ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ

নিজ দেশে ফিরে যান ॥ চার নারী কংগ্রেস সদস্যকে ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৮:৪১, ১৬ জুলাই ২০১৯

 নিজ দেশে ফিরে যান ॥ চার  নারী কংগ্রেস সদস্যকে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার একাধিক টুইটে প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত চার নারী কংগ্রেস সদস্যকে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এই চার কংগ্রেস সদস্য হলেন নিউইয়র্কের আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, মিশিগানের রাশিদা তালিব, ম্যাসাচুসেটসের আইয়ানা প্রেসলি ও মিনেসোটার ইলহান ওমর। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে। একমাত্র ওমরই সোমালিয়া থেকে এসেছেন। প্রগতিশীল এই চার নারী কংগ্রেস সদস্যের বিরুদ্ধে এ মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। ফের প্রমাণ করলেন যে, তিনি প্রকৃত অর্থেই একজন বর্ণবাদী। তবে মন্তব্যে নির্দিষ্ট কারও নাম উল্লেখ করেননি ট্রাম্প। ট্রাম্প টুইটবার্তায় লেখেন, ‘এরা এমন সব দেশ থেকে এসেছে, যাদের সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কীভাবে পরিচালনা করতে হবে, সে পরামর্শ দেয়ার বদলে তাদের উচিত হবে যার যার দেশে ফিরে যাওয়া। সেখানে অবস্থা বদলানোর পর তারা ফিরে এসে বলুক, কীভাবে আমাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে।’ ট্রাম্পের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতারা। ট্রাম্পের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে স্পীকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য চরম বর্ণবাদী। আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি। তার একমাত্র উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রকে বিভক্ত করা। তিনি বলেন, ‘এ কথা থেকেই বোঝা যায়, ট্রাম্পের উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে শ্বেতকায় করা, মহান করা নয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আসল শক্তি তার বহুজাতিকতা, তার বর্ণবৈচিত্র্য।’ রবিবার সকালে ট্রাম্প এই টুইট করেন। এদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ১০টি শহরে বৈধ কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীদের বহিষ্কারের উদ্দেশে ব্যাপক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন তিনি। যে চার নারী কংগ্রেস সদস্য ট্রাম্পের কটাক্ষের লক্ষ্য, তারা সবাই তীব্র ভাষায় সে বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন। আইয়ানা প্রেসলি পাল্টা টুইটে লেখেন, ‘ট্রাম্পের কথায় বিস্মিত হওয়ার মতো কিছুই নেই। তার লক্ষ্যই হলো অভিবাসীদের মানবেতর প্রমাণ করা এবং তাদের পরিবারকে নিষ্ঠুরভাবে বিভক্ত করা।’ ইলহান ওমর লেখেন, ‘কংগ্রেস সদস্য হিসেবে আমরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করার শপথ নিয়েছি।’ ওকাসিয়া-কর্টেজ লেখেন, ‘আপনি ক্রুদ্ধ, কারণ আপনি এ কথা বুঝতে অক্ষম যে, যুক্তরাষ্ট্র এমন এক দেশ, আমরাও যার অন্তর্ভুক্ত।’ সাম্প্রতিক সময়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতর নীতিগত প্রশ্নে এই চার প্রগতিশীল নারী সদস্যের সঙ্গে পেলোসি ও দলীয় নেতৃত্বের বড় ধরনের মতভেদ দেখা দিয়েছিল। ট্রাম্পের টুইটের ফলে তারা পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সে মনোভাব প্রকাশ করে মিশিগান থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য ডেবি ডিঙ্গেল মন্তব্য করেন, ‘দলকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করা যায়, আমি সে বিষয়ে চিন্তিত ছিলাম। ট্রাম্পই আমাদের সে সুযোগ করে দিলেন। আমাদের দলের কেউ এই জাতীয় ঘৃণা সহ্য করবে না।’ আরও প্রায় ৯০ জন ডেমোক্র্যাটিক সদস্য ট্রাম্পের বক্তব্যকে বর্ণবাদী বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে রিপাবলিকান কোন সদস্য এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের কথার সমালোচনা করেননি।
×