ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাবিপ্রবিতে নিয়োগে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ১১ জুলাই ২০১৯

  হাবিপ্রবিতে নিয়োগে অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)’র শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এই নিয়োগে ফল ভাল করার পরও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে নিয়োগ না দিয়ে রাজাকার ও জামায়াত পরিবারের সদস্য শিবিরকর্মীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বুধবার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে পৃথক দু’টি সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্র মুহিউদ্দিন নুর জামায়াত পরিবারের সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়েও সে শিবিরের রাজনীতি করেছে এবং বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে কটূক্তি করেছে। নিয়োগে হত্যা মামলার আসামিদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িত শিক্ষক ড. রমজান আলীকেও বহিস্কার না করে পরিকল্পিতভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করা হয়। এ সময় প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. বলরাম রায়, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. হারুন-অর রশীদ, অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান, অধ্যাপক ড. এটিএম সফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মমিনুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ, সহকারী অধ্যাপক কৃষ্ণ চন্দ্র রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. হারুন-অর রশীদ বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত তদন্ত কমিটি গৃহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ও ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের সত্যতা পায় এবং স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করে। তারপরও প্রশাসন যৌন নির্যাতনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি যৌন নির্যাতনের পরিবর্তে মানসিক নির্যাতন হিসেবে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল। পরে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের আন্দোলনের মুখে ও সাংবাদিকদের ভূমিকায় প্রশাসন বাধ্য হয়ে গত বছরের ৩০ জুলাই অভিযুক্ত শিক্ষক ড. রমজান আলীকে সাময়িক বহিষ্কার করে। গত এক বছরে তিনটি রিজেন্ট বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হলেও প্রশাসন তাকে স্থায়ী বহিষ্কার না করে পরিকল্পিতভাবে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। পরে সকাল সাড়ে ১১টায় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সদর উপজেলার নয়নপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মমিন সরকারের স্ত্রী মনিজা বেগম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে আল মামুন সরকার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়ার পর প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করার পরও তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। অথচ রাজাকারের সন্তান কেবিএম মুহিউদ্দিন নুরের চাকরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোন কোটা সংরক্ষণ করা হয়নি যা একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে আমি লজ্জিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কেউ মুক্তিযোদ্ধা কিংবা অন্য কোন কোটার সন্তান নেই বলে দাবি করা হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ফজলুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কারও মুখ তো বন্ধ রাখা যায় না, আল্লাহর রহমতে শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে।’
×