ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিস্তা রুদ্রমুর্তি ॥ বিপদসীমা ৩৫ সেন্টিমিটার উপরে

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ১২ জুলাই ২০১৯

তিস্তা রুদ্রমুর্তি ॥ বিপদসীমা ৩৫ সেন্টিমিটার উপরে

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী ॥ তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটেছে। আজ শুক্রবার বিকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে রুদ্রমুর্তি ধারন করে। এতে করে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল হতে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপরে ছিল। বিকাল ৬টায় আরো ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়। এতে করে তিস্তা অববাহিকায় হলুদ সংকেত জারী করেছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে উজানের ঢল যে হারে ধেয়ে আসছে এতে যে কোন লাল সংকেত জারী হতে পারে। নদীর পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ১৫ টি চর গ্রামের ১০ পরিবারের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার জানান তিস্তা নদীর বন্যা ভয়াবহ ধারন করায় নদীর চর গ্রামে বসবাসকৃত পরিবারের সদস্যদের সরকারী নৌকায় তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান তিস্তার বন্যায় ডিমলা উপজেলায় প্রাথমিক ভাবে ৫০ মেট্রিকটন চাল,৫০ হাজার টাকা ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আমরা সেদিকে সর্তকবস্থায় রয়েছি। তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র সুত্র তিস্তায় ভয়াবহ বন্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়,বৃহস্পতিবার তিস্তার পানি দুই দফায় বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭ ও ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। শুক্রবার তিস্তা নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পায়। সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৬০ মিটার) ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসছি। কিন্তু বিকাল ৬টায় তা আরো ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে গিয়ে ৩৫ সেন্টিমিটার ( ৫২.৯৫) দিয়ে প্রবাহিত হতে। উজানের ঢল সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট। ফলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্র্ণ এলাকার ১৫টি চর ও গ্রামের পরিবারগুলো বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।এতে প্রায় ১০হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। তিস্তার হিংস্ররূপ এলাকাবাসীকে আতংঙ্কগ্রস্থ করে তুলেছে বলে ইউপি চেয়ারম্যানগন দাবী করেছে। এ ছাড়া তিস্তা বিপদসীমায় চলে যাওয়া নদীর বিভিন্ন স্থানের বাঁধে আঘাত করছে স্রোত। ফলে বাঁধগুলো হুমকীর মুখে পড়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানের ঢল ও বৃস্টিপাতের কারনে শুক্রবার তিস্তা নদীর পানি সকাল ৬টায় ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যারাজের সবকটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আমরা তিস্তা অববাহিকায় হলুদ সংকেট জারী করে মানুষজনকে নিরাপদে সরে যেতে বলেছি। উজানের ঢল অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। যে কোন সময় লাল সংকেত জারী করা হতে পারে।
×