ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় যশোরের চাষিরা

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ২৭ জুলাই ২০১৯

পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় যশোরের চাষিরা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ভরা বর্ষা মৌসুম পার হতে চললেও যশোরে এখনো পর্যন্ত তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। তাই নদী, খাল, বিল ও ডোবা নালাতে পানির পরিমাণ খুবই কম। ফলে পাট কাটার পর জাগ দেয়া নিয়ে চাষিরা পড়েছেন চরম বিপাকে। তারা বলছেন, বাধ্য হয়েই অল্প পানিতে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। অল্প পানিতে জাগ দিলে পাটের সোনালী রং কালচে বর্ণ ধারণ করে। যে রঙের কারণে বাজারে ভালো দাম মেলে না। তাই পাট নিয়ে তাদের চিন্তার শেষ নেই। এমন পরিস্থিতিতে চাষিদের বিকল্প উপায়ে পাট জাগ দিতে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। বিকল্প উপায় হিসেবে রিবেট রেটিং পদ্ধতিতে চাষিদের পাট জাগ দিতে বলা হচ্ছে। সদর উপজেলার পুলেরহাট গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের নীচু জমিতে পানি থই থই করে। বৃষ্টির অভাবে এবার খাল-বিল, ডোবা-নালায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দেয়া যাচ্ছে না। ফলে পাট নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। নিরূপায় হয়ে পুকুর ও গর্তে পাট জাগ দিচ্ছেন চাষিরা। কিন্তু অল্প পানিতে জাগ দিলে পাটের রং কালচে বর্ণ ধারণ করে। এমনটা হলে বাজারে পাটের দাম ভালো পাওয়া যায় না। এছাড়া বৃষ্টির অভাবে পাটক্ষেতে বারবার সেচ দিতে হয়েছে। এজন্য ব্যয়ও বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে পাটের এবার লোকসান গুনতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোর কার্যালয়ের উপপরিচালক ইমদাদ হোসেন সেখ জানান, অনাবৃষ্টির কারণে নদী- নালা খাল- বিলে পানি না থাকায় চাষিদের বিকল্প হিসেবে রিবেট রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দিতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ৮ উপজেলায় পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এর মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ২ হাজার হেক্টর। অর্জিত হয়েছে এক হাজার ২০০ হেক্টর। শার্শায় ৩ হাজার হেক্টরের জায়গায় অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৬ হেক্টর। ঝিকরগাছায় ৫ হাজার হেক্টরের জায়গায় অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার হেক্টর। চৌগাছা উপজেলাতে ২ হাজার ৪০০ হেক্টরের জায়গায় অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর। অভয়নগর উপজেলাতে মাত্র ৫০ হেক্টরের জায়গায় অর্জিত হয়েছে ৩০ হেক্টর। বাঘারপাড়া উপজেলাতে ২ হাজার জায়গায় অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ১০০ হেক্টর। মণিরামপুর উপজেলাতে ৬ হাজার হেক্টরের জায়গায় অর্জিত হয়েছে ৫ হাজার ১৭৫ হেক্টর। কেশবপুর উপজেলাতে ৫ হাজার ৫০০ হেক্টরের জায়গায় ৪ হাজার ৩৮০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে। সব মিলে এবার যশোরে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। গত বছর চাষ হয় ১৮ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে।
×