ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতে বাংলাদেশের রফতানি আয় এক শ’ কোটি ডলার ছাড়াল

প্রকাশিত: ১০:১৪, ১৪ জুলাই ২০১৯

 ভারতে বাংলাদেশের রফতানি আয়  এক শ’ কোটি ডলার ছাড়াল

কাওসার রহমান ॥ বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে এই প্রথমবারের মতো ভারতের বাজারে বাংলাদেশের বার্ষিক রফতানির পরিমাণ ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটি একটি রেকর্ড হলেও এখনও দুই দেশের মধ্যে ৭৭৫ কোটি মার্কিন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি বিদ্যমান। এই বিপুল পরিমাণ ঘাটতি থাকার পরও ভারতীয় উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের একশ’ কোটি ডলার রফতানিতেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তারা সাফটার শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অবশ্য ভারতীয় বিশেষজ্ঞরাই বাংলাদেশেী পণ্যের ওপর নতুন করে কোন শুল্ক আরোপের প্রশ্ন নাকচ করে দিয়েছেন। তারা বলছেন, ভারতের শিল্প মহল চাইলেও বাংলাদেশের ডিউটি ফ্রি এ্যাকসেস বন্ধ করা যাবে না। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রফতানি আরও বাড়বে, এটা ধরে নিয়েই ভারতীয় নির্মাতাদের নিজেদের স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ করতে হবে। আর সেখানে সম্ভবত ভারত সরকারের বিশেষ কিছু করণীয়ও নেই। বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা বলছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি এখন প্রায় ৮০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। এই ঘাটতি ক্রমেই বাড়ছে। সরকারের উচিত এই ঘাটতি কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করা। ১৩০ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ হিসেবে ভারতের অনেক বড় বাজার। এই বাজারে আমাদের রফতানি বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ আছে। তাই সরকারের উচিত ভারতের বাজারে আরও বেশি নজর দেয়া। ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারত ১০৪ কোটি ৩০ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। যা বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি মাইলফলক অর্জনই নয়, রেকর্ডও বটে। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আছে পৃথিবীর প্রায় ৬৭টি স্বল্পোন্নত দেশের, তার মধ্যে এ্যাঙ্গোলা বা মোজাম্বিক ছাড়া কখনও কোন দেশ থেকে বার্ষিক রফতানি ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়নি। এই প্রথম বাংলাদেশের রফতানি ভারতের বাজারে এক বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ সেই বিরল তালিকায় ঢুকে পড়েছে মূলত তৈরি পোশাক রফতানিতে ভর করেই, গত অর্থবছরে যার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৮২ শতাংশ। অবশ্য বাংলাদেশের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসেবে অবশ্য গত এপ্রিল মাস শেষেই ভারতের বাজার বাংলাদেশের রফতানি ১০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে। ইপিবির তথ্যানুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ভারতে ১০৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৩ শতাংশ বেশি। এতে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, কানাডার পরই বাংলাদেশের পণ্য রফতানির নবম শীর্ষ দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় ভারত। শুধু রফতানিই নয়, ভারত থেকে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে আমদানিও। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৮৬২ কোটি ডলারের পণ্য, যা আগের বছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে ভারতে রফতানি হয়েছিল ৮৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের পণ্য। তাতে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ২৯ শতাংশের বেশি। কিন্তু অর্থবছর শেষে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় প্রায় ৭৭৫ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৪২ শতাংশ বেশি। জানা যায়, ২০১১ সালে ভারত বাংলাদেশকে অস্ত্র ও মাদক বাদে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। যদিও অশুল্ক বাধার কারণে সেটা তেমন কাজে লাগাতে পারছিল না বাংলাদেশ। ২০১১ সালের দিকে বাংলাদেশের বেশ কিছু কারখানার কাছ থেকে পোশাক নিয়ে টাকা দেয়নি ভারতীয় কোম্পানি লিলিপুট। সে জন্য বেশ কয়েক বছর পোশাক রফতানিতে ভাটা পড়ে। কিন্তু গত কয়েক বছরে ভারতের