ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রুত ও নিশ্চিত পিকআপ ভাড়া ‘ট্রাক লাগবে’ এ্যাপে

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ২৭ জুলাই ২০১৯

 দ্রুত ও নিশ্চিত পিকআপ ভাড়া ‘ট্রাক লাগবে’ এ্যাপে

রেজা নওফল হায়দার ॥ একটা সময় হাতের নাগালেও কম সময়ে ট্রাক পাওয়াটা ছিল ঝক্কি ঝামেলার ব্যাপার। ট্রাক মিললেও দেখা যেত বনিবনা হতো না দর-কষাকষিতে। এই বাস্তবতা মাথায় রেখে ঘরে কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ট্রাক ভাড়ার ব্যবস্থা নিয়ে আসে দেশীয় এ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ট্রাক লাগবে’। ট্রাক, পিকআপ কিংবা কাভার্ডভ্যান ভাড়ার নির্ভরযোগ্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ‘ট্রাক লাগবে’ বিগত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠান এখন নিত্যনতুন চিন্তাভাবনা ও প্রোডাক্ট নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে হাজির হচ্ছে। আমরা দেখেছি বিগত বছরগুলোতে এক রকম বিপ্লব সংঘটিত হয়ে গিয়েছে দেশের পরিবহন সেক্টরে। একদিকে রাইড শেয়ারিং মাধ্যমগুলো যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তেমনি ট্রাক ভাড়া করার অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও সবার সন্তুষ্টি অর্জন করেছে ‘ট্রাক লাগবে’। মূলত এ্যাপভিত্তিক এই সার্ভিসটি পণ্য প্রেরক ও ট্রাক চালক বা মালিকদের মাঝে সংযোগ স্থাপন করে এ্যাপের মাধ্যমে। এই সার্ভিসে ঝক্কি ঝামেলা ছাড়াই খুব সহজে একজন পণ্য প্রেরক তার পণ্য পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় ট্রাক কিংবা পিকআপ ভাড়া করতে পারছেন। সঙ্গে সঙ্গে ট্রাক চালক ও মালিকরাও এই এ্যাপ সার্ভিসটি ব্যবহার করে ট্রিপ নিতে পারছেন বেশি। ‘ট্রাক লাগবে’ এ্যাপের নতুন সার্ভিস হিসেবে ‘এক্সপ্রেস’ সার্ভিসটি বেশ কিছুদিন হলো যাত্রা শুরু করেছে। গত ১৫ মে ২০১৯, ‘এক্সপ্রেস’ সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। প্রথমদিকে শুধুমাত্র ঢাকার মিরপুর এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে এই সার্ভিসটি চলে। ‘ট্রাক লাগবে’ কর্তৃপক্ষের মতে, সার্ভিসটি খুব শীঘ্রই পুরো ঢাকা শহরে চালু করা সম্ভব হবে। ‘ট্রাক লাগবে’র নতুন এই সার্ভিসটির বিশেষত্ব হচ্ছে পণ্য প্রেরক দ্রুতসময়ের ভেতর ও নিশ্চিতভাবে মিনি ট্রাক কিংবা পিকআপ ভাড়া করতে পারছেন। অন্যদিকে পিকআপ ও মিি ন ট্রাক ড্রাইভাররা এই এ্যাপের সুবিধা নিয়ে কম সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক ট্রিপ নিতে পারছেন। সর্বোপরি, পণ্য প্রেরক ও ড্রাইভার উভয়ের জন্যই উপকারী এক সার্ভিস এই এক্সপ্রেস। প্রযুক্তি ও সেবামান বিবেচনায়ও ‘এক্সপ্রেস’ সার্ভিসটি সময়োপযোগী, কার্যকরী ও দূরদর্শী এক মাধ্যম। মার্কেট