প্রথমবারের সাংসদ। তবে কেন্দ্রের সমালোচনায় বারবারই সরব হতে দেখা গেছে পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট লোকসভা আসনের তৃণমূল সাংসদ নুসরাত জাহানকে। বুধবার ফের টুইট করে কেন্দ্রে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন নুসরাত। এদিন তিনি কবি ইকবালের কবিতা উদ্ধৃত করে বলেন কোন ধর্ম একে অপরের মধ্যে হিংসা ছড়ানো শেখায় না। এগুলো মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত। খবর ওয়েবসাইটের।
ভারতের অখন্ডতাকে ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নুসরাত বলেন, যে ৪৯ জন বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তারাই দেশের প্রকৃত ভাল চান। তাদের সমর্থন করেন বলেও এদিন জানান তৃণমূল সাংসদ। তার মতে জয় শ্রীরাম ধ্বনির ধুয়ো তুলে দেশে আর্তনাদ ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এই ধ্বনি মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। এদিন গণপিটুনিতে অভিযুক্তদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, তথাকথিত গোরক্ষকরা খাবারের নামে, ধর্মের নামে বিভেদ তৈরি করে চলেছে। অথচ আশ্চর্যভাবে দেশের কেন্দ্র সরকার চুপ। সব দেখেও কোন ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেই। নুসরাতের দাবি এই গোরক্ষকরা গরু পাচার, গোমাংস খাওয়ার নামে তান্ডব চালানো হচ্ছে গোটা দেশে। এই সব গোরক্ষকরা আসলে জঙ্গী। যারা দেশের মধ্যে থেকে অশান্তি তৈরি করে চলেছে। এরা সবাই দেশের শত্রু। একযোগে এদের মোকাবেলা করতে হবে।
উল্লেখ্য, বুধবারই গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা ক্ষেত্রের ব্যক্তিত্বরা উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এদের মধ্যে ছিলেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, গৌতম ঘোষ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়দের মতো ব্যক্তিত্ব। ছিলেন চিত্রপরিচালক কেতন মেহতা, অঞ্জন দত্ত, অনুপম রায়, আদুর গোপালকৃষ্ণা, রূপম ইসলাম, ঋদ্বি সেন, ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ, সঙ্গীতশিল্পী শুভা মুদগলরাও। মোট ৪৯ জন ব্যক্তিত্বর সই করা এই চিঠি বুধবার গিয়ে পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
এদিকে, ‘জয় শ্রীরাম’ না বললেই অত্যাচারিত হয়ে খুনের শিকার হচ্ছেন ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। এই একটি স্লোগানে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে হিংসা। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার কলকাতার একাধিক বিশিষ্টজন চিঠি লেখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। সেই চিঠিতে পরিচালক-অভিনেতা অপর্ণা সেনের মতোই সই করেন অভিনেতা কৌশিক সেনও। অভিযোগ, তারপরেই নাকি ফোনে কৌশিককে খুনের হুমকি দেয়া হয়। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কলকাতার শিল্পী মহলে। কৌশিকের কথায়, সঙ্গে সঙ্গে তিনি সাহায্য চেয়ে দ্বারস্থ হন স্থানীয় প্রশাসনের। হুমকি ফোনের নম্বরটিও থানায় জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাতকারে অভিনেতার দাবি, বুধবার এক উড়ো ফোন আসে তার কাছে। অজানা নম্বর থেকে এক অচেনা ব্যক্তি সরাসরি হুমকি দিয়ে তাকে বলে, পরধর্ম অসহিষ্ণুতা, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে কোন কথা বলা বা প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপ নিয়ে মুখ খোলা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে তাকে। মুখ না বন্ধ করলে প্রয়োজনে তাকে খুন করতেও হাত কাঁপবে না অচেনা ওই ব্যক্তির।
