ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে জাতীয়করণে কপাল পুড়েছে ২০ শিক্ষক-কর্মচারীর

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ২৫ জুলাই ২০১৯

 যশোরে জাতীয়করণে কপাল পুড়েছে ২০ শিক্ষক-কর্মচারীর

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ জাতীয়করণ হওয়ায় চুক্তিভিত্তিক ২০ জন শিক্ষক-কর্মচারীর কপাল পুড়ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের বাদ দিচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। অথচ একই সঙ্গে দেশের আরও যে ১০টি মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে, ওই সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-কর্মচারীদের বাদ দেয়া হয়নি। যশোর শিক্ষা বোর্ড সরকারী স্কুল এ্যান্ড কলেজ গবর্নিং বডির সভাপতির কাছে লিখিত আবেদনে ওই ২০ জন শিক্ষক-কর্মচারী জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ হবার আগে থেকে স্থায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো তারা নির্ধারিত প্যাটার্নভুক্ত শূন্যপদের বিপরীতে দীর্ঘদিন চুক্তিভিত্তিক হিসেবে কর্মরত আছেন। তারা হলেন, গণিত প্রভাষক সিরাজুল ইসলাম, বাংলা প্রভাষক হোমায়রা আখতার, ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বীমা প্রভাষক মতিউর রহমান, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন প্রভাষক মতিয়ার রহমান, হিসাববিজ্ঞান প্রভাষক সামছুন নাহার, ইংরেজী সহকারী শিক্ষক মাকসুদা খাতুন, চারু ও কারুকলা সহকারী শিক্ষক উৎপল কুমার বিশ্বাস, ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা সহকারী শিক্ষক মাহবুবুল্লাহ, ইংরেজী সহকারী শিক্ষক মাহফুজা রহমান, গণিত ও বিজ্ঞান সহকারী শিক্ষক বেলাল হোসেন, সহকারী লাইব্রেরিয়ান নন্দিতা নন্দী, সঙ্গীত শিক্ষক সন্ধ্যা অধিকারী, তবলা বাদক কিশোর বিশ্বাস, অফিস সহায়ক (আয়া) মুনমুন খাতুন, নৈশপ্রহরী বদিউজ্জামান শান্ত, এমএলএসএস (পরিচ্ছন্নতাকর্মী) শিল্পী খাতুন, অফিস সহায়ক (পরিচ্ছন্নতা কর্মী) আল আমিন ও অফিস সহায়ক (পরিচ্ছন্নতা কর্মী) নূরজাহান। তারা জানান, ২০১৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্বে শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণের লক্ষ্যে স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক ৫৭ জনের নামের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এসব প্যাটর্নভুক্ত শূন্যপদ এবং পদসমূহের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-কর্মচারীদের নাম বাদ দিয়ে শুধু স্থায়ী ৩৪ জনের নাম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের দ্বৈতনীতির কারণে যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-কর্মচারীরা দারুণ হতাশার মধ্যে পড়েছেন। তারা জানান, এক সঙ্গে জাতীয়করণকৃত খুলনা মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, মহম্মদপুর মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ ও কুমিল্লা মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজসহ অন্য সব মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণ করা হয়েছে। বঞ্চিত শিক্ষকরা আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে চুক্তিভিত্তিক হিসেবে কর্মরত থেকে ইতোমধ্যে তাদের চাকরির বয়স পার হয়ে গেছে। এখন তারা সামাজিক, মানসিক ও পারিবারিকভাবে কষ্টের মধ্যে পড়েছেন। এ প্রসঙ্গে যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘কলেজ থেকে স্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক সকল শিক্ষক-কর্মচারীর কাগজপত্র মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর) এবং সেখান থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এখন সেখান থেকে কাগজপত্র জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা বলছেন, তারা জানতে পেরেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাদের কাগজপত্র পাঠানো হয়নি। শুধুমাত্র স্থায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। এজন্য তারা গবর্নিং বডির সভাপতি শিক্ষা সচিব বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। আমি এবং বোর্ড চেয়ারম্যান মহোদয় তাদের চাকরিতে বহাল রাখার জন্যে আবেদনে সুপারিশ করেছি। তাদের আবেদন শিক্ষা সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।’
×