্রকাশিত: ১০:০৪, ২৮ জুলাই ২০১৯

 করুণ দশা...

সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের আরিহা শহরে বিমান হামলার কিছুক্ষণ পরই ছবিটি তোলেন স্থানীয় নিউজপোর্টাল এসওআই ২৪ -এর ফটোগ্রাফার বাশার আল শেখ। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটিতে গত এপ্রিল থেকেই নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে সিরীয় সরকার ও রাশিয়া জোট। তবে এর মধ্যে ঘটে যাচ্ছে বড়ই হৃদয়বিদারক ঘটনা। যে ঘরে মা-বাবার সঙ্গে খেলছিল ছোট্ট শিশুরা তারাই মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া একটি বাড়িতে আটকে রয়েছে কোন রকমে। আর কাছের মানুষগুলোর প্রাণ কেড়ে নিল বোমা। এমন দৃশ্যের বর্ণনা দেয়া সত্যিই কঠিন ও হৃদয়বিদারক। কিছুক্ষণ ছবির দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে আপনা আপনিই পানি চলে আসে! তেমনই এক বোমার আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে দুই শিশু। সম্পর্কে তারা দুই বোন। ইতোমধ্যেই একজন এক হাত দিয়ে ধরে রেখেছে ছোট্ট আরেক বোনের জামার এক কোণা। আর তিন বোনের করুণ অবস্থা দেখে পেছনে কপাল চাপড়াচ্ছেন আরেক লোক। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এ ছবিটি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, ছবির তিনটি মেয়ের মধ্যে একজন মারা গেছে, বাকি দুজনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া ডাঃ ইসমাইল জানান, সবুজ পোশাক পরা ছোট বোনকে ধরে রাখা মেয়েটির নাম রিহাম আল আব্দুল্লাহ। পাঁচ বছর বয়সী মেয়েটি বোমা হামলার কিছুক্ষণ পরই মারা যায়। ধ্বংসস্তূপে ঝুলে থাকা সাতমাস বয়সী ছোট মেয়েটির নাম তৌকা। বেশ কয়েকটি গুরুতর ক্ষত নিয়ে সে এখন আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তাকে ২৪ ঘণ্টা কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেয়া হচ্ছে। ছবির তৃতীয় মেয়েটির নাম ডালিয়া। বুকে অস্ত্রোপচারের পর এখন তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল। মোট ছয় বোন মা-বাবার সঙ্গে ওই বাড়িটিতে থাকতেন। বুধবারের (২৪ জুলাই) হামলায় রিহামের সঙ্গে তার মা ও আরেক বোনও প্রাণ হারিয়েছেন। সিরিয়ায় আট বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে অসংখ্য শিশু হতাহতের ঘটনাকে ‘দুঃস্বপ্ন’ বলে মন্তব্য করেছে সহযোগিতা সংস্থাগুলো। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, গত চার সপ্তাহে ইদলিবে যে সংখ্যক শিশু নিহত হয়েছে তা, ওই অঞ্চলে এর আগের এক বছরে নিহতের সংখ্যার সমান। ২০১১ সালে শুরু হওয়া যুদ্ধে সিরিয়ায় এ পর্যন্ত অন্তত তিন লাখ ৭০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরছাড়া হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। -এএফপি
×