ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উইলিয়ামসনকেই যোগ্য মানছেন স্টোকস

প্রকাশিত: ১১:৩২, ২৬ জুলাই ২০১৯

 উইলিয়ামসনকেই যোগ্য মানছেন স্টোকস

জিএম মোস্তফা ॥ বহুল প্রতীক্ষার অবসান। স্বপ্নের বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে সক্ষম হলো ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নাটকীয় সুপার ওভারও টাই হলে সর্বোচ্চ বাউন্ডারির সৌজন্যে চ্যাম্পিয়ন হয় ইয়ন মরগানের দল। যার পেছনে নায়কের ভূমিকায় ছিলেন বেন স্টোকস। লর্ডসে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দেয়ার কারণে নিউজিল্যান্ড সরকারের বিরল সম্মানের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন বিশ্বজয়ী এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। তাকে এই সম্মানের যোগ্য বলে মনে করায় আবেগাপ্লুত বেন স্টোকস। কিন্তু এ পুরস্কার নিতে চান না বিশ্বকাপ ফাইনালের সেরা তারকা। বেন স্টোকসের দাবি, নিউজিল্যান্ডার অফ দ্য ইয়ার পুরস্কারের আসল দাবিদার তিনি নন। বরং কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের এই পুরস্কার পাওয়া উচিত বলে মনে করেন স্টোকস। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই সম্মানীয় পুরস্কারটা আমার নামের পাশে ঠিক যায় না। কারণ নিউজিল্যান্ডে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা এই পুরস্কারের বেশি যোগ্য। আমি ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছি। আমি এখন ব্রিটেনেরই নাগরিক।’ এরপরই উইলিয়ামসনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন স্টোকস। তিনি বলেন, ‘উইলিয়ামসনকে কিউই কিংবদন্তি হিসেবে সম্মান দেয়া উচিত। টুর্নামেন্টের সেরাও হয়েছে সে। গোটা বিশ্বকাপে দারুণ মানবিকতা ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। তাই এ পুরস্কার তারই প্রাপ্য। আমার মনে হয়, নিউজিল্যান্ডবাসীও এই সিদ্ধান্তে খুশি হবে।’ ১৯৯১ সালের ৪ জুন নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন বেন স্টোকস। জন্মের পরও বেশ কিছু বছর ক্রাইস্টচার্চে ছিলেন স্টোকস। তার বাবা জেরার্ড রাগবি লীগ কোচিং করাতে কামব্রিয়া চলে এলে তার সঙ্গেই গোটা পরিবার ইংল্যান্ডে পাড়ি জমায়। সেই সময় ১২ বছর বয়সেই ইংল্যান্ডে চলে আসেন বেন স্টোকস। কিন্তু পরে তার বাবা-মা ক্রাইস্টচার্চে চলে আসেন। এখনও সেখানেই থাকেন তারা। ফাইনালের দিন ব্ল্যাক ক্যাপসদের হয়েই গলা ফাটান বেনের বাবা জেরার্ড। ছেলের এই মহানুভবতা মন ছুঁয়েছে তারও। তবে ইংল্যান্ডকে প্রথম বিশ্বকাপ উপহার দেয়ার পুরস্কার হিসেবে ‘নাইটহুড’ পেতে পারেন বেন স্টোকস। ফাইনালে দুরন্ত পারফর্মেন্স করে স্টোকস মন জিতেছেন সকলের। অসাধারণ সেই ইনিংসটির সৌজন্যে ‘নাইটহুড’-এর দাবিদার হয়ে উঠেছেন তিনি। লর্ডসের ফাইনাল ম্যাচে স্টোকস অপরাজিত ছিলেন ৮৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে। এরপর সুপার ওভারেও তার ভূমিকা ছিল দুর্দান্ত। এরপরই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বরিস জনসন ও জেরেমি হান্ট জানিয়ে দেন, তারা স্টোকসের ‘নাইটহুড’ প্রাপ্তির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। এখন পর্যন্ত এগারো জন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারকে নাইটহুড দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি স্যার এ্যালিস্টার কুককে একদিনের আন্তর্জাতিক ও টেস্টে তার পারফর্মেন্সের জন্য নাইটহুড দেয়া হয়। অথচ ২৮ বছরের স্টোকসের দুই বছর খুব খারাপ গেছে। ২০১৭-১৮ সালে ব্রিস্টলে রাস্তায় একটি গ-গোলে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এক ব্যক্তি মুখে আঘাত পান। কিন্তু শেষে দেখা যায় স্টোকস নির্দোষ। এদিকে আগামী ১ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে এ্যাশেজ সিরিজ। সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবে সদ্য বিশ্বসেরা হওয়া ইংল্যান্ড। এ্যাশেজের আগে স্টোকসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং। আইনগত জটিলতায় ব্যস্ত থাকায় ইংল্যান্ড দলের সদস্য হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৭-১৮’র এ্যাশেজ খেলতে যেতে পারেননি স্টোকস। সেই সিরিজে অজিদের কাছে দুরমুশ হয়েছিলেন ইংরেজরা। কিন্তু এবার বিশ্বকাপ জিতে তাদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। বিশেষ করে স্টোকসের কথা আলাদা করেই বললেন পন্টিং। তিনি বলেন, ‘স্টোকস আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিণত। দায়িত্ব নিয়ে খেলতে শিখেছে। ব্যাটসম্যান হিসেবে বেন স্টোকস এখন অনেক বেশি শক্তিশালী।’ যে কারণেই এ্যাশেজ জিততে বেন স্টোকসকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার আলাদা পরিকল্পনা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন রিকি পন্টিং।
×