ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টুং-টাং শব্দে মুখর কামারপল্লী

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ২৮ জুলাই ২০১৯

 টুং-টাং শব্দে মুখর কামারপল্লী

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ টুং-টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে নগরীর কামারপল্লী। দিন রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা। লোহার তৈরি নতুন দা, চাপাতি, ছুরি তৈরির পাশাপাশি চলছে পুরনোগুলোতে শান দেয়ার কাজ। নগরীর হাটখোলা, নতুনবাজার, বাংলাবজার, নথুল্লাবাদ সেন্ট্রাল পয়েন্ট মার্কেট, পলাশপুর বৌ-বাজার বেলতলা, চাঁদমারী, তালতলী বাজার, সদর উপজেলার চরকাউয়া, সাহেবেরহাট, লাহারহাটসহ ছোট-বড় সব হাটের কামাররা এখন মহাব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোর থেকে শুরু করে তাদের কাজ চলছে গভীর রাত পর্যন্ত। পলাশপুর বৌ-বাজারের বিপুল কর্মকার বলেন, ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে গেছে। এজন্য বর্তমানে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি কাজ করে প্রায় দেড় হাজার টাকা আয় হচ্ছে। তিনি জানান, একটি বড় দা পাঁচ কেজির লোহা দিয়ে তৈরি করে মজুরিসহ আট শ’ টাকা, এক কেজি ওজনের কুড়াল তিন শ’, চাপাতি প্রকার ভেদে ৪৫০ থেকে ছয় শ’ টাকা, বিভিন্ন আকারের ছোরা ৩৫০ থেকে ৬৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, অন্য সময়ের চেয়ে এখন সব মালামালের দাম দ্বিগুণ রাখা হচ্ছে। সরজমিনে দেখা গেছে, নগরীর কামারপট্টির কামারদের এখন দম ফেলার সময় নেই। একের পর এক ক্রেতা এসে দোকানে ভিড় করছেন। ফলে তাদের দোকান ছেড়ে যাওয়ারও কোন উপায় নেই। তাই সকাল, দুপুর বা রাতের খাবার তারা দোকানে বসেই সেরে নিচ্ছেন। পুরনো দুইটি দা, একটি বটি ও একটি ছুরিতে শান দেয়ার জন্য কামাররা ৩৫০ টাকা নিচ্ছেন। অন্যসময় যার মজুরি ছিল ১৫০ টাকা। আর নতুন একটি ছোরা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বিভিন্ন সাইজের চাক্কু ৫০ থেকে এক শ’ টাকা, বটি দুই থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। হাটখোলার বিমল কর্মকার বলেন, সারাবছরই আমাদের তৈরি মালামালের কমবেশি চাহিদা থাকে। তবে কোরবানির ঈদে পশু কোরবানির জন্য নতুন ছুরি, চাপাতি, চাক্কুর কদর অনেক বেড়ে যায়। তাই চাহিদার কথা মাথায় রেখে আগে থেকেই বেশকিছু জিনিস বানিয়ে রাখা হয়েছে। তালতলী বাজারের অজয় কর্মকার বলেন, আগে অন্য হাট-বাজারে প্রতিদিন বিভিন্ন লৌহজাত জিনিস বানিয়ে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হতো। তবে ঈদের আগে লোহার তৈরি মালামালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হচ্ছে। ঈদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে গিয়ে তাদের রাত-দিন কাজ করতে হচ্ছে। তাদের এই কর্মব্যস্ততা থাকবে কোরবানির ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।
×