সার্ভে করতে গিয়ে দেখা যায়, প্রথমদিকে সার্ভিস গ্রহণকারীদের মাঝে খুব একটা উচ্চাশা ছিল না এই এক্সপ্রেস সার্ভিস নিয়ে। তাদের মতামত ছিল, মোবাইলে কল করেই পিকআপ পাওয়া সম্ভব, সেখানে এ্যাপের ঝামেলায় কেন যাবেন। কিন্তু ধারণাটি ছিল ভুল। দেখা গেছে, এক্সপ্রেস সার্ভিসের মাধ্যমে এ্যাপে পিকআপ ভাড়া শুধু সহজই নয়, এটি আপনাকে পিকআপ ভাড়ার পূর্ণ নিশ্চয়তা দিচ্ছে। অন্যদিকে মোবাইলে যোগাযোগ করে পাওয়া পিকআপ চালক হয়ত ট্রিপটি নাও করতে পারেন। এছাড়া বনিবনা কিংবা দরকষাকষির একটা ব্যাপার তো থেকেই যায়। অন্যদিকে ‘এক্সপ্রেস’ সার্ভিসে আপনি ট্রিপ ক্রিয়েট করার সঙ্গে সঙ্গেই ১০/১৫ জন পিকআপ চালক ট্রিপটি নিতে তৈরি থাকবেন। এখানে নিবন্ধনকৃত চালকদের মাঝে প্রতিযোগিতা শুরু হয় ট্রিপটি পেতে। ফলে পিকআপ ভাড়া পাওয়ার পূর্ণ নিশ্চয়তা আপনি পাচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে মার্কেট প্রাইসের কমে আপনি পিকআপ ভাড়া করতে পারছেন। এছাড়া আরও দেখা যায়, পিকআপ ড্রাইভাররাও প্রথমদিকে এই সার্ভিস নিয়ে সন্দিহান ছিল। ফলে মিরপুর এলাকায় খুব কম সংখ্যক পিকআপ চালক ‘এক্সপ্রেস’ সার্ভিসের জন্য নিবন্ধিত হয়। কিন্তু সার্ভিস চালু হওয়ার ১ মাসের মাথায় দেখা যায় এক্সপ্রেস সার্ভিসে নিবন্ধনকৃত ড্রাইভাররা শুধুমাত্র উপকৃত হচ্ছেন তাই না, আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের জীবন মানেও এখন পরিবর্তন চলে এসেছে। এখন অনেক মিনিট্রাক ও পিকআপ চালকই ‘ট্রাক লাগবে’র এক্সপ্রেস সার্ভিসে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ফিল্ড লেভেলের সফলতাও এই এক্সপ্রেস সার্ভিসের যৌক্তিকতা ও কার্যকারিতা প্রমাণ করে। মিরপুরে চালু হওয়ার পর প্রথম এক মাসের কিছু পরিসংখ্যানে নজর দিলেও এর সত্যতা মিলে। মে মাসের পরিসংখ্যান (মিরপুর এলাকা) : ৪০০০ সম্পন্ন ট্রিপ, ১০০ এক্টিভ পিকআপ, গড় ট্রিপ ভ্যালু ১৩৫০ টাকা, একজন চালকের প্রতিদিনের ট্রিপসংখ্যা ২-৪। মিরপুর জয় করে ‘এক্সপ্রেস’ সার্ভিস ইতোমধ্যেই ঢাকার বাড্ডা, বসুন্ধরা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও উত্তরা এলাকায় চালু হয়ে গিয়েছে। মিরপুরের মতো এই এলাকাগুলোতেও একইরকম সফলতা নিয়ে এগিয়ে চলছে ‘ট্রাক লাগবে’র এক্সপ্রেস সার্ভিস। সর্বোপরি বিগত বছরগুলোতে ‘ট্রাক লাগবে’ কর্মতৎপরতা একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে দেশের পণ্য পরিবহন সেক্টরে। ‘ট্রাক লাগবে’র এক্সপ্রেস সার্ভিসটি এর চাক্ষুস ও জলজ্যান্ত প্রমাণ। আশা করা যায়, সময়ের সথে সঙ্গে প্রযুক্তি ও দক্ষ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে ‘ট্রাক লাগবে’ ভবিষ্যতেও তার কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখবে এবং পণ্য পরিবহন সেক্টরে ভূমিকা রেখে চলবে।
×