মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ অস্ত্র উদ্ধারের গভীরে তদন্ত করছে না চট্টগ্রাম পুলিশ। এমন অভিযোগ এলাকার সাধারণ মানুষের। ফলে মাসের পর মাস আরেকটি অস্ত্র উদ্ধারের অপেক্ষায় থাকতে হয় পুলিশকে। অবৈধ অস্ত্র পৌঁছে গেছে অলিগলিতে। এসব অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা। মাত্র ৫-১০ হাজার টাকায় অস্ত্র হাতের নাগালে থাকায় টেন্ডারবাজি, ছিনতাই, অপহরণ ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সরকারী দফতরে অস্ত্রের ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা। অস্ত্রের প্রমাণ দেখাতে না পারায় থানায় অভিযোগ পড়লেও তদন্ত হয়না। এক্ষেত্রে অস্ত্রধারীকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশের সোর্সের খাতায় না লিখাতে হয়। তবে পুলিশের বেশিরভাগ সোর্সই হচ্ছে অপরাধী তথা জামিনে বেরিয়ে যাওয়া আসামি। আরও অভিযোগ রয়েছে, সিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে শনিবার গভীর রাতের অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা হলেও অস্ত্রের উৎস পায়নি গোয়েন্দা পুলিশ। ফলে অস্ত্র কারবারি ও যোগানদাতা রয়ে গেল ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে এসব অস্ত্র উদ্ধার অভিযান টিমকে তদারকি করছেন ডিসি ও এডিসি পর্যায়ের কর্মকর্তারা। কিন্তু অস্ত্র উদ্ধারের পরও অস্ত্রের উৎস না জানা ও অভিযান সম্পর্কে অবহিত না থাকায় এসব কর্মকর্তাদের তদারকি ও নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খুলশী থানাধীন টাইগারপাস এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে একটি বন্দুক ও ২ রাউন্ড কার্তুজসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগ। অস্ত্র পাওয়া গেছে মোঃ মনির আহাম্মদ প্রকাশ মনিরের কাছে। কিন্তু কোথায় পেল অস্ত্র তা নিয়ে পুলিশ গভীর কোন তদন্ত করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতারকৃত মনির স্বীকার করেছে, চট্টগ্রাম শহরে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে সে লিপ্ত রয়েছে। সে ফটিকছড়ির পূর্ব হাইদ ছকিয়াস্থ মিয়াজী বাড়ির আহাম্মদ হোসেন প্রকাশ আসাদ হোসেনের ছেলে। নগরীর সল্টঘোলা ক্রসিং এলাকার মেহের আফজল স্কুলের পার্শ্বস্থ হাজী ইকবালের ভাড়াটিয়া। এ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান। অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ডিসি মিজানুর রহমান বলেন, কোন অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি আমি জানি না। তবে এডিসি বলতে পারবেন। ওনার সঙ্গে কথা বলতে হবে।
এদিকে, ডবলমুরিং থানাধীন মোল্লাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি বন্দুক ও দুই রাউন্ড কার্তুজসহ তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর) বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ সুমন প্রকাশ ইলিয়াছ (৩৩)। তার কাছ থেকেই বন্দুক উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে আরোয়ারা উপজেলার মাস্টার হাটস্থ নাসির সওদাগরের বাড়ির সিরাজুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় আব্দুল হালিম প্রকাশ মামুন(৩১) ও জুয়েলকে(২৪) সুমনের সহযোগী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) এএএম হুমায়ুন কবির এর তত্ত্বাবধানে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অস্ত্রের উৎস প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, অভিযানের বিষয়ে তিনি জানেন না। এ বিষয়ে ইন্সপেক্টর ভাল বলতে পারবেন।
তবে অভিযানের সফলতার বিষয়ে নিজেকে কোড করা যাবে বলে জানালেন। এ বিষয়ে এডিসির নির্দেশে অভিযানে থাকা এস আই মাইনুল হাসান বলেন, সুমন আনোয়ারা থেকে ২০ হাজার টাকায় বন্দুকটি কিনেছিল অনেক আগে। এরপর থেকে বন্দুকটি দিয়ে গভীররাতে ছিনতাই কাজে ব্যবহার করত। কিন্তু অস্ত্রের উৎস পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: