ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মধ্যাঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা

প্রকাশিত: ১০:১৯, ২২ জুলাই ২০১৯

 মধ্যাঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উত্তরে পানি নামলেও মধ্যাঞ্চলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। হাজারও মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দী। দুর্গতদের দুর্ভোগ ও কষ্ট বেড়েছে বহুগুণ। হাজার হাজার ঘরবাড়ি এবং শত শত একর আমন ধান ও সবজি ক্ষেত পানির নিচে। ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও ওষুধের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত রোগ। অনেক জেলায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে কয়েক হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। বন্যা দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কবলিত এলাকায় এখনও সরকারী ও বেসরকারী ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। কুড়িগ্রামে রবিবার পানিতে ডুবে ও বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে দু’জন, ফরিদপুরে পানিতে ডুবে এক শিশু এবং জামালপুরে পানিতে ডুবে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান ভূঁইয়া রবিবার বিকেলে জনকণ্ঠকে জানান, পদ্মা ও ঢাকার আশপাশের নদ-নদী ব্যতীত দেশের সকল প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ও ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের উজানের প্রবেশসমূহে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, যমুনা এবং সুরমা নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস। অপরদিকে গঙ্গা-পদ্মা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বগুড়া, জামালপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও সিলেট জেলায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান আরও জানান, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার পাঁচ-ছয়টি জেলায় বন্যার পানি নামতে কিছুটা দেরি হতে পারে। সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ থেকে বন্যার পানি নামতে মাসের বাকি সময়ের পুরোটা লেগে যেতে পারে। কয়েকদিনের মধ্যেই ঢাকার নিম্নাঞ্চল ডেমরায় বন্যার পানি চলে আসতে পারে। রবিবার পর্যবেক্ষণাধীন ৯৩ পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে ৩৫টির বৃদ্ধি এবং ৫৩ স্টেশনে হ্রাস পাচ্ছিল। অপরিবর্তিত ছিল ৫ স্টেশনের। বিপদসমীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ২১ নদীর পানি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। দেশের কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে পানি সহজে নামবে না। কুড়িগ্রাম দিয়ে প্রবেশ করা ব্রহ্মপুত্রের পানি যমুনা হয়ে এখন দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত চলে এসেছে। মূলত উজানের ঢল ও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে বছরের জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে দুতিন দফায় বন্যা হয়। এসব বন্যা ৩ থেকে ১০ দিন স্থায়ী হয়। এবার জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় কুড়িগ্রামে বন্যা শুরু হয়ে তা এখন রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোতে পৌঁছেছে। দুই সপ্তাহ পার হলেও সেই পানি নামেনি, বরং প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এদিকে, শুক্রবার সর্বশেষ বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বলছে, বন্যায় আক্রান্ত সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুরসহ কয়েকটি জেলায় খাদ্য ও নিরাপদ পানির সঙ্কট তৈরি হয়েছে। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। সংস্থাটির হিসাবে, এ পর্যন্ত ২১ জেলার ৪০ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে বন্যায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৪৩টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ১ লাখ ৯ হাজার হেক্টর ফসলের জমি তলিয়ে গেছে। দেশের বন্যা দীর্ঘায়িত হতে পারে- সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ॥ দেশের বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। যা দীর্ঘায়িত-লম্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম। বৈঠকে কমিটির সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন), মোঃ আফতাব উদ্দিন সরকার, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জুয়েল আরেং, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং কাজী কানিজ সুলতানা অংশগ্রহণ করেন। বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পানগুছি নদীর ভাঙ্গনে বলইবুনিয়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ও রাস্তাসহ প্রায় দুই একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। রবিবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৈবজ্ঞহাটি উপ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত বিষখালী থেকে হরগাতি পর্যন্ত ২ একর জমি ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ফলে ওই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রংপুর ॥ নদ-নদীর পানি বাড়ায় পুরো রংপুর বিভাগে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে বন্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে রংপুর বিভাগের ৬ জেলায়। এবারের বন্যায় বিভাগের ছয়টি জেলার ৫৫০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে সাতটি বিদ্যালয় ভবন। