ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তাই বলে ৭ গোল!

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ২৮ জুলাই ২০১৯

 তাই বলে ৭ গোল!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রাক-মৌসুমের প্রস্তুতি ম্যাচ। আমেরিকার নিউ জার্সিতে মুখোমুখি হয় মাদ্রিদের দুই জায়ান্ট রিয়াল আর এ্যাটলেটিকো। দুই দলের প্রায় সব তারকাই ছিলেন মাদ্রিদ ডার্বিতে। তারপরও এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে দেখা যায় ভিন্ন রিয়াল মাদ্রিদকে। এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ এদিন ৭-৩ গোলে বিধ্বস্ত করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে। ১০ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে সাত গোল হজম করে জিনেদিন জিদানের দল। এমন খবর তাই ফুটবলপ্রেমীদের মনে বিস্ময় জাগায়। এই রিয়ালই যে দুই মৌসুম আগে দাপট দেখায় বিশ্ব ক্লাব ফুটবলে। প্রতিপক্ষের স্বপ্নকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে টানা তিনবার পরে ইউরোপ সেরার মুকুট। এ যাবতকালের ইতিহাসে যা পারেনি আর কোন ক্লাব। জিনেদিন জিদানের অধীনে সেই কীর্তিই গড়েছিল রিয়াল। অথচ শুক্রবার সেই রিয়াল মাদ্রিদের জালেই গুনে গুনে সাতবার বল জড়ায় তাদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবটি। এর পেছনের মূল নায়ক ডিয়েগো কস্তা। হ্যাটট্রিকসহ এদিন একাই চার গোল করেন তিনি। এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের গোল উৎসবের শুরুটা ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই। বেনফিকা থেকে উড়িয়ে আনা হোয়াও ফেলিক্সের কাছ থেকে পাস পেয়ে দারুণ এক গোল করেন কস্তা। সম্প্রতি ১২৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ফেলিক্সকে নিজেদের দলে ভেড়ায় এ্যাটলেটিকো। তার প্রতিদান যেন ইতোমধ্যেই দিতে শুরু করেছেন ১৯ বছরের এই প্রতিভাবান ফরোয়ার্ড। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতে কস্তাকে দিয়ে গোল করানোর নায়ক ফেলিক্স ৮ মিনিটেই নিজের প্রথম এবং দলের দ্বিতীয় গোল করেন। ১৯ মিনিটে রিয়ালের জালে বল জড়ান এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের এ্যাঞ্জেল কোরেয়া। ২৮ মিনিটে আবারও ডিয়েগো কস্তার গোল। ম্যাচের বয়স যখন ৪৫ মিনিট তখন পেনাল্টির সৌজন্যে গোল করে নিজের হ্যাটট্রিকও পূর্ণ করেন ডিয়েগো কস্তা। তাতেই বুঝা যায় যে প্রথমার্ধে কতটা একপেশে খেলেছে কস্তার দল। বিরতির পরও দাপট অব্যাহত রাখে ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। ম্যাচের ৫১ মিনিটেই চতুর্থ গোলের দেখা পান কস্তা। ম্যাচের বয়স যখন ৫৯ মিনিট তখন প্রথম গোলের দেখা পায় রিয়াল মাদ্রিদ। নাচো ফার্নান্দেজের সৌজন্যে। কিন্তু ৬৫ মিনিটে এ্যাটলেটিকোর থমাস লেমারকে কড়া ট্যাকল করেন দানি কারবাহল। এ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর হাতাহাতিও হয় দুই দলের মধ্যে। শাস্তি হিসেবে লালকার্ড দেখে দুই দলের দুই খেলোয়াড়। এর ফলে কারবাহল ও কস্তাকে ছাড়াই ম্যাচের বাকিটা সময় খেলে দুই স্প্যানিশ জায়ান্ট। তবে ম্যাচের ৭০ মিনিটে ভিটালো গোল করলে ৭-১ ব্যবধানে এগিয়ে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। এরপর বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ার ইঙ্গিত দেয় সিমিওনের দল। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষের কয়েক মিনিট আগেই যেন জ্বলে ওঠে জিদানের শিষ্যরা। ৮৫ থেকে ৮৯ মিনিটের মধ্যে প্রতিপক্ষের জালে দুইবার বল জড়ায় রিয়াল। এই সময়ে গোল দুটি করেন করিম বেনজেমা ও স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জাভিয়ের হার্নান্দেজ। আর তাতেই নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হারের ব্যবধানটা দাঁড়ায় ৭-৩। গত মৌসুমটা মোটেও ভাল কাটেনি রিয়ালের। নতুন মৌসুমে নতুন শুরুর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ক্লাবটির অভিজ্ঞ কোচ জিনেদিন জিদান। কিন্তু প্রাক-মৌসুমে সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে না তার শিষ্যদের পারফর্মেন্স। কেননা প্রাক-মৌসুমে জার্মান ক্লাব বেয়ার্ন মিউনিখের কাছেও হার মানে রিয়াল। এরপর আর্সেনালের সঙ্গে ড্র। আর শেষ ধাক্কাটা দিল এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের সেই লজ্জার হারটা মনে আছে নিশ্চয়ই? এরপর থেকেই ৭ গোলের ফলাফল নির্ধারণী ম্যাচ পায় বাড়তি আকর্ষণ। তবে সেই ম্যাচই ব্রাজিলকে বদলে দেয় বলে মন্তব্য করেছিলেন দেশটির অন্যতম সেরা ফুটবলার থিয়াগো সিলভা। শুক্রবার এ্যাটলেটিকোর কাছে এমন বড় ব্যবধানে হেরে কী বলছেন জিদান? হ্যাঁ, ফরাসী কোচও অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন এই ম্যাচের হার থেকে, ‘কোন সন্দেহ নেই যে আমরা উদ্দীপ্ত হলাম। হ্যাঁ আজকের ফলে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি না কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে মনে করি আমার এমন একটা দল আছে যারা ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারে। তবে তারা সাত গোল করেছে, এটা হতে পারে না। কিন্তু প্রাক-মৌসুম ম্যাচ। প্রতিপক্ষ সব জায়গাতেই আমাদের চেয়ে ভাল খেলেছে। এ নিয়ে এর বেশি আর কিছুই বলার নেই।’ নতুন মৌসুম শুরুর আগে এবার দলবদলে বড় চমক দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদই। চেলসি থেকে এডেন হ্যাজার্ডকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। কিন্তু বেলজিয়াম স্ট্রাইকারও এদিন নিষ্প্রভ ছিলেন এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। এছাড়া গ্যারেথ বেলকেও দেখা গেছে সাইডলাইনে।
×