ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নুহাশপল্লীতে নানা আয়োজনে হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ১৯ জুলাই ২০১৯

নুহাশপল্লীতে নানা আয়োজনে হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ

অনলাইন রিপোর্টার ॥ কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এদিন সকালে প্রয়াত লেখকের ভাই-বোন, শ্বশুর এবং ভক্তসহ হিমু পরিবহনের সদস্যরা কবর জিয়ারত ও কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল ১০টার দিকে হুমায়ূন আহমদের শ্বশুর প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী ও নুহাশপল্লীর কর্মচারীরা কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং হুমায়ূনের কবর জিয়ারত করেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রয়াত লেখকের ছোট ভাই কার্টুনিস্ট এবং মাসিক উন্মাদের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. আহসান হাবীব, তার স্ত্রী আফরোজা আমিন, বোন সুফিয়া হায়দার, রোকসানা আহমেদ, অন্য প্রকাশের প্রধান নির্বাহী মো. মাজহারুল ইসলাম, আগামী প্রকাশনির ওসমান গনি, অভিনেতা সৈয়দ হাসান সোহেলসহ প্রমুখ লেখকের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ছোটভাই আহসান হাবিব জানান, হুমায়ূন আহমেদের সকল স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে তার অনেক স্বপ্নই বাস্তবায়িত হয়েছে। ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণসহ অনেক স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। তিনি প্রকাশক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি হুমায়ূন আহমেদের লেখাগুলো নির্ভুলভাবে প্রকাশের অনুরোধ করেন। তিনি আরও বলেন, হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে পারিবারিকভাবে একটি মিউজিয়াম স্থাপনেরও পরিকল্পনা রয়েছে। তাকে নিয়ে একটি আর্কাইভ নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে গবেষণা করছেন। এ আর্কাইভ গবেষণা কাজে সহায়তা করবে। হিমু পরিবহনের সভাপতি মো. আসলাম হোসেন জানান, সকালে ঢাকা, ফরিদপুর, নরসিংদী ও গাজীপুর থেকে ৬০ জন হিমু নুহাশ পল্লীর কর্মসূচিতে যোগ দেন। হিমুরা একযোগে ৪০ জেলায় তাদের প্রিয় লেখকের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। তার মধ্যে বৃক্ষরোপণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও বইমেলা রয়েছে। হিমুদের উদ্যোগে ইতোমধ্যে ১০ জেলায় পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং তার দুই ছেলে নিশান ও নিনিদ দেশের বাইরে থাকায় লেখকের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেননি। শাওনের বাবা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জানান, শাওন চলচ্চিত্র বিষয়ক ৬ মাসব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ নিতে নিশাদ ও নিনিদকে সঙ্গে নিয়ে গত মে মাসে আমেরিকা গেছেন। এজন্য তারা এ কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেননি। তবে শাওন নিউয়র্কে স্বামীকে নিয়ে একটি স্মরণসভায় যোগ দেবেন। ২০১২ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। দিবসটি উপলক্ষে কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, দিনটি উপলক্ষে সকাল থেকে কোরআনখানির আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া স্যারের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে এলাকার বিভিন্ন মাদরাসার এতিম শিশু ছাড়াও অতিথিদের খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নবেম্বর নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা ছিলেন গৃহিণী। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। কথা সাহিত্যিক জাফর ইকবাল তার ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।
×