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১৬৭টি। ৩ লাখ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় রাক্ষুসি পদ্মা আরও গর্জে উঠেছে। পদ্মার ভাঙ্গনে বার বার পরিবর্তন হওয়া মানচিত্রে এবারও আঘাত হেনেছে প্রমত্ত পদ্মা। গত ৪/৫ দিনের ব্যবধানে লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রাম ও লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ৭০টি পরিবারের ভিটামাটি পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়েছে। এদিকে খড়িয়া গ্রামের পাশাপাশি চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা পদ্মার ভাঙ্গন ও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে চরের ৯টি গ্রামের বাসাবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চরবাসী। ফলে জীবনযাত্রা হয়ে পড়ছে দুর্বিসহ। চরাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর এখনই ত্রাণ প্রয়োজন। ইতোমধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ মুরাদ আলী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি কমলেও ধলেশ্বরী, ঝিনাই ও লৌহজং নদীর পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এদিকে পৌলী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়কের শ্যামপুর ডাইভারসন ভেঙ্গে গেছে। এতে করে বাংড়া, সহদেবপুর ইউনিয়ন ও এলেঙ্গা পৌরসভার অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদীর বাঁধ ভাঙ্গা পানি এখনও নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। তবে বন্যা কবলিত এলাকার পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট, স্যানিটেশনের অব্যবস্থা, গবাদিপশুর খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। চাঁদপুর ॥ সারাদেশের বিভিন্ন জেলার বন্যার পানি নেমে আসার কারণে পদ্মা-মেঘনা নদীতে খর স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিন নদীর স্রোত আরও তীব্র হচ্ছে। ফলে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরিঘাটের দুইপারে শত শত যানবাহন আটকে পড়েছে। ৫টি ফেরির মধ্যে দু’টি সচল থাকলেও বাকি ৩টি স্রোতের মধ্যে চলাচল করায় বিকল হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রাম ॥ ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা কমলেও কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। রবিবার বন্যার পানিতে ডুবে ও বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বন্যায় জেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হলো। রৌমারী উপজেলার মন্ডলপাড়া গ্রামে মাছ ধরতে গিয়ে খায়রুজ্জামান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ পানিতে ডুবে মারা যায়। এছাড়া উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের কাসরিয়ারঘাট এলাকায় পানিতে পড়ে থাকা বিদ্যুত লাইন মেরামত করতে গিয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। ফরিদপুর ॥ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরিদপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। বন্যার পানিতে মারা গেছে একটি শিশু। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ২৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ফরিদপুরের বন্যা কবলিত তিনটি উপজেলার ২৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান রবিবার থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ফরিদপুর সদর ও চরভদ্রাসনে সাতটি করে ১৪টি এবং সদরপুরে ১২ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়া সদরপুরে দুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। মানিকগঞ্জ ॥ মানিকগঞ্জের আরিচা পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে । যমুনা ও ভাটি এলাকার পদ্মা নদীর তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকায় পানি ঢুকছে । শিবালয়, হরিরামপুর ও দৌলতপুর, ও ঘিওর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে সবজিক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলিজমি। এসব এলাকার বন্যাকবলিতদের মাঝে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। জামালপুর ॥ জামালপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে রবিবার বন্যার পানিতে ডুবে শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বকশীগঞ্জ উপজেলায় তিন শিশু ও একজন বৃদ্ধ এবং মাদারগঞ্জ উপজেলায় এক শিশু এবং শনিবার রাতে সরিষাবাড়ী উপজেলায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও মৃতদের স্বজনরা এসব মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় রবিবার বন্যার পানিতে ডুবে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুরে উপজেলার সূর্যনগর পূর্বপাড়া গ্রামের শাহীন মিয়ার শিশুকন্যা সুজুনী আক্তার (১১), একই গ্রামের সোলায়মান হোসেনের কন্যা সাথী আক্তার (৮) ও মাসুদ মিয়ার কন্যা মৌসুমী আক্তার (৮) বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে ভেলায় চড়ে খেলছিল। এ সময় তাদের ভেলাটি উল্টে গেলে তারা তিনজনই পানির স্রোতে পড়ে ডুবে যায়। স্থানীয়রা কিছুক্ষণ পর সুজুনী আক্তার ও সাথী আক্তারকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাদের সঙ্গে থাকা অপর শিশু মৌসুমী আক্তারকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও একই দিন দুপুরে উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের কুতুবেরচর গ্রামের ইয়াছিন মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (৪), মেরুরচর ইউনিয়নের রবিয়ারচর গ্রামের আব্দুুল শেখ (৭০) নামের এক বৃদ্ধ পানিতে ডুবে মারা গেছেন। একই দিন বিকেলে মাদারগঞ্জ উপজেলার জোড়খালি ইউনিয়নের জামদহ গ্রামের নূর ইসলামের আড়াই বছরের ছেলে আরাফাত বাড়ির পাশের বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদিকে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলার সরিষাবাড়ী পৌরসভার পিডিবি সংলগ্ন কামরাবাদ গ্রামে পিডিবি প্রিপেইড কার্ড সেলসম্যান সাখাওয়াত হোসেনের তিন বছরের ছেলে ইরান বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ নিয়ে গত দশদিনের বন্যায় জামালপুর জেলার সাতটি উপজেলায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে শিশুসহ ২৩ জন এবং সাপের ছোবলে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
×