ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে অপহৃত তিন ছাত্রী নিয়ে ধন্দে রাজশাহী পুলিশ

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ১২ জুলাই ২০১৯

 গাজীপুরে অপহৃত তিন ছাত্রী নিয়ে ধন্দে রাজশাহী পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ গাজীপুর থেকে অপহরণ করে নিয়ে আসার সময় রাজশাহীতে মাইক্রোবাস থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ হেফাজতে এক কিশোরীকে নিয়ে এখন ধন্দে পড়েছে পুলিশ। উদ্ধারের পর মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছিল তার আরও দুই বান্ধবীকে অপহরণ করে নিয়ে আসা হয়েছে। মেয়েটি বলছে, ১৩ জনের একটি দল তিন স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে গাজীপুর থেকে রাজশাহী এনেছে। মাইক্রোবাস থেকে লাফ দিয়ে সে পালাতে পারলেও অন্য দুজনকে নিয়ে গেছে অপহরণকারীরা। কিন্তু তার এ বক্তব্যের এখন তেমন সত্যতা পাচ্ছে না পুলিশ। ফলে ‘অপহরণের’ ঘটনা নিয়ে অনেকটা ধন্দে পড়েছে রাজশাহী পুলিশ। বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী মোড়ের একটি ফার্মেসির সামনে গিয়ে বসে পড়ে ১৪ বছরের ওই মেয়েটি। মেয়েটি পরিবারের সঙ্গে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শান্তনগর এলাকায় থাকে। স্থানীয় মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সে। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার দমদমা গ্রামে। মেয়েটির বাবা-মা গাজীপুরে পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ফার্মেসি দোকানে গিয়ে মেয়েটি বলে, তাকে এবং তার স্কুলের আরও দুই ছাত্রীকে সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে জোর করে সাদা রঙের একটি বড় মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয়। এরপর তারা অচেতন হয়ে পড়ে। রাজশাহী আসার পর তার জ্ঞান ফেরে। তালাইমারী মোড়ে গাড়িটি যানজটে পড়লে সে লাফ দেয়। তবে অপর দুই স্কুলছাত্রীকে গাড়িতে করে নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছে। তারাও তার মতো স্কুলের ইউনিফরম পরে আছে। আর গাড়িতে অন্তত ১৩ অপহরণকারী ছিল বলেও মেয়েটি জানায়। এদিকে ঘটনা শুনে ওই স্কুলছাত্রীকে নগরীর মতিহার থানায় নিয়ে যান ফার্মেসি দোকানদার হাসিবুর রহমান চৌধুরী। এরপর রাজশাহী মহানগর পুলিশের মতিহার জোনের উপ-কমিশনার সাজিদ হোসেন ও মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদেরও একই কথা বলে মেয়েটি। তার কথার সূত্র ধরে রাজশাহীর প্রতিটি চেকপোস্টে সাদা রঙের মাইক্রোবাস তল্লাশি শুরু হয়। একইসঙ্গে ঘটনার বিষয়ে অবহিত করা হয় গাজীপুর জেলা পুলিশকে। তবে গাজীপুর পুলিশ বলছে, তিন স্কুলছাত্রীর অপহরণের মতো কোন ঘটনার খবর তারা পাননি। ঘটনাটি তাদের কাছে রহস্যজনক। কারণ, রাজশাহীতে উদ্ধার মেয়েটি আরও যে দুই ছাত্রীর কথা বলেছে তারা অপহরণের শিকার হয়নি। বৃহস্পতিবার তারা স্কুলে ক্লাস করেছে। গাজীপুরের শ্রীপুর থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, তিনটি মেয়ে অপহরণের শিকার হলে এলাকায় হুলস্থুল পড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সকালে এ ঘটনার খবর রাজশাহী পুলিশ না জানানো পর্যন্ত তারা জানতেই পারেননি। রাতে ঘটনা শুনেই রাজশাহীতে উদ্ধার মেয়েটির বাবাকে থানায় আনা হয়। তিনি অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় অপহরণের মামলা করেছেন। শ্রীপুরের আর কোন ছাত্রী নিখোঁজ নেই। রাজশাহীর মতিহার থানার ওসি শাহাদাত হোসেন খান বলেন, মেয়েটির কথায় আমরা ধন্দে পড়ে গেছি। সে তার কথায় এখনও অনড় রয়েছে। বলছে, তাদের তিনজনকে অপহরণ করে আনা হয়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, মেয়েটির ভাষ্য অনুযায়ী রাজশাহীর প্রতিটি চেকপোস্টে সাদা রঙের মাইক্রোবাস তল্লাশি করা হয়েছে। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। এখন উদ্ধার হওয়া মেয়েটিকে তাদের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।
×