ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টিতে খুশি কৃষক- আমন আবাদে ওরা মাঠে

প্রকাশিত: ১০:১৭, ১৪ জুলাই ২০১৯

 বৃষ্টিতে খুশি কৃষক- আমন আবাদে ওরা মাঠে

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ এবারের বৃষ্টিতে কৃষক খুশি। প্রকৃতির সেচনির্ভর আমন আবাদে তারা এখন মাঠে। বৃষ্টির মধ্যেই জমি ঠিকঠাক করছে। আবাদের খরচ কমেছে। তবে কৃষক এখনই বেশি খুশি হতেও পারছে না। টানা বৃষ্টির পর ফের চড়া রোদ উঠলে বিপাকে পড়তে হবে। সেচযন্ত্র নামাতে হবে মাঠে। গত আমন মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকের অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না। সেচযন্ত্র মাঠে নামাতে হয়েছিল। বেড়ে যায় উৎপাদন খরচ। সোনাতলার রানীরপাড়া গ্রামের কৃষক বাসেত আলীর কথা : এবারের আমন মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হচ্ছে বেশি। গত ক’বছরে আষাঢ় ও শ্রাবণে তেমন বৃষ্টি ছিল না। এবার বর্ষাকাল আগের মতো। কৃষক যেমন আমন আবাদে মাঠে নেমেছে। নদী ভরে যাওয়ায় পাট ঠিকমতো জাগ দিতে পারছে। গত মৌসুমে কৃষক ভালভাবে পাট জাগ দিতে পারেনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলেছে, বৃষ্টি না হলে কৃষকদের অসুবিধায় পড়তে হতো। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, গতবছরের জুন-জুলাই মাসের চেয়ে এ বছরের জুন-জুলাই মাসে বৃষ্টিপাতের হার অনেক বেশি। আরও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। কৃষি বিভাগের কথা : আগস্ট মাসের ১৫ তারিখ আমন চারা রোপণের শেষ সময়। কৃষকরা বলছেন, ওই সময়ের আগেই চারা রোপণ সম্ভব হবে। কৃষি প্রধান উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় চলতি আমন মৌসুমে প্রায় ৩০ লাখ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের টার্গেট করা হয়েছে। বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের সকল জেলা বরেন্দ্র অঞ্চলের আওতায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ধারায় উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলা এখন রুক্ষè ভূমিতে পরিণত। আবাদ উদ্বৃত্ত বগুড়া জেলায় আমনের টার্গেট করা হয় ১ লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর। এই পরিমাণ জমি থেকে আমন চালের উৎপাদন টার্গেট করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মে.টন। বগুড়া অঞ্চলের মাঠ পর্যায়ে দেখা যায়, কৃষক আমনের চারার জন্য বীজতলা তৈরি করেছে। গত ক’বছরে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে আমন চাষ বেড়েছে। নওগাঁ রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পাবনা অঞ্চলে আমনের চাষ আগের চেয়ে বেশি। এই আমন ধান অগ্রহায়ণে ঘরে তোলার পর নবান্নের উৎসব হয়। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রানীরপাড়া গ্রামের কৃষক সমেশ উদ্দিন বললেন, আষাঢ়ের বৃষ্টি দেখেই মনে হয়েছিল বন্যা হবে। তড়িঘড়ি করে মাঠে নামা হয়। যমুনা তীরের সারিয়াকান্দি এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আষাঢ়ের ভারি বৃষ্টিপাতে যমুনায় পানি বেড়ে চরগ্রামের নিচু এলাকা ডুবেছে। তবে নদী তীরের উঁচু এলাকা ও অন্য এলাকায় বৃষ্টির পানিকে কৃষক কাজে লাগিয়ে জমি ঠিকঠাক করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, পানি দ্রুত নেমে যাবে। এরপর রোদের তাপ বেড়ে গেলে কৃষক অপেক্ষা না করে সেচ যন্ত্র মাঠে নামাবে। এবারের বৃষ্টিতে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অনেক ওপরে উঠে আসবে। ফলে সেচযন্ত্র দীর্ঘ সময় চালাতে হবে না। খরচ কম হবে।
×