বাড়ির ছাদে ছাগল খামার

ঝালকাঠিতে ছাদ কৃষির পরে নতুন সংযোজন বাড়ির ছাদে ছাগল লালন পালন শুরু করেছেন একটি প্রকৌশলী পরিবার। সদর উপজেলার বিনয়কাঠী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল মানপাশা গ্রামের বাসিন্দা প্রকৌশলী রেজাউল করিম তার বসতবাড়ির পাকা ভবনের ৩য় তলায় ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের খামার করেছেন। তার স্ত্রী মানপাশা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা আফরোজা বেগম এই কাজে স্বামীকে উৎসাহ প্রদান করছেন। মাসুদ নামের এক যুবক এই পরিবারের ছাগল লালন পালনে তদারকি ও পরিচর্যা করেন। ৪ বছর আগে এই প্রকল্পের দুটি বাচ্চা দিয়ে শুরু হয়। বর্তমানে এই খামারে ১৮টি ছাগল রয়েছে এবং ইতোমধ্যেই ২৫-৩০ হাজার টাকা দামে ১৮টি খাসি বিক্রি করেছেন। এখানে লালন-পালন করা ছাগলগুলো জন্মের পর থেকে মাটিতে পা দেয়নি। প্রতিদিন তাদের চাহিদা মোতাবেক খাবার, পানি ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ছাদে ছাগলের জন্য টিনের ঘর করে তাদের মধ্যে ৩ তলা বিশিষ্ট পাটাতন করা হয়েছে, যাতে বৃষ্টি বাদলের দিনে ও রোদে ছাগলগুলো তাদের পছন্দমতো জায়গায় অবস্থান নিতে পারে। ছাগল পালনের জন্য চারণ ভূমির প্রয়োজন হয় এবং ছাগল আশপাশের মানুষের নানা ধরনের ফসলাদি নষ্ট করে কিন্তু ছাদে ছাগল লালন-পালনের কারণে কারও কোন ক্ষতি হয় না কারণ তারা অন্য প্রাণীর হাত থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখে। এ ছাড়াও বাড়ির ছাদটির জায়গায় উৎপাদনশীল ও আর্থিকভাবে সহায়ক প্রকল্প হিসেবে বাড়তি আয় পাওয়া যাচ্ছে। প্রকৌশলীর বসতবাড়ির তিদ্বীয় তলায় নানা যাতে কবুতর ও সৌখিন জাতের পাখি লালন পালন করা হচ্ছে। ভবনের সামনে আলাদা করে হাঁস-মুরগির জন্য খামার করা হয়েছে। এখানে হাস, মুরগি, রাজাহাঁস এবং টারকি মুরগি লালন পালন করা হচ্ছে। বাড়ির সামনে, ১০-১২টি গবাদিপশু নিয়ে দুগ্ধ খামার গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিদিন এখান থেকে ১০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে এবং পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। গবাদিপশুর বর্জ্য (গোবর) দিয়ে বায়ো গ্যাসের প্লান্ট করা হয়েছে। এই প্লান্ট দিয়ে বায়োগ্যাস ব্যবহার করে পরিবারটি রান্নাবান্না কাজে ব্যবহার করছে। পারিবারিক পুকুরটিতেও মাছ চাষ করা হয়েছে। বাড়িটি জুড়ে, বিভিন্ন ধরনের ফল, ফলাদি গাছ লাগিয়ে সবুজ বনায়ন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এই প্রকৌশলী রেজাউল করিমের বাড়িটি এক ধরনের মিনি চিড়িয়াখানা। -মানিক রায়, ঝালকাঠি থেকে