এরশাদের অবস্থার উন্নতি হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেছেন, চিকিৎসকদের মূল্যায়নে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিরোধী দলীয় নেতা এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। অর্থাৎ আশঙ্কাজনক। কোন কোন ক্ষেত্রে অবনতি হয়েছে। উন্নতি বিষয়টি তুলনামূলক কম। শুক্রবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এরশাদের সবশেষ শারীরিক অবস্থা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান। এ সময় জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি আরও বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শরীরের সংক্রমণ কমেছে। সংক্রমণের অবস্থা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে তার রক্তের বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে। লিভার এখনও পুরোপুরি কাজ করছে না। প্রয়োজনমতো তার রক্তে, রক্তের বিভিন্ন উপাদান দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে পল্লীবন্ধুর বিশ্বমানের চিকিৎসা চলছে। বলেন, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের পরামর্শেই তাকে বিদেশে নেয়া হচ্ছে না। সিএমএইচ এর চিকিৎসায় সন্তোষ প্রকাশ করে গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রোগের যে চিকিৎসা হচ্ছে, বিদেশেও একই চিকিৎসা দেয়া হবে। সব মিলিয়ে এরশাদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলছেন, এরশাদের ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, এরশাদের শরীরের কোনও অরগান ঠিকমতো কাজ করছে না, কৃত্রিমভাবে চলছে। আমি সকাল সোয়া ১০টায় সিএমএইচে গিয়ে সেখানকার চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।’ এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, শামসুল আলম মাস্টার, সুলতান আহমেদ সেলিম, ফখরুল আহসান শাহাজাদা, নির্মল চন্দ্র দাস, এম এ রাজ্জাক খান, মিজানুর রহমান দুলাল, মোনাজাত চৌধুরী, আজিজুল হুদা সুমন উপস্থিত ছিলেন। গত ২২ জুন থেকে ৯১ বছর বয়সী এরশাদ সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদ হিমোগ্লোবিন-স্বল্পতা, ফুসফুসে সংক্রমণ ও কিডনির জটিলতায় ভুগছেন। ৪ জুলাই বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। ২০ দিনে এরশাদের শারীরিক অবস্থার তেমন কোন উন্নতি হয়নি। সিঙ্গাপুরের ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে তার চিকিৎসা চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের বিদেশে নেয়ার প্রয়োজনীয় সব রকমের প্রস্তুতি রয়েছে। শরীরের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেই তাকে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে দেশের বাইরে নেয়া হবে। এদিকে এরশাদের সর্বশেষ অবস্থা জানতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা কাকরাইল ও বনানী কার্যালয়ে এসে ভিড় করছেন। কেউ কেউ এরশাদের রোগ মুক্তির জন্য দু’হাত তুলে দোয়া করতে দেখা গেছে। অনেকেই আছেন যারা ২০ দিন ধরেই এরশাদের জন্য ঢাকায় রয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিতে দলের পক্ষ থেকে একটি পৃথক কমিটি গঠন হয়েছে। কমিটির সদস্যরা আট ঘণ্টা করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা হাসপাতালে এরশাদকে দেখতে যান। তখন বাইরের নেতাকর্মীদের মনিটরের মাধ্যমে চিকিৎসাধীন এরশাদকে দেখানো হয়।