ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশী অপরাধী

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ১৯ জুলাই ২০১৯

 বিদেশী অপরাধী

উন্নয়নের অভিযাত্রায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল। ফলে আন্তর্জাতিক বলয়েও বাংলাদেশের অবস্থান নজরকাড়া। দেশের এগিয়ে যাওয়া প্রবৃদ্ধি যেমন সবাইকে মুগ্ধ করে, তারই অনুষঙ্গ হিসেবে কিছু ভয়ঙ্কর অপরাধও সংঘটিত হতে সময় নেয় না। আর সেই কারণে বাংলাদেশের নাগরিকরাই যে শুধু অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িত তা নয়, অনেক বিদেশীও ভয়ঙ্কর ও অন্যায় কর্মকান্ড করে যাচ্ছে অবলীলায়। যারা শুধু দেশের সীমাবদ্ধ বলয়েই বিচরণ করে না আন্তর্জাতিক অপরাধের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। তথ্যপ্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উৎকর্ষে বিশ্বায়নের সম্প্রসারিত ভুবন আজ অপরাধ চক্রের অশুভ পাঁয়তারার নিয়তই সাধারণ মানুষের জানমালকে অনিরাপদ করে তুলছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ চাঞ্চল্যকর এক তথ্য পরিবেশনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে দেশে ২০টি দেশের পাঁচ হাজারেরও বেশি বিদেশী নাগরিক অর্থ কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসা, মানব পাচার, খুন-জখমসহ হরেক রকম অপরাধে সরাসরি জড়িত, যা বাংলাদেশের জন্য এক শঙ্কার বিষয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা এবং উত্তরায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত বিদেশী নাগরিকরা সমাজ ও আইন বহির্ভূত কর্মকান্ডে লিপ্ত। ডিবি পুলিশা এসব অপরাধচক্রের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি এনে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের আটক করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। অপরাধীরা অস্ত্র, মাদক, অবৈধ ডলার ব্যবসা, জঙ্গী কর্মকান্ড, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে ডাচ-বাংলা বুথ থেকে অর্থ আত্মসাতসহ আরও ঘৃণ্য অপকর্মে জড়িত হয়ে দেশ ও জাতির বিপর্যয় ডেকে আনছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রকে চিহ্নিত করতে কর্মপ্রক্রিয়া শুরু করেছে। কোন দেশ যখন আন্তর্জাতিক বলয়ে তার অভিগমন জোরদার করে তখন বিদেশী নাগরিকরাও কর্মসংস্থানের সুযোগ নিয়ে অন্য দেশে তাদের নিবাস তৈরি করে। প্রায় ৪ লাখ বিদেশী নাগরিক এখন উন্নতমানের বিভিন্ন পেশায় জড়িত হয়ে কর্মজীবন এগিয়ে নিচ্ছে। যা দেশের সমৃদ্ধির নিয়ামক। পাশাপাশি অনেক বিদেশী স্বদেশে কুকর্ম করে মাতৃভূমি থেকে বাংলাদেশে চলে আসে। উন্নত কোন কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য নয়, বরং অপরাধ জগতের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নেয়। সেই রকম ৫ হাজার ভিনদেশী নাগরিক রাজধানী ঢাকাকে তাদের অভরারণ্যে পরিণত করেছে। এমন সব অপরাধী কোন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বাংলাদেশে আস্তানা গেড়েছে। শিক্ষার্থী ও ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে আসা ৩১ জন আফ্রিকান নাগরিককে গত ডিসেম্বরে ডিবি পুলিশ আটক করে। তবে অপরাধীদের আটক করলেই চলবে না, আন্তর্জাতিক আইনে তাদের সুষ্ঠু বিচারিক প্রক্রিয়ায় এনে বিধি মোতাবেক তার নিষ্পত্তিও প্রয়োজন। সব কিছু আমলে নিয়ে বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারিত এমন অপরাধীচক্রকে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান অত্যন্ত জরুরী। তা না হলে অপরাধের মাত্রা প্রতিনিয়ত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
×