বিভিন্ন শহরে পোশাকের নামীদামী বিদেশী অনেক ব্র্যান্ড বিক্রয় কেন্দ্র খোলায় তাতে পোশাক রফতানি বৃদ্ধি পায়। শুধু তৈরি পোশাক রফতানিই নয়, ভারতে পণ্য রফতানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে আরও সহায়তা করেছে সয়াবিন তেল ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য। অর্থবছরের ৯ মাসের সয়াবিন তেল রফতানি হয় ১৩ কোটি কোটি ৮৪ লাখ ডলার। প্লাস্টিক পণ্য, ইস্পাত ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানিও বাড়ছে। তবে পাট ও পাটের সুতা, মাছ ইত্যাদি পণ্যের রফতানি নিম্নমুখী। কিন্তু ভারতীয় উদ্যোক্তাদের আপত্তির কারণে সেদেশে সয়াবিন তেল রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে। উদ্যোক্তাদের আপত্তির কারণে ভারত সরকার শুল্কমুক্ত তেল রফতানির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজনের শর্ত দিয়েছে। বাংলাদেশী রফতানিকারক কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেলে ওই পরিমাণ মূল্য সংযোজনের দাবি করলেও ভারত সরকার এখনও তা আমলে নেয়নি। ফলে বিষয়টির কোন সুরাহা না হওয়ায় অশুল্ক বাধায় ভারতের বাজারে সয়াবিন তেল রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন তৈরি পোশাক নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তোলা শুরু করেছে ভারতের উদ্যোক্তারা। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে মনে করা হলেও ভারতের বিশেষত গার্মেন্ট শিল্প এই প্রবণতায় খুবই উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশ থেকে রফতানিতে রাশ টানার জন্য তারা সরকারের কাছে জোরালো দরবার করছেন। উদ্বিগ্ন ভারতীয় গার্মেন্ট নির্মাতারা এখন বাংলাদেশী পণ্যের ডিউটি-ফ্রি এ্যাক্সেস নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। প্রেমাল উদানি ভারতের শীর্ষস্থানীয় গার্মেন্ট শিল্পপতি, এ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ভারতে তৈরি পোশাক রফতানি এখন খুব তীব্র গতিতে বাড়ছে, বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ হারে। কিন্তু আমাদের মূল অভিযোগ হলো, সার্টিফিকেট অব অরিজেনের নিয়মকানুন নিয়ে, বাংলাদেশ কিন্তু এটা মানছে না! মানে চীন বা অন্য কোন জায়গা থেকে ফেব্রিক কিনে নিজের দেশে সেলাই করে সেটাই তারা ভারতে ডিউটি-ফ্রি রফতানি করছে। বাজার এগুলোতে ছেয়ে যাচ্ছে, জিনস-বেসিক শার্ট-বা চিনো প্যান্টের মতো কোর প্রোডাক্টে, আর দেশি নির্মাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমাদের বক্তব্য হলো, বাংলাদেশকে শুল্ক ছাড় দেয়ার নামে আমরা তো চীনা পণ্যকে পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকতে দিতে পারি না, একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো থাকা উচিত। প্রেমাল উদানি কেটি কর্পোরেশন নামে যে এ্যাপারেল সংস্থার মালিক, তাদের মূল কারখানা তামিলনাডুর তিরুপুরে। তামিলনাডুর ওই শহরকে ঘিরে অজস্র গার্মেন্ট কারখানা আছে, এই শিল্পমালিকদের সংগঠনও খুব শক্তিশালী। বাংলাদেশ থেকে যেসব তৈরি পোশাক ভারতে আসছে, বাজারে সেগুলোর সরাসরি প্রতিযোগিতা এই শিল্পাঞ্চলে উৎপাদিত পণ্যের সঙ্গেই। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলছেন, ভারতকে কেবল ট্রাম্পই চিনতে পেরেছে। তাই ভারতের সব পণ্যে তারা শুল্ক আরোপ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গেও আমাদের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উচিত এই ঘাটতি কিভাবে কমানো যায় সেটি নিয়ে আরও দর কষাকষি করা। বাণিজ্য তো একতরফা হতে পারে না। ভারত যদি আমাদের তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক বসায় কিংবা অশুল্ক বাধা সৃষ্টি করে তাহলে আমাদেরও উচিত হবে ওদের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা। তাহলে আমাদের ঘাটতি কমে আসবে। তিনি বলেন, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। ফলে সরকারের উচিত বাণিজ্য ঘাটতি কিভাবে কমানো যায় সে বিষয়ে জোরালো প্রচেষ্টা চালানো। আমাদের রফতানি এক বিলিয়ন ডলার হয়েছে। কিন্তু তাদের রফতানি তো ৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে। চীন থেকে কাপড় এনে পোশাক সেলাই করে নিজেদের বলে শুল্কমুক্ত সুবিধা নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষ দুই নম্বর নয়। বাংলাদেশীরা মিথ্যার আশ্রয় নেয় না বলে বিশ্বে সুনাম আছে। বিদেশী ক্রেতারা চীন পাকিস্তানকে আস্থায় না নিলেও আমাদের প্রতি তাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। ইউরোপীয় ক্রেতারাও এ বিষয়ে বাংলাদেশের রফতানিকারকদের প্রশংসা করেছে। ভারতে পোশাক রফতানি বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে গার্মেন্টস শিল্প মালিকরা জানান, বিদেশী অনেক ব্র্যান্ড ভারতে বিক্রয় কেন্দ্র খুলছে। তাদের অধিকাংশের সঙ্গেই বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন। তাছাড়া ভারতের যারা কাপড় উৎপাদন ও বাংলাদেশে তা সরবরাহ করেন, তাদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে পোশাক, বিশেষ করে শার্ট তৈরি করে নিচ্ছেন। এসব কারণে রফতানি বাড়ছে ভারতে। ভারতীয় গার্মেন্টস উদ্যোক্তারা শুল্ক সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও দিল্লীর গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইকরিয়েরে’র (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর রিসার্চ অন ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক রিলেশনস) অধ্যাপক অর্পিতা মুখার্জি বলছেন, শুধু শুল্কে ছাড় পাওয়াটাই বাংলাদেশের একমাত্র এ্যাডভান্টেজ নয়। তিনি বলেন, ‘গার্মেন্ট খাতে ভারত কিন্তু আর বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতার জায়গাতেই নেই। থ্রিডি প্রিন্টারে ডিজাইনিং থেকে শুরু করে নানা প্রযুক্তিতে তারা ওখানে প্রচুর বিনিয়োগও করেছে, তার সুফলও পাচ্ছে। একটা তুলনামূলকভাবে ধনী দেশ হয়েও আপনি হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন, আর বলবেন বাংলাদেশের রফতানি কীভাবে বাড়ছে, তা তো হয় না।’ তিনি বলেন, আমাদের শ্রমশক্তিও আর সস্তা থাকছে না। বাংলাদেশ এসিইজেড বা বিশেষ অর্থনৈতিক জোনের ফায়দা তুলছে, ওদিকে আমাদের এসিইজেডকে আমেরিকা চ্যালেঞ্জ করে বসে আছে! সুতরাং আমাদের কোন পলিসিরই ঠিকঠাক নেই। ফলে দোষটা তো পলিসির, বাংলাদেশের এক্সপোর্টের তো আর দোষ হতে পারে না।। দিল্লীর থিঙ্কট্যাঙ্ক রিসার্চ এ্যান্ড ইনফর্মেশন সিস্টেমে অর্থনীতিবিদ প্রবীর দে কিন্তু মনে করছেন, ভারতের গার্মেন্ট শিল্পে শক্তিশালী দক্ষিণ ভারতীয় লবি চাইলেও বাংলাদেশী পণ্যে নতুন করে শুল্ক বসানো সম্ভবই নয়। তার কথায়, ‘ভারতে আনব্র্যান্ডেড গার্মেন্টের মূল হাবটাই হলো এই তিরুপুর। কিন্তু তারা এখন বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারছে না। এখন তিরুপুর লবি বাংলাদেশের ডিউটি ফ্রি এ্যাকসেস বন্ধ করতে চাইলেও সেটা তো করা যাবে না। অসম্ভব। সে ক্ষেত্রে ওরা আমাদের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব আরবিট্রেশনেও টেনে নিয়ে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, এখন ভারতীয়রা যেটা করতে পারেন তা হলো নিজেদের প্রোডাক্টে আরও ভ্যালু এ্যাডিশন করে সেটাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন, কম্পিটিটিভনেস বাড়াতে পারেন কিংবা প্রোডাকশনের খরচ কমাতে পারেন। পাশাপাশি নতুন একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছে, বেশ কিছু ভারতীয় টেক্সটাইল সংস্থা আফ্রিকাতে গিয়েও কারখানা গড়ছেন। আফ্রিকাতে ওয়েজ আরবিট্রেজের (কম পারিশ্রমিক) সুবিধা নিয়ে উৎপাদন করে সেটাই আবার ভারতে রফতানি করছেন। একইভাবে ভারতের কোম্পানি অরবিন্দ মিলস বাংলাদেশে গিয়ে কারখানা তৈরি করে ওখান থেকে ব্যবসা করছেন। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে এগুলোই এখন ভারতীয় শিল্পপতিদের জন্য একমাত্র রাস্তা বলে মনে করছেন তিনি। অধ্যাপক অর্পিতা মুখার্জিও তার সঙ্গে একমত, ডিউটি-ফ্রি এ্যাকসেসের সুবিধা ভারত নানা কারণে প্রত্যাহার করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘ডিউটি বাড়িয়ে ইমপোর্ট বন্ধ করা যায় না। সাময়িকভাবে গেলেও পাকাপাকিভাবে যায় না। বিদেশী মোবাইল ফোনে বিপুল ডিউটি বসিয়েও ভারতে কিন্তু মোবাইল ফোনের বিক্রি-বাটা কমানো যায়নি। আসলে সমস্যাটা আমাদের নিজস্ব, আমাদের ইন্ডাস্ট্রি খুব খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এখন কি বাংলাদেশের ওপর ডিউটি বসিয়ে আর চীনকে জিরো ডিউটি দিয়ে আমাদের সমস্যার কোন সমাধান হবে?’ বাংলাদেশ আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী। দক্ষিণ এশিয়ায় যে ভারত নিজেকে নেতার ভূমিকায় দেখতে চায় সত্যিই কি তারা সেখানে বাংলাদেশকে ট্যাক্স করতে পারবে? ফলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রফতানি, বিশেষ করে গার্মেন্ট, আরও বাড়বে এটা ধরে নিয়েই ভারতীয় নির্মাতাদের নিজেদের স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। আর সেখানে সম্ভবত ভারত সরকারের বিশেষ কিছু করণীয়ও নেই